কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

রবিবার, ১৪ জুন, ২০১৫

অনির্বাণ ভট্টাচার্য

কেন লিখি?

‘অক্ষর, মাত্রা, স্বর - বাংলা কবিতার কোন্‌ রীতিতে  
তুমি বেশী স্বচ্ছন্দ?’
একচোখ জিজ্ঞাসা প্রবীন লেখকের।
তাকাতে পারিনি – মনে হলো
প্রাচীন বটবৃক্ষ
নিঃশ্বাস থেকে, ব্যক্তিগত বিশ্বাস থেকে
ঝুরি ঝুরি আলো নামিয়ে
পরখ করছেন কতটা আশ্রয় দিতে পারে পতঙ্গভুক।
অক্ষরবৃত্তে আমার হাঁটা হয়নি ঠিকমতো,
তবে হেঁটে গেছে তেলচিটচিটে পোকা
আমার গেরস্থালি পৃথিবীতে ...
আর আমি পঙক্তিতে এত হিসেবি না হয়ে
ঢুকিয়ে দিয়েছি গণতন্ত্র, ইস্তেহার
অথবা নির্বাচনের মতো শব্দগুচ্ছ ।
মাত্রাবৃত্তে লিখতে পারিনি বেশিক্ষণ
যন্ত্রণাকে ভেঙ্গে ভেঙ্গে বলেছি
স্তব্ধতাকে চিরে চিরে শুনেছি
আর বেড়ে গেছে মাটি থেকে সোফার দূরত্ব।
সত্যি সত্যি বেহেশত নেমে এলে
ভাষাশহীদের বুকে,
সত্যি সত্যি বাংলা ভাষা উচ্চারিত হ’লে
আমি নিশ্চিত বুঝে নেব সিলেবল কী,
বুঝে নেব স্বরবৃত্তের খুঁটিনাটি ।
আপাতত অক্ষর বলতে বুঝি অস্ত্র, কাগজে কলমে
মাত্রা বলতে সীমানা, নিয়ম ভাঙার
আর স্বর বলতে প্রতিরোধের শব্দ
বুকের বাঁদিকে স্থির হয়ে আসে
অনাগত মূর্ছনায়,
দেখি বৃত্তের ব্যারিকেডে ঘন হয়ে আসছে
বাংলা কবিতার শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা,
ভাবি না – বিশেষ কিছুই আর ভাবি না,
লিখতে হয়, লিখি।


প্রমিথিউস

আগুন আনতে চেয়েছিলে,
পাথরে ঘষার মতো পেলে না অন্য কোনও পাথর।
কেননা
শহরে বাড়তি ভেবে, ওগুলো
ছোঁড়া হয়েছিল কোনও ফুটপাতবাসীর মাথায়।

পাথর তোলার মতো পেলে না কোনও হাত।
কেননা
তোমাকে নুলো ক’রে দিয়েছিল ওরা
অন্য কোনও ব্যঙ্গচিত্রকারের সাথে গুলিয়ে ফেলে।

সূর্যাস্তের লাল থেকে আগুন আনতে গিয়ে
ছেঁকে নিতে ভুলে গেছিলে গোধূলির পাপ,
তারপর থেকে প্রতিটা সঙ্গমের আগে
ওরা তোমাকে ধর্ষকের চোখে দেখে।

লাল মাটির ভেতরেও
হয়তো থেকে থাকবে কিছু গোপন অগ্নুৎপাত
জানতে গিয়ে থমকে গিয়েছিলে -
তোমার আগেই কারা যেন
একবুক আগুন ঢেলে দিল
চাসনালার লোকগুলোর সংসারে।

এরকম চলতে চলতে
একদিন নিজেই নেভার আগে
দারুণভাবে জ্বলে উঠেছিলে,
ঢেলে দিয়েছিলে তোমার বুকের ওম
রাস্তায়, ধর্মস্থানে
অথবা বিতর্কিত নিয়ন্ত্রণরেখায়।
.......
.......

খবরে বলেছিল সুইসাইড-বম্বার।


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন