কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

শুক্রবার, ১ মার্চ, ২০১৯

সুবল দত্ত




প্রেম   
                  

কদম বনে ফুটফুটে জ্যোৎস্না। এখানে এসময় খুব নাচগান পিকনিক কুঞ্জ সাজিয়ে রাত
জাগা আনন্দ। ইদানিং সুনসান। একশো চুয়াল্লিশ ধারা। ফুলে ফুলে সাজানো দোলনায়
একা ডক্টর শ্রীমুরারী মোহন। বিজ্ঞান অধ্যাত্ম ও প্রচুর বিষয়ে তাঁর বিশ্বজোড়া মহিমা।
বিশ্ববিজ্ঞান এখন তাঁরই অধ্যাত্মপ্রেম ধারার পথে। নিত্য নতুন ব্রক্ষ্মান্ডের নিয়ম
আবিষ্কার। তিনি এই নিষ্কাম প্রেমসাধনার শুরুতেই নিজের শরীরের পুরুষ হরমোন
উত্সেচক টেস্টিক্যালগুলি অপারেশন করে বাদ দিয়ে নিজেকে আজীবন যৌনতা মুক্ত
করে রেখেছেন। এখন জগৎ জুড়ে আশি শতাংশ পুরুষের রক্তে রেপ-জিন। হানাহানি ধর্ষণ
ধর্মান্ধতা স্বার্থপরতার চরম। এই সময় তাঁর প্রেমতরঙ্গ প্রবাহ পৃথিবীময় ছড়িয়ে
দিতে চান। নিজের দেহকে নির্দোষ প্রতিপন্ন করতেই তাঁর এই বলিদান। এই রোগের
নিরাময় একমাত্র স্বর্গীয়প্রেম আবেশ। কিন্ত এসব করেও তিনি তাঁর ভাবপ্রবাহ
পৃথিবীময় ছড়িয়ে দিতে পারেননি। এখন উনি বিষণ্ন। গাছের ডালে ঝুলে থাকা কদম
ফলে  ইউ এস বি তার গুঁজে একটা বোতাম সাইজের সিস্টেম চার্জ হচ্ছে। সেখান
থেকে বাঁশির ধুন বেরোচ্ছে। এই সফটওয়্যার এতো শক্তিশালী পৃথিবীর যে কোনো মানুষের মনের কথা রেকর্ড করতে পারে, সে যতদূরেই থাকুক না কেন। শ্রীমুরারী চান বাঁশির ধুনে একটি বিশেষ তরঙ্গ বিস্তার করে নিখিলের অস্থির মানুষের উপর প্রভাব বিস্তার করতে। কিন্ত হচ্ছে না। ছমছম নুপুরের শব্দ। শ্রীরাধা আসছেন। শ্রীমুরারী ক্ষুণ্ন। আর কতদিন এইভাবে লুকিয়ে অভিসার? চারিদিকে খলধর্মী বিরোধী স্বার্থী দেহ সর্বস্বেরা ও সস্তা মিডিয়া থিকথিক করছে। ওরা বড় অবুঝ।

এলেন শ্রীরাধা। শ্রীমুরারী পাশে বসালেন। - শ্রী আপনার মোহনবাঁশি? -এই তো।
 
এবার অডিও বন্ধ করছি। শ্রীমতীর অনুরাগ হয়েছে। এবার তো আমাদের দুই প্রাণ
প্রকৃতি ও মহাবিশ্বের প্রেমস্পন্দন যোগ হয়েছে। এসো এখন মোহনবাঁশির ধুন ছাড়াই।
আমরাও দেখতে পাবো চিত্র-বিচিত্র নানা রঙের মধুর ধ্বনির ঢেউ। এসো। আমি বাঁশি  
বাজাই আর  নাচতে নাচতে সেই প্রেম অমৃতে অবগাহন করি। - শ্রী এই আবেশময়  
মধুর তরঙ্গ সার্বজনীন কেন হচ্ছে না? - না শ্রীরাধা। তাইতো বড় দুশ্চিন্তায় আছি।
বেশিরভাগ মানুষ প্রেমে পূর্ণ সমর্পিত হতে চায় না। কামনা স্বার্থ বিনিময় ও
সেক্স জানে। - শ্রী। আপনাকে ওরা কলঙ্ক দেয়। আমার সহ্য হয় না। দিনরাত
কাঁদি। এর থেকে নিষ্কৃতি নেই? - না শ্রীরাধা। তবে বর্তমানের এই মিথ্যা কলঙ্ক
শতাব্দীর পর পূণ্যপথ হয়ে যায়। পৃথিবীতে এই হয়। মহামানব আসেন কলঙ্কিত হয়ে
যান ভবিষ্যত মানুষের আরাধ্য আদর্শ হন। - তবে কি বৃথা আপনার এই গোপন
মুরুলী ধ্বনি? এই সাজানো কুঞ্জ এই আবেগে ধুয়ে যাওয়া ভারি অস্থিরতা? - না গো
রাই। কোনো পবিত্র মধুর সুখময় নিষ্কাম মুহূর্ত বৃথা যায় না। এখন যে বাঁশির ধুন
বাজবে তাতে বিশ্ব প্রকৃতি একাত্ম হয়ে নাচতে থাকবে। মনে রেখো পৃথিবীতে শুধু মানুষ
বাস করে না। উদ্ভিদ ও প্রাণীকুল অসংখ্য। ওরা এই আনন্দ উপভোগ করবে না? নাঃ।
এবার এসো। সঙ্গীত মুর্ছনায় ডুবে যাই।


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন