একটি নির্মীয়মাণ গল্পের কিয়দংশ
টাঙানো
মশারির পাশাপাশি দু’টো দড়ি খুলে নিলে যা হয় - দু’পাশে তুলে ধরা বিস্তৃত দুই
হাত-ঘাড় ও মাথা ঝুলে পড়েছে - আত্মসমর্পণরত এক মানুষ। একা থাকার এক মস্ত সুবিধে
হলো, কাউকে দরকার হয় না একা থাকতে গেলে। একা একাই একা থাকা যায়। যে মানুষ একা থাকে, আগামীকালও তাকে একাই থাকতে হবে এটা জেনে যে
একা থাকে এবং সর্বতঃ অযৌন যার জীবন - বিছানার ওপর পাশাপাশি দু’টো-দড়ি খুলে রাখা
টাঙানো-মশারির দু’পাশে তুলে ধরা বিস্তৃত দুই হাত দেখে সে ভাবে, সে, নিজেই, টাঙানো
রয়েছে, এভাবে, আসলে। অ্যান এগজ্যাক্ট অ্যান্ড ডুপ্লিকেট কপি অফ হিমসেল্ফ, অর্থাৎ
রেপ্লিকা, সে রেখে গেছে এ ঘরে। দু’পাশে তুলে ধরা বিস্তৃত দুই হাত-ঘাড় ও মাথা ঝুলে
পড়েছে বুকের দিকে - আত্মসমর্পণরত এক মানুষ, পাশাপাশি দু’টো দড়ি খুলে নেওয়ার পর
টাঙানো মশারির দু’পাশে তুলে ধরা বিস্তৃত
দুই হাত। এবং, এখানেই সে লক্ষ্য করে, কী সেই অপূর্বভাবিত দৃশ্য, যেখানে মাঝরাতে,
যীশু স্বয়ং হয়ে যাচ্ছেন ক্রুশ। আর ক্রুশটি এইমাত্র হস্তান্তরিত হওয়া যীশুর প্রাণ
নিয়ে, সামনে, স্পষ্ট উঠে আসছেন। ওই তো! ঠিক যেভাবে, মশারির পেছনটায় সে গিয়ে
দাঁড়ালে, তাকে মনে হবে ক্রুশ। স্থবির, কিন্তু মৃত্যুচিহ্নবৎ। দু’পাশে বিস্তৃত
মশারির দুই দড়ি বরাবর নিজের দু’হাত ছড়িয়ে দিলে যা আরও বিশ্বাসযোগ্য ক্রুশের এক
চরিত্র হবে। এবং মশারিটি তখন ক্রুশের আনুভূমিক দুই প্রান্তে গেঁথে রেখেছে নিজের
করকুর্চাস্থি। যাকে আমরা পেরেকে বাঁধা মশারির দড়ির গিঁট ভাবছি। এবং এমত ভেবে ভুল
করছি। মশারিটি তৎক্ষণাৎ সে, অথবা যীশু। আর সে, অবধারিত ক্রুশ। যাকে পিঠে নিয়ে আছে
মশারি অথবা সে অথবা যীশু।
এত ঘন ও ঘনিষ্ঠ উপস্থিতি মর্মের, অথচ দুর-ও নয়; পাহাড়ের মত আকাশের অঙ্গস ংল গ্ন।
উত্তরমুছুন