কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

১২) রাজর্ষি চট্টোপাধ্যায়

তাপস, আমরা যেরকম বেঁচে আছি...



একটা মাছি। ক্যাথি ম্যান্সফিল্ডের নয়। খুব ছোট বেলায় আতস কাচের নিচে সন্ধিপদ দেখার মতোও নয়। খালি উড়ে আসছে। উড়ে যাচ্ছে। দেখা যাক। শুধুই পুঞ্জাক্ষি দিয়ে দেখলে দেখা যাবে, বেসমেন্টের নিচে যে গোপন ভাগাড়টায় কাল রাতের অপারেশান শেষে লাশগুলোকে গাদাবন্দি করা হয়েছে, সেখানেই যাচ্ছে। সেখান থেকেই আসছে। মুখে করে নিয়ে আসছে মধুরক্ত। মধুবমি। ফোঁটা ফোঁটা ভিজিয়ে দিচ্ছে কুমারী মায়ের ঠোঁট। স্ফীত স্তনবৃন্ত। এসময় রেণুরা উড়ছে। পাল্লা দিয়ে উড়ছে উটপাখি ও পক্ষিরাজ ঘোড়া। কিংবদন্তী, তারা একসময় উড়ত। একমাত্র, যুগপৎ, কুমারী ও মা হওয়ার কারণে কাল রাত থেকে সে’ও লাশবন্দি হয়ে আছে। অন্ধ। অচৈতন্য। মনে হয় জন্মের ব্যথা উঠলে, সে নিজেও উঠে পড়বে। লোভনীয় শরীর। পা’দুটো কালো। গোড়ালিতে ফাটা দাগ বহু দূর সমান্তরাল গেছে। একটা কনুই বেশ কিছুটা ছড়ে যাওয়া। গলায় একটা সস্তা পুঁথির মালা। সস্তা হলে কী হবে, ওটা ওর গলায় জন্মদাগের মতো পেঁচিয়ে আছে। একটা ঊর্ধবাহুতে তাবিজ কালো কারে বাঁধা। অন্তর্বাসহীন ফ্যাকাসে শাদা বুকের জামা ভেদ করে কালো বৃন্ত প্রথম গ্রীষ্মের জামের মতো ফুটে আছে। ঠোঁট দুটো রক্তকোয়ার মতো ফলে। মুখের ভেতর নিতে পারলে গলে যাবে, সময় নেবে অনন্ত। যেন কেউ এখনি বাজী ধরবে, ওর পুত্র সন্তান-ই হবে। আর তাকে দেখতে হবে প্রিসন অফিসারের মতো। যদিও জন্মের পর সন্তানের পা কেউ কোনো নদীর জলেই ধুয়ে দেবে না। তাকে দেওয়া হবে না কোনো রক্ষা কবচ বা, কুণ্ডলী। অথবা, এটাই পূর্ব নির্ধারিত, সে কখনই জন্মাবে না। মাছিটার পা নাড়ার শব্দ শোনা যাবে মাত্র। কিন্তু যে কোনো জন্মের আভিজাত্যের বহর এতটাই যে, তার কম্পনাঙ্ক কোনো নশ্বর মানুষের শ্রুতিগ্রাহ্যতা অতিক্রম করে গেলে যা শোনা যাবে না, তা এই লেখাটার অনুরণন মাত্র।






0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন