কাব্য করে বলতে গেলে
(১)
ছবিটাকে
অনেকবার ভেবেছিলাম, অনেক ভাবে
আঁকবো
বলে ক্যানভাসটা সামনে যখন
কুয়াশার
রঙটা ঠিক কেমন হবে
ভাবতে
গিয়ে,
এক ফোঁটা ওই শিশির এমন
ভিজিয়ে
গেল
–
এখনও
দেখ একই ভাবে বসে আছি
তুলির
টানে নীলের পরে ধূসর এল
সময়বিহীন
প্রহরবিহীন কাছাকাছি
এখনও
দেখ একই রকম চলছে খেলা কানামাছি,
আমি
কিন্তু বসেই আছি কাছাকাছি।
(২)
জানিস, এমনটা যে হতে পারে জানা ছিল না
ইচ্ছেগুলো
দিব্য ছিল চিলেকোঠায়, অন্ধকারে
ভয়
পায় না এখন ওরা, অলীক চাওয়ার জরিমানায়
শেষের
হিসাব,
দেখি জোনাক আলোয় পুড়ে
গেছে
সব কটা রাত –
তবু
স্বপ্নে দেখি জ্যোৎস্না ভেজা ময়ূরপালক
ঠোঁটের
ভাঁজে লুণ্ঠিত মৌতাত
বাঁশি
হাতে সিক্ত হৃদয় রাখাল বালক
স্বপ্নে
আসে জ্যোৎস্না রাতে, এক মুহূর্ত এক ঝলক
আমার
দেখা ময়ুরপালক রাখাল বালক।
আবার ও বাজবে কোনদিন
স্মৃতি
সে তো ঝরাপাতা নয়
প্রতিপলে
রেণু মেখে আসা
অকরুণ
সবুজে সবুজ হয়ে,
রোজই
আসে সে
রোজই
আসে ভিজে হাওয়া বেয়ে
কখনও
চুপি চুপি পায়ে, নরম আদরে
কখনও
ক্ষমাহীন আসে ধেয়ে।
শুধু
হাতে হাত রেখে পথ চলা নয়
ভালবেসে
ভালবাসা তাই
বিরহে
মধুর আবার,
নিয়ত
নতুন কোনো ছলে
সেই
ছলে দূরে থাকা সহজ দোহার
এই
পথে হারিয়েছি তার, অবুঝ সেই
প্রিয়তম
দাবি যত আর।
প্রতি রাতে রাত আসে তবু পরিচিত নয়
আজ
যদি ছায়াপথে জাগে
কাল
সেও জোছনায় সেজে,
হেরে
যেতে চায়
হেরে
যায় আরও একবার ঝুলনের ব্রজে
মেঠো
পথ আদ্রিজে, দেয় পরিচয়
মোহনাও
উসৎই নিজে।
বাঁকা
চাঁদ ছুঁয়ে যায় মেঘ নয়
ধোঁয়া
রঙে ভেসে থাকা সুখ
এসেছিল
করজোড়ে তোমার অধীন,
চঞ্চল
প্রপা হয়ে
চঞ্চল
প্রপা হয়ে বয়ে যাওয়া বীণ
ঋদ্ধ
সুরে বেজেছে গহীন, কোনো ষোড়শীর রাতে
আবারও
বাজবে কোনোদিন
আবার
ও বাজবে কোনোদিন।
আমরাও পদ্ম ছিলাম
প্রতিটা
লাইনের ওপর দিয়ে হেঁটে এসেছি আমি
শব্দের
এক একটা ভাঁজ
একটু
টানাপোড়েন
অনেকখানি
ছেড়ে থাকা আবার হঠাৎ জড়িয়ে পরা
এদের
সাথে আমি ছুটে এসেছি
পেরিয়ে
এসেছি সেইসব জ্যোৎস্না প্লাবিত উপত্যকা
সেখানে
গভীর অরণ্যে সোনালী সূর্যটা লুকিয়ে পড়ছে
ছিটকে
আসছে শেষ কিছু কথা
তখনও
আগুন দেখছি সরু বাদামি ডালের গায়ে
হলুদ
আগুন
মৃদু
বেহালা বেজে উঠছে পুড়ে যাওয়া আলোয়
তুমি
পদ্ম পাতায় পা ফেলে মরালীর মত উঁচিয়ে ধরেছ মুখ
সে
বিভঙ্গে কোনও আশঙ্কা চোখে পড়েনি
এমন
করেই বাস্তব থেকে মায়া হয়ে গেছে কত কিছু
এখন
আর ছোঁয়া যায় না তোমায়
এখন
আর ছোঁয়া যায় না কিছু
জলের
ফোঁটাগুলো পাতার ওপর পড়তেই আলো জ্বলে উঠছে মিটি মিটি
ভালবাসছে
মিশে যাচ্ছে আর গড়িয়ে পড়ছে অসীমে
গোলাপি
প্যাস্টেলের আঁচড়গুলো এখন জলে মিশে যাচ্ছে
ধূসর
রঙের ওপর এবার ফুটে উঠবে সাদা ফুলের নরম পাপড়িরা
সবুজ
পাতাগুলোয় এখন কালো রঙ লেগেছে
ছায়ার
রঙ অন্ধকারের বাস্তব
এখন
পায়ের তলায় পোড়া আলো
এখন
বুঝি আমরাও পদ্ম ছিলাম
চোখের
ওপর মাথার ওপর পদ্ম ছিলাম
ঠোঁটে
হলুদ আগুন।
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন