কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

রবিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১৯

মানিক বৈরাগী




যাপনের প্রাত্যহিক খবর
আমি তুমি সে


মন চেয়েছিল বলি, দাঁড়াও যেও না, ডাক দিতে কোথাও বাঁধলো,
তাই ডাকিনি, ভয় পেয়েছি তোমার কোকিলা চোখ
তুমিও হন হন করে গিয়েছ চলে, পাশ ফেরোনি

জানি জানি খুব জানি, তোমার সাজানো শোভাঘরে
খুব চিল্লাচিল্লি হয়, আশপাশ পাড়ায় চায়ের দোকান আর সেলুনে
যুবাদের আড্ডায় কথা আর গল্প ফুরিয়ে গেলে তোমরাই বিষয়
পাড়ার বখাটেরা টিটকারি মারে, তুমি খুব নীরবে অফিসে যাও

আমি ঠিক ঠিক সেই লাল চোখ ভদকা দোচুয়ানি টেনে মিষ্টি জর্দায়
শাহীন বাসায় লেবুর শরবত গ্লাসে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখে
তেঁতুল অথবা জলাপাই আচার টেবিলে রেখে রাত দশটায় ঘুমিয়ে পড়ে
মন চাইলে ভাত সবজি নয়তো একটুকরো মাছ আচারসমেত খাই

সে ভোরে জেগে প্রথমে টেবিলে রাখা নোটপ্যাডে খোঁজে তাজা কবিতা
আমি তার জন্যে প্রতিদিন কবিতা না হয় কিছু লিখে রাখি
আমাকে জাগায় বাজায় অসিফ যাওয়ার আগে, আমরা এক সঙ্গে কবিতা পান করি
তারপর সিগারেট ধোঁয়া ছেড়ে দিই আকাশে
হাসানের সূর্যোদয় খুব মনে পড়ে, সুরাইয়া কেমন আছে জানি না।


শব্দ ও ফুলেরা


মাথার ভিতর শব্দেরা গিজ গিজ করছে
কত রংবেরঙের শব্দ
কলমের ফণায় কিলবিল করছে
কিন্তু টুপটুপ করে ঝরছে না
আমার শুধু অচেনা দীর্ঘশ্বাস ঝরে
আমার শুধু অনাহুত বেদনা ঝরে
আমার শুধু আপেল সদৃশ কষ্ট ঝরে
কতদিন এই ঠোঁট শ্রাবণের জলে ভেজে না
কতদিন বাদাম চিবোতে চিবোতে ঘাস ছিঁড়ি না
কতজন কত কী ছাপায় পত্রিকার পাতায়
আমি শুধু শ্রাবণের মেঘাচ্ছন্ন জ্যোৎস্নায় একা
তোমাকে দেখতে চেয়েছি, ভিজতে চেয়েছিলাম
সাদা কাগজ পড়ে আছে উইও আসে না
কেউ আসে না
তবু জানালার কার্নিশে ফুটিয়েছি গোলাপ
উঠোনে ছাতিম ফুলের সৌরভ শ্রাবণ জ্যোৎস্নায়
তবু আমি কদম রোপণ করি
তবু প্যাপিরাস ফুলের মন্ড সাজাই
বাকলগুলো ফেটে শুকিয়ে যাচ্ছে ক্রেতা নেই
নিষিদ্ধ গন্দমের মতো আমিও যেন পপিফল
সে এলো না শব্দগুলো ছন্নছাড়া এলোমেলো
পপির মধু সহজে ঝরে না সবখানে সব পাত্রে।


দ্রবণ


এক প্যাগ ওয়াইন
এক মগ লেবুচা
সাথে পুদিনা পাতা
কাচা আদার কুচি
তারপর করো দ্রবণ
প্যাকেট বেনসন সুইস
স্লোমোশন ভলিউমে রবি ঠাকুর
ধীরে ধীরে করো পান
বৈঠকি শেষে খোলাছাদে দাঁড়াও, দেখো আকাশ
সলতে আলোয় নোটপ্যাড সাথে রাখো
ঝিমধরা মাথাটি আস্তে আস্তে খোলে যাবে
আসবে সরস্বতীর আর্শীবাণী
লিখে লিখে রাখো যা পাও তাও
এবার অর্ধমিলিগ্রাম অফিয়াম মিশ্রিত গঞ্জিকা ভরো কল্কিতে
অগ্নি ফুলকি না উড়ে মতো টানো সল্প জোরে
তিন ছিলিম হয়ে গেলে রেখে দাও
বরফকুচি রাখা কোকের ছিপি খোলো
একটি নোনতা বিস্কুট চিবোও
চুমুক দাও সোড়া জলে
গুছিয়ে নাও খাতা কলম
ঘুমাও
দেখবে ঝর ঝর করছে দেহ
তনুমন ফুরফুরে রৌদ্রকরোজ্জল সকাল।


3 কমেন্টস্: