কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

শনিবার, ৩ মার্চ, ২০১৮

ইন্দ্রনীল চক্রবর্তী




সাড়ে দশটার মেট্রো


প্রথম দৃশ্যঃ

বাইরে তখন প্রবল বৃষ্টি হচ্ছিল সাড়ে দশটার ট্রেনটা আমায় ধরতে হবে নইলে যাত্রা কাজ হবে না  চেতনার যে টুকরো গন্তব্যে পড়ে রয়েছে, সেখানে আমায় পৌঁছাতে হবে চেতনার কথায়  মনে পড়ে গেল সুবীরের কথা এক বছরও হয়নি; সুবীর এই সাড়ে দশটার ট্রেনটাই আমার সাথে ধরত টালিগঞ্জ থেকে রোজ রবীন্দ্রসদন যেত তাড়াহুড়ো করে সিঁড়ি দিয়ে নামত আর অমি পিছন পিছন ছুটতাম আর  বলতাম,  সুবীর দাঁড়া, অত তাড়াহুড়ো করিসনা!”  কিন্তু কে কার কথা শোনে!  অমি ট্রেনের দিকে  ক্রমশ এগিয়ে যাচ্ছি, সাড়ে দশটার ট্রেন আসছে স্টেশনের বাইরে তখন প্রবল বৃষ্টি হচ্ছিল এবং হুড়মুড় করে সত্যি সত্যি ট্রেন এসে পড়ল

দ্বিতীয় দৃশ্যঃ

পাশে কে যেন মিষ্টি গলায় বলে উঠল, “নিন এবার উঠে পড়ুন, আর কত শুয়ে থাকবেন,  ওষুধটা খেয়ে নিন!”
নার্স ওয়ার্ড ছেড়ে বেড়িয়ে গেল তার ওষুধ খাওয়ানোর ডিউটি এখনকার মত শেষ সামনের বড় ঘড়িতে তখন ঘণ্টার কাঁটাটা তিন আর চারের ঠিক মাঝে আর মিনিটের কাঁটাটা তখন ছয়ে ২৫ নম্বর পেশেন্ট অনিমেষ হালদারের বিছানা ঘামে ভিজে গেছে  বাইরে মেইন গেটের উপরে লেখা আছে ‘অমৃতা দেবী মানসিক হাসপাতাল’ বাইরে অবশ্য তখন তুমুল বৃষ্টি হচ্ছে

তৃতীয় দৃশ্যঃ

মেট্রো স্টেশনের পাশেই ওর বাড়ি খেয়েদেয়ে বাড়ি থেকে বেরনোর পর রোজকারের মতন  সিগারেট ধরিয়ে নেয় ধীরে সুস্থে টালিগঞ্জ মেট্রো স্টেশনের  সামনে আসে আজ একটু আগে এসেছে সে এখানেই অনিমেষের জন্য রোজ অপেক্ষা করে আজকে বড্ড দেরী করছে অনিমেষ তড়িঘড়ি করে সিঁড়ি দিয়ে নেমে টিকিট কাটে এখনও আসছে না, ছেলেটা কী যে করে!  ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে আর মাঝে মাঝে পিছনে তাকায়, দেখে অনিমেষ এলো কিনা! এবং পা হড়কে লাইনে পড়ে যায় সবাই হইহই করে ছুটে আসে

চতুর্থ দৃশ্যঃ

“কিছু মনে করবেন না দাদারা, আমার নাম সুবীর দাশ আমার বন্ধু অনিমেষের কথা  ভাবতে ভাবতে অন্যমনস্ক হয়ে গেছিলাম আর  মেট্রোর লাইনে পড়ে গেছিলাম শুনলাম, ও নাকি মানসিক হাসপাতালে ভর্তি আছে! জানেন, একটা সময় রোজ ওর  সাথে মেট্রো করে যেতাম সকাল সাড়ে দশটার ট্রেনে


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন