কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

রবিবার, ১৪ মার্চ, ২০২১

দেবাশিস ভট্টাচার্য

 

কবিতার কালিমাটি ১০৪


এক বিভ্রম

 

বিভ্রমে দেখতে পাই নক্ষত্র হয়েছে গাছ

শীতের আলো আর পাতা একাকার হয়ে ঝরে পড়ছে

ঢাকা হয়ে যাচ্ছে আমার পা

হাঁটু পর্যন্ত সবুজ পাতার আস্তরণ

হাঁটতেই হবে তবু অগ্রগতির জন্য এই পদক্ষেপ

 

যদিও এক সুস্থ শান্তির আরাম ঘনীভূত হচ্ছিল

এক ফোঁটা দু’ফোঁটা বৃষ্টি ঝরঝরিয়ে পড়ছিল

এই রাত্রি আমার চেনা, পরিচিত তার

আকাশে গা এলিয়ে কেউ পাশ ফিরে শুয়েছে

এ গল্প কবির কাছে শোনা

এই নিজের অনুভবে বুঝে উঠি আমরা আন্তরিক দূরবর্তী নয়।

 

বরফের দেশ

 

বরফ-ঢালা মুক্তো শাদা পথ

সিমলার মতো কিন্তু সিমলা কি

কাশ্মীরি তামাশা দেওয়া রঙ

অচেনা শহর জমকালো লোকজন

 

এরপর থেমে যাওয়া ভালো

কেউ নেই যায় না ধ্রূবতারা

অথর্ব প্রতিবন্ধী কেউ রাঙায় চোখ

বোঝে অদৃশ্য ভূমি-নর হলে কেউ।

 

ঘর-ছাড়া

 

সকাল থেকে অভাবের কথা শুনি

কারো কোনো চেষ্টিত প্রতিবিধান নেই

আমার ঘাড়ে পড়বে এ দায় জানি

 

গতকাল ভোরে তুমি কি পথে বেরিয়েছিলে এই

তা যাই করো নিজের কথা ছেড়ে

এবার একটু অন্য সবার কথা পারো তো ভাবতেই

 

সুস্থির অমন একলা নির্বোধ ভাব যায় যে বেড়ে

সবাই দেখছে কতটা তুমি হয়েছ স্বার্থপর

কাকে যে কখন কি বলে যাও ঘাড় নেড়ে

 

আমার আর যোগ্য নয় এ ঘর

চললাম আজ-ই সবকিছু ফেলে-টেলে

নাও তুমি ভার নিজেকে নিজের ওপর

 

জানাও যদি ভাবতে পারি, কিছু কি ভেবে পেলে

ভাবছো না এমনি স্থাপত্যপ্রতিম মানব

প্রতিক্রিয়া নেই! তুমি একাই তাহলে থাকলে ওহে ছেলে।

 

অনেক রচনার পর

 

মনের মত করে শব্দের মূর্তি গড়ে তোলাই যখন কাজ

গ্রামের সবুজ ঘেরা ঘর নগরের শরীরী শূন্য পথে

বাংলার দুই রূপ দীন আর ঐশ্বর্যে ভরা

নবীন যুবক আর বৃদ্ধের আবেগের গান

প্রাণের কৈশোর স্পন্দে দোল খাওয়া অর্চনা মেঘ

সফল শস্যের মাঠ কালের খসে যাওয়া স্থবির ইট

জমে উঠছে এসব আবর্জনার দৃশ্য

 

সংস্কৃত ও যা সংস্কৃত নয় তাও আছে

আত্ম-মানব খোলসহীন স্বচ্ছন্দ ধরিত্রী-স্পর্শে উতলা

এই জল বালির বণিতা সন্ন্যাস দৃষ্টির মতো প্রখর

গ্রীষ্মের রোদ আর পৌষের শীতল খরা

দুই চোখ প্রাকৃত চড়াই উৎরাই পালি লিপি

জননী নীরব হতে গেলে অন্ধ সুসময় চলে যায়।

 

 


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন