কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

শুক্রবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১৭

গৌরাঙ্গ মোহান্ত

অন্ধকার দাহস্মৃতি

অন্ধকারে জেগে থাকে দূর শহরের ক্ষীণ আলো শহরদাহ নয়, দাহস্মৃতি আমাকে বিষণ্ণ করে রাখে সারাদিন কোরীয় পাহাড়ের রক্তপল্লব আমাকে উদ্দীপ্ত করেছে, দাহ অনুষঙ্গ চেতনায় ছড়িয়ে দেয় নি হেমলক ছায়া সূর্য মৃত্যুকে ঢেকে রাখে, অন্ধকারে সূর্যরেখার অদৃশ্য গতির দিকে চেয়ে থাকি আমার দৃষ্টিপথে ভেসে আসে তোমার দীপিত বস্ত্রখণ্ড একদিন অরণ্যসরোবর আলোকময় মাছে মুখর হয়ে উঠেছিলো তোমার স্পর্শে  আমার আবরণধূলি নক্ষত্রপালকের লাবণ্য ধারণ করেছিলো আলোকপ্রবণ মাছের প্রাত্যহিক উৎসবে তোমার নক্ষত্রনাম কীর্তিত হয়; আমার প্রত্যাশী পরিচ্ছদে লেগে থাকে বিরামপুরমৃত্তিকা লাবণ্যকামনাময় ধূলি আমাকে অন্ধকারে উৎসাহী করে তোলে আমি একটি নামে ঢেকে রাখি অনন্ত দাহস্মৃতি


কিং অভ্ দ্য পাইরেটস্

পানশালায় ঢুকতেই রূপবান কুমারের সাথে সুদর্শনাগণ জাপানি ভাষায় চিৎকার করে আমাদের স্বাগত জানান হাল ফ্যাশনের কালো পোশাকে সজ্জিত তারা অদ্ভুত জলদস্যু! আকর্ষণীয় হ্যাট অলংকারে সুদর্শনাগণ চিত্তরঙ্গিলা হয়ে উঠেছেন একটি ছিপছিপে মেয়ের আলোকচিত্র নেবার জন্য উদগ্রীব হলাম আমার কুণ্ঠিত মনোরথ উদ্ভিন্ন হলে তিনি দাঁড়ালেন, হাসলেন আমরা অক্টোপাসের চপ্, বিন্স্ খেতে খেতে জাপানিদের আত্মহত্যার প্রসঙ্গে মেতে উঠলাম জীবনকে জ্যোৎস্নাময় পূর্বাচল রিজে টেনে তুলতে জাপানিদের জুড়ি নেই একিবেনে ভাতবলের সাথে সুদৃশ্য ফুলের বিন্যাস কিংবা কাঠের মসৃণ পেয়ালায় সাকে পরিবেশন যে শিল্পসৌরভ সৃষ্টি করে তা চেতনায় নিরন্তর হতে থাকে আঘ্রাত আত্মসম্মানের চেয়ে শিল্পবোধ কোনো দিন বড় হয়ে ওঠে নি জাপানিদের কাছে জীবনের ক্ষণিক নির্মমতায় তারা অস্থির হয়ে পড়েন ; ফুজির শীতলতায় নিমেষে ছড়িয়ে দেন আজন্ম নির্মিত উষ্ণ পালক উঁচু ভবনের ছাদ থেকে যেমন তারা লাফিয়ে পড়েন, তেমনি টুইটারে যোগাযোগ করে বায়ুরুদ্ধ কারে অগ্নিদগ্ধ হয়ে গণআত্মহনন নিশ্চিত করেন জীবনে চূড়ান্ত বৈপরীত্যের এই দৃশ্য সমীকরণসিদ্ধ কিনা তা নিয়ে আলোচনা শেষ না হতেই পানপাত্র শূন্য হয়ে পড়ে তীব্র কোরাসের সুরে সাকিগণ আমাদের বিদায় জানান 


পাহারার অগ্নিবন্ধন

দৃষ্টি নয়, পাহারার অগ্নিবন্ধন থেকে বেরিয়ে আসার জন্য উদগ্রীব থাকি পথে গলিত আগুনের সর্পিল গতি ব্যক্তিগত বিষাদ কিংবা স্পেসবন্দি আনন্দের ভেতর মাঝে মাঝেই ঢুকে পড়ে সাপ নির্মোকে খোদিত থাকে সাপের নির্গমনকাল সাপকে দেখা যায় না, সাপের অগ্নিময়, আকস্মিক শব্দে কেবল কেঁপে উঠি স্নায়ুর ভেতর কম্পনসূত্র রেখে যায় মনোরোগের নটে বীজ; বীজের গোলাপি আভা আমার শক্তি অস্তিত্বকে উপহাস করে আমি পরিবেশবন্ধন থেকে নিজের জন্য খুঁজি দূর কোনো গ্রহ 


সৃষ্টিবিভাস

সৃষ্টিবিভাস নদীবক্ষে প্রতিফলিত সহজ সূর্যকিরণ নয় অন্ধকার মৃত্তিকার আবরণ ফুঁড়ে উঠে আসা এক অমল অঙ্কুরের নাম সৃষ্টিবিভাস একমাত্র অঙ্কুর-পেলবতা স্রষ্টার কাছে কাম্য হয়ে ওঠে না অঙ্কুর যা দিয়ে যায় তার বাস্তব মূল্য নিরূপণ সহজসাধ্য নয় অঙ্কুর নিমগ্ন হতে শেখায়; নিমগ্ন হলেই প্রেম, বিষণ্ণতা, নির্জনতা মৃত্যুচেতনার ক্রিস্টাল তুলে ধরে মায়াময় অমৃত মায়াময় বলেই কি স্রষ্টা  কি অনুরাগী সবার কাছেই সৃষ্টির কেন্দ্রবিন্দুর নিশ্চয়ন দুরূহ


কম্পন


কতভাবেই তো প্রস্তুত হওয়া যায়! আমার প্রস্তুতিপথে মেঘ-নক্ষত্র-আকাশ ক্রোটনপত্র ছড়িয়ে দিচ্ছে আমার চোখে পাতার ত্রিমাত্রিক নৃত্য দেখে বলেছিলে কিছু কম্পন শাশ্বত হয়ে ওঠে প্লেনের ক্ষণস্থায়ী কম্পন তোমার স্বরসত্তাকে প্রবল করে তুলছে এবার শূন্যতা কুণ্ডলিত হলে তুমি আমার ক্ষয়িঞ্চু ত্বক আর পেশির ভেতর দেখবে যতিহীন শব্দের প্রসারতা যন্ত্র আর বাতাস যে নিরবচ্ছিন্ন শব্দ তৈরি করে তার প্রভাব-সূত্র নিউরনে রেখে যায় অম্লান বিশ্বাস পরিবর্তনের ভেতর যা অপরিবর্তিত থেকে যায় তাকে জেনেছি নৃত্য ক্ষয়ের কেন্দ্রে যা অক্ষয় থেকে যায় তাকে জেনেছি কম্পন আমি আসছি, তুমি আমার কম্পন দেখে নিয়ো

1 কমেন্টস্: