আলো
বাতি জ্বলেছিল, জ্যোতির্ময় হলো রাত
ঝাড়বাতি ঘিরে আলোর
ঘূর্ণিঝড়
গেলাসে গেলাসে আলোরই
জলপ্রপাত
আলোকোজ্জ্বল এ-রাত
অবিনশ্বর!
শুভ্র পায়রা মেলেছিল
শাদা ডানা
উড়বে বলেই আলোর
ফোয়ারা ঘিরে
গন্তব্যটাই ছিল না
যে শুধু জানা
এও জানতো না কোন পথে
যাবে ফিরে।
চেনা ও অচেনা
নর-নারীদের সারি
দু'পা এগিয়েই মেলে দিয়েছিল
ঠোঁট
কেউ দিয়েছিল দ্বিধার
দেওয়াল পাড়ি
শুধু জানতো না
প্রণয়ে রয়েছে চোট।
আলোনদী-স্রোতে ভেসে
যায় কত জল
ভেসে যেতে যেতে
খুঁজে পায় কেউ ঘাট
দক্ষ সাঁতারু ডুব
দিয়ে খোঁজে তল
শুধু সে বোঝেনি
নিয়মের বিভ্রাট।
আলোনদী-জলে ঝাঁপ
দিয়ে কতজন
তলিয়ে গিয়েছে আলোগলা
বেনোজলে
টের পেয়ে যাবে আলোরও
আছে দহন
বাড়ালে দু'হাত আলোর
গহনতলে।
একরাতে আর কতখানি, তাতানো গ্রীষ্মের
রাতে?
দেওয়ালে দুটি বৃক্ষ, একটি পত্র-পল্লবিত, অন্যটিতে ন্যাড়া শীত
পরস্পর বৈপরীত্যের নিবিড় সখ্য, আমাদেরও।
কক্ষটি নিশ্ছিদ্র, করিডোরে সতর্ক পা
একজোড়া, কোনো দম্পতির, হয়তো এক রাতের
শত বছরের পুরনো প্রেমিক যুগলের সুখের শীৎকার
আজ বন্দি আধুনিক ওয়ালপেপারের নিচে।
নিশ্ছিদ্র এ কামরাটিতে ভোরের অনুপ্রবেশ নিষিদ্ধ, তাসত্ত্বেও
ভোরের অস্তিত্ব এখানে উপস্থিত, দেহঘড়ির
নিয়মে
গোছগাছ তো অনেক আগেই সমাপ্ত, এমনকি
রাবারের স্যান্ডেলজোড়াও
তবুও অনুসন্ধিৎসু দৃষ্টি সর্বত্র, অবশেষে
বাক্সপেঁটরার কনিষ্ঠতম সদস্যটিরও প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত।
নিশ্চিত। হায়, আসলেই কি নিশ্চিত আগস্টের এক তাতানো রাতের সব কিছু?
দ্যাগ হ্যামারশোল্ড
প্লাজার মডেল
দ্যাগ হ্যামারশোল্ড
প্লাজায় আজ রোদের হুলুস্থুল মেলা
আমিও তাই দুপুরবেলা
কেউ ছিল না পাশে,
লোহার শুনশান বেঞ্চে আমার রৌদ্রপান
খানিক পরেই এক
কৈশোরোত্তীর্ণ শ্বেতাঙ্গিনী, বুঝি তারও ইচ্ছে খানিক রৌদ্রস্নান
মেয়েটি এখন বিপজ্জনক
রকম দাড়ি-কমাহীন
এবং অনেকটা ক্ষমাহীন
নিকটবর্তী।
রোদের উষ্ণতার সাথে
ওর নিঃশ্বাসের ককটেল আমার ঘাড়ের ওপর
চোখের ভ্রমণে
খানিকটা সংকোচ, সেও তিরোহিত কয়েক মুহূর্তেই
ওর শুভ্র ত্বকে, নীল
চোখে, সোনালী চুলে
এবং এক পর্যায়ে ওর
স্ট্র-হ্যাট, দামী বসন, লুই ভ্যুইতোঁর হাত ব্যাগ ও স্টুয়ার্ট উইজম্যানের
ডিজাইন করা হীরকখচিত
জুতোয়... এলোমেলো একটি ওয়ার্ল্ড ট্যুর
আমার চিন্তায় কোনো
ধনকুবের চিনিবাবা, তার সুখের রিংকেলস...
মেয়েটির চোখ
নিস্পলক, ওখানে ম্যানহাটনের আকাশ
কী আশ্চর্য! এত এত
মূল্যবান জামা-জুতো, হাত ব্যাগ, মুহূর্তেই বাহুল্য?
হীরকখচিত জুতোজোড়ার
কি বেমানান বিচ্ছেদ পদযুগলের সাথে
কিন্তু ওর তো পা-ই
নেই, জুতোর ভেতরে কী ছিল তাহলে?
খুব ফিনফিনে যদিও,
ভারসেইজের ম্যাগনোলিয়া টপসটি, এখন
ফোরটি সেকেন্ড
স্ট্রিটের পাথরের ওপর উড়ালমান, পরিপূর্ণ রৌদ্রস্নানের
জন্য উন্মুক্ত ওর
কৈশোরোত্তীর্ণ দেহখানি।
কী অবাক কান্ড, ওর
উন্মুক্ত বক্ষদেশে তো কোনো স্তনাভাস নেই!
ওর ডান হাতের
অনামিকার সাথে যুথবদ্ধ বৃদ্ধাঙ্গুল এবং মধ্যমা স্ট্র-হ্যাটের ওপর
খুব ভয়াবহ এই দৃশ্যটি আমার জন্য নয়।
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন