কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

সোমবার, ১ জুলাই, ২০১৯

জপমালা ঘোষরায়




স্তনধর্ম মেঘের জন্মদিন

 স্তনবতী মেঘের আকাশভাসি এলাকায়
 আমাদের ছোটো নদীর আঁকেবাঁকে রবিঠাকুরের মুখাবয়বের বাঁধনি বাটিক রেখাচিত্র
যেখানে,
একগ্লাস সোনালি নদীর ভিতর
স্নায়ুতন্ত্র ক্রিয়াশীল রেখে অনুভব করি
কাদাকুলি মেয়েটির লালচে জরায়ু থেকে
মাথা তুলে দাঁড়ানো স্বর্ণচাঁপার অ্যারোমা
মাটিকে মৃত্তিকাই না হয় বললাম, ক্ষতি কী!! 
মৃত্তিকার বারোটি ঋতুস্রাবের পর
প্রতি জ্যৈষ্ঠ সংক্রান্তিতে গর্ভাধান হয়
এক একটি অনন্তচারী প্রভাতকালের।
 
কোমরে ঘুনসি পরে ছেলেটি এখনো ঢিল ঢিল খেলছে...  

বিড়ালের শ রুমালের স্ব 

একটা বেড়ালের ভিতর থেকে শাঁস সমেত সমগ্রকে অনেকটা তফাতে নিয়ে গিয়ে
রিমি যে দুটো রিমিকেই দেখলো, তারমধ্যে এক রিমি ম্যারিনেটেড আর এক রিমি ক্যাট
ওয়াকে অভ্যস্ত হল। অতঃপর থাবার বায়োলজি থেকে উঠে এল যে গ্রাফিক্স সেটাই
বিড়ালাইজেশন। 
রিমি এমনই, নিজেকে টুকরো এবং পাজল্ড করে ক্যালাইডোস্কোপে ফেলে দেয় তারপর
আত্মের বিচ্ছুরণ দেখে। রিমি প্রতিবাদ করে,  যুদ্ধকরে, কিছুটা লাভলোকসানসহ। রিমির
কালো বেড়াল তাই অতীব সন্তর্পণ।
যদি সন্তর্পণকে গুরুত্ব দেওয়া হয় তাহলে জিজ্ঞাস্য, 'সন্তর্পণ' সঞ্চারীভাবটি কোন স্থায়ীভাবের
অন্তর্গত একথা ভরতমুনি কি তাঁর নাট্য শাস্ত্রে উল্লেখ করেছেন? আসলে
বিষয়টা নিমিত্ত মাত্র। ঘটনাটা সঞ্চরণ অথবা সন্তরণ। এরপর বিড়ালেরা কালো ধলো
তপস্বী যশস্বী সুচারু  সাঁতারু কিছুই এসে যায় না। রিমি বেড়ালটাকে ছেড়ে দিয়েছে।
আপনারাই তার চলন লক্ষ্য করুন। 

রুমাল চিরুনি আর গামছা নিজস্ব থাকা ভালো। যে সব রুমালে ফুলতোলা কারুকাজ
থাকতো সেই রুমালের একটা স্ব থাকতো। মানে দাতা এবং গ্রহীতার মধ্যে রঙীনসুতোর
এমব্রয়ডারিবন্ধন থাকতো। প্রেম তো ছিলই আবার ওথেলোও যে ছিলনা তা নয়, তবে
রেয়ার কেস। এমন কি রুমালচোর খেলার চোরেরাও রুমালের স্ব চিনতো।

আর কোনো প্রাসঙ্গিকতা  না থাকলে শুধু অনুষঙ্গেই  কবিতার খড়ের চাল চুঁয়ে চুঁয়ে
যে ঝালর নেমে যায় কবি তাকে বৃষ্টি নামে ডাকেন। লিপ্সা আমি বুঝি না তবে আসঙ্গ চলে
গেলে যা পড়ে থাকে নেতিবাচক কপচানি তাকে ঠিক কবিতা  বলা যায় না। রিমিও সেটাই
বোঝে। 

বাধ্যতামূলক বার্ধক্যে অভ্যস্ত গোয়ালগোবর ঠাকুরঠুকুরসমেত কোনো নারী যখন
সমাসোক্তি অলংকারের মতো  বিকেলের বেড়া ধরে দাঁড়ায় তখন বেড়ার এপারের ও
ওপারের দুই উপনিবেশেই একটা শাঁখেরকরাত তার সমগ্র সত্ত্বাকে কাটতে থাকে সশব্দে।
তাতে বিড়ালের কিছুই যায় আসে না। রুমাল ও হারিয়ে যেতে পারে। রিমির রুমাল এভাবে
অনেকবার হারিয়েছে কিন্তু রুমালের 'স্ব' কখনো হারায় নি।


টাটা নিহার স্নানগন্ধ

ভাবছিলাম প্রশান্তির কথা, 
যতটুকু বরাদ্দ তার বেশী নয়,
 মাত্রা... রেখা... আঁকিবুঁকি করতে করতে 
তাঁর লেখালিখি, সেলাইফোড়াই, বড়ি আচার...
 অক্ষরের পর ও পরত দুকূল ছাপিয়ে...

এই ছাপিয়ে যাওয়াগুলো
কোনোদিন ছাপানো যায়নি হার্ড কপিতে। 

ভাবছিলাম স্থিতির কথা।
প্রবীণ প্রস্তাবকার বলেছিলেন
থামতে না জানলে বাজনা হয়না।
আমারও মনে হল 
সুর না থামলে মূর্ছনা ধরা যায় না। 

থামলাম স্নানঘরের কাছে। 
যতক্ষণ জল পড়ে
তার চারপাশে একটা শীতল বলয় হয়। 
এইটুকুই এখন বরাদ্দ শীতলতা।

 এই পতনশীল জলকে বারিধারা বলা যাচ্ছে না
এই কান্নার ইকুয়েশনে H2O লেখা যাচ্ছে না।  
থেমে থেমে চলতে চলতে 
পাজল কুড়িয়ে ড্রাফটে তোলা,
মায়ের টাটা নিহার স্নানগন্ধ...  
অনেক আগে থেকেই কীভাবে যেন 
সেভ হয়ে আছে মেইল বডিতে,
মানব দেহে... ছায়াবৃত ছায়াবৃত্তে...  

1 কমেন্টস্: