কালিমাটি অনলাইন / ৩০
'কালিমাটি অনলাইন' ২৯তম সংখ্যার সম্পাদকীয়তে
আমরা আমাদের প্রিয় পাঠক- পাঠিকাদের কাছে বিনীত অনুরোধ জানিয়েছিলাম যে, আপনাদের
দৈনন্দিন জীবনে এমন অনেক ঘটনাই ঘটেছে যা আপাতদৃষ্টিতে হয়তো খুবই সাধারণ ঘটনা বলে
মনে হয়েছে অথবা আপনাদের ব্যক্তিগত জীবনে এমন কিছু অভিজ্ঞতা হয়েছে, তাৎক্ষনিক ভাবে
যা আদৌ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হয়নি। কিন্তু এমনও তো হতে পারে, সেইসব আপাত তুচ্ছ ঘটনা ও অভিজ্ঞতার মধ্যে থেকে গেছে
কিছু তাৎপর্যপূর্ণ অসাধারণ প্রাপ্তি, তা হয়তো আপনারা সেভাবে তলিয়ে দেখেননি বা ভেবে
দেখেননি। আর তাই আমরা অনুরোধ করেছিলাম, আপনারা সেইসব ঘটনা ও অভিজ্ঞতার কথা
লিপিবদ্ধ করে রাখুন। এবং সেই লেখায় যদি সত্যিই কোনো সাহিত্যগুণ থাকে, যা একটা নতুন ভাবনা চিন্তা
দৃষ্টিভঙ্গি অনুভূতির জন্ম দিচ্ছে, তবে সেই লেখাটি নিঃসংকোচে ‘কালিমাটি অনলাইন’
ব্লগজিনের জন্য পাঠিয়ে দিন। কিন্তু আমাদের অনুরোধ বা আবেদনে তেমন কোনো সাড়া পাইনি আপনাদের তরফ
থেকে। প্রসঙ্গক্রমে এখানে একটা কথা উল্লেখ করি, ফেলে আসা দিনের কথা বলতে বা লিখতে
গেলেই আমরা আক্রান্ত হই এক ধরনের আবেগ প্রবণতায়, যাকে আমরা নস্টালজিয়া বলে থাকি।
যাঁরা ইতিমধ্যেই বয়সের বিচারে এই পৃথিবীতে অনেকগুলো বছর কাটিয়ে ফেলেছেন, তাঁরা
সামান্য সুযোগ পেলেই ফিরে ফিরে যান তাঁদের সেই ফেলে আসা 'সোনালি' দিনগুলিতে।
চলচ্চিত্রের ফ্ল্যাশব্যাকের মতো মনের লেন্সে তখন পাক খেতে থাকে কত কী! এবং তাতে যে
কী আনন্দ, কী বিষাদ বা বিষাদেরও আনন্দ! আর একটু গভীর ভাবে পর্যবেক্ষণ করলেই চেতনায়
ঘা মারে জীবনের অনেক অনেক লুকিয়ে থাকা সত্য ও সততার সংজ্ঞা। আমরা আপনাদের কাছে
সেইসব প্রাসঙ্গিক ও পরিবর্তিত সত্যকে লিখিত মাধ্যমে পরিবেশন করার জন্য অনুরোধ
রাখছি।
প্রসঙ্গত এখানে আর একটি বিষয় নিয়ে সংক্ষেপে
আলোচনা করতে চাই। 'কালিমাটি অনলাইন' ব্লগজিনের প্রতিটি সংখ্যায় প্রকাশিত হয়
ঝুরোগল্প। ব্লগজিন প্রকাশের আগেও আমরা ঝুরোগল্প প্রকাশ করেছি 'কালিমাটির ঝুরোগল্প'
ব্লগে। বর্তমান সংখ্যাটি সহ ইতিমধ্যে 'কালিমাটি ঝুরোগল্প'র মোট ৩৬টি সংখ্যা
প্রকাশিত হলো। প্রতিটি সংখ্যায় বেশ কয়েকজন কথা সাহিত্যিকের ঝুরোগল্প থাকে। কিন্তু
এতদিন এভাবে চলার পরও একথা উল্লেখ করা জরুরি হয়ে পড়েছে যে, ঝুরোগল্প সম্পর্কে
অনেকেরই স্পষ্ট কোনো ধারণা নেই। বিশেষত অনেকেই ঝুরোগল্পকে গুলিয়ে ফেলেন অণুগল্পের
সঙ্গে। আপনাদের জানাই, অণুগল্প ও ঝুরোগল্প কখনই এক নয়, বরং এই দুই আঙ্গিকের গল্পে
আছে চরিত্রগত, বৈশিষ্ট্যগত, ভাবনাগত, আঙ্গিকগত পার্থক্য। সাদামাঠা কথায় বলা যায়,
প্রতিটি অণুগল্পের একটি নির্দিষ্ট শুরু থাকে এবং একটি নির্দিষ্ট পরিণতি থাকে।
ঝুরোগল্পে এই দুটিই অনির্দিষ্ট থাকে। ঝুরোগল্প অর্থাৎ ঝরে পড়া গল্প। এবং যা ঝরে
পড়ে, তার মধ্যে পরিণতির ব্যাপারটা অনিশ্চিতই থাকে। আর শব্দ সংখ্যার যে সীমা থাকে
অণুগল্পে, ঝুরোগল্পেও তা আছে। ঝুরোগল্পে আপাতত আমরা শব্দসংখ্যা ৫০০(+/-) সীমিত রেখেছি।
আগে এই শব্দসংখ্যা রাখা হয়েছিল ৩০০। আজ সম্পাদকীয় লিখতে বসে এই প্রসঙ্গটি উল্লেখ
করা প্রয়োজন হলো এই জন্য যে, প্রকৃত বিচারে আমরা ঝুরোগল্প খুব কমই পাচ্ছি। অনেকেই
গল্প পাঠাচ্ছেন। তাঁরা গল্প ভালোই লিখছেন। কিন্তু গল্পগুলো ঠিক ঝুরোগল্প হয়ে উঠছে
না। আমরা আশা করব, গল্প লেখকেরা ঝুরোগল্পের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলি সম্পর্কে
অবশ্যই সচেতন থাকবেন এবং উৎকৃষ্ট ঝুরোগল্প রচনা করে বাংলা সাহিত্যের এই নতুন
ধারাটিকে পুষ্ট করবেন।
শারদোৎসব দুর্গাপুজো সদ্য অতিক্রান্ত হলো।
সবাইকে জানাই শারদ শুভেচ্ছা এবং শুভ বিজয়া।
আমাদের সঙ্গে যোগাযোগের ই-মেল ঠিকানা :
দূরভাষ যোগাযোগ :
0657-2757506 / 09835544675
অথবা সরাসরি ডাকযোগে যোগাযোগ :
Kajal Sen, Flat 301, Phase 2, Parvati Condominium, 50 Pramathanagar Main
Road, Pramathanagar, Jamshedpur 831002, Jharkhand, India
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন