কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

মঙ্গলবার, ২৩ আগস্ট, ২০১৬

অভিজিৎ মিত্র

খেলা


অদ্ভুত একটা খেলা। ভাবলাম খেলি। আসলে না খেলেও উপায় নেই। লটারিতে আমার নাম উঠেছে।

আমার চারপাশে রাম-শ্যাম-যদু-মধুকে চৌকো করে দাঁড় করানো হয়েছে। দুটো  ত্রিভুজকে পায়ে পায়ে জুড়ে দেবার মতোমাঝে আমি আড়াআড়ি। সবার ল্যাজা-মুড়ো তামার তার দিয়ে জোড়া হচ্ছে। এরপর রাম-শ্যাম আর যদু-মধুর মাঝখান থেকে দুটো তার এনে আমার দু’কানে ক্লিপ দিয়ে আটকে দেওয়া হবে। খানিকটা দূরে মহাপুরুষরা তাদের বাবাকালি তেলের কুয়ো থেকে তেল এনে সলতে পাকাবেন। বলা হলো, যদি রাম-যদু আর শ্যাম-মধুর ভেতর বনিবনা না থাকে, আমি বেঁচে যাব।  নইলে ঐ সলতেয় আগুন দিলেই আমাকে নিয়ে একটা বর্তনী তৈরি হবে, আমার ভেতর দিয়ে কারেন্ট বয়ে যাবে, আমি ছাই হয়ে যাব, আমার পড়ে থাকা হাড়গোড় দিয়ে টুথপেষ্ট তৈরি হবে, নতুন সকাল হবে। ওরা নাকি এর নাম দিয়েছে প্রজেক্ট দধিচী।

প্রথমে আপ্লুত হলাম, তারপর শিউরে উঠলাম। ঐ রাম-শ্যাম-যদু-মধু অথবা মধু-যদু-শ্যাম-রাম... এই চক্করেএরা কি হারকিউলিস? রজনীকান্ত? তখন কেউ এসে   কানে কানে বলে গেল, ওহে শোন, তুমি একটা মডেল, আমাদের সবার মতো বঞ্চিত ড্যাশের দলে, তাই তোমাকে দিয়েই শুরু হচ্ছে, এরপর আমরা সবাই একে একে। রাম থেকে মধু, সবাই লিকুইড, এদের নিয়ে ভেবো না। বললাম, উপায়? সে আরো ফিসফিসিয়ে বলল, আর নিরোধ থেকো না, নিজের রোধ বাড়াও, কেউ তোমার ড্যাশটাও ওপড়াতে পারবে না, কোনো কারেন্ট যাবে না।

আমি অন্ধকার হাতড়ে ওর মুখ দেখতে যাবার আগেই চারপাশে হাততালি শুরু হয়ে গেল।


মহাপুরুষরা সলতে পাকাতে শুরু করেছে, কোথায় যেন ঘোষণা করা হচ্ছে, আজ   বজ্র-বিদ্যুত সহ প্রচুর বৃষ্টি হবার সম্ভাবনা আছে, আর আমি প্রাণপণে রাজকাপুর-নার্গিসের একটা গান ভুলে যাবার চেষ্টা করছি...   

0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন