কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

রবিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৫

বহতা অংশুমালী

যেদিন আবার সন্ধে এলো

পুরনো প্রেমিকদের বাড়ি সেই পাড়ায় এখনো
যেসব পুরনো গাছ সেইসব দিনে ছায়া দিত
যাদের আড়াল করা গুঁড়িদের উপকারিতা

পরীক্ষার খাতায় কোনোদিন লেখাই যাবে না,
তারা ছাড়া আর কেউ আজকে আমায় ডাকলো না
অথচ ভীষণ কোনো কেজো দরকারে
কলিংবেল দিতে হয়
খুদেকে আদর তার মাকেও খাজুরে
বাকিটা প্রণাম সেরে রাত হয়ে গেল
এটাও রাস্তার এক ষড়যন্ত্র বলা যেতে পারে
কিছু ভিতু গুণ্ডা পোষে অথবা গুণ্ডার লোককথা
এগিয়ে দিতেই হয় খানিকটা আগে
হঠাৎ চাঁদটা খুব বেঁকে যায়
হাওয়া দেয়, রাস্তাও দ্রৌপদীর মতো এঁকেবেঁকে
শাড়ি খুলে দিতে থাকে, আরো হাঁটো, হাঁটো আরো
রাস্তার নদী ফুরোবে না
ল্যাম্পপোস্ট ঝকমক করাবে পিচের কালো জল
আমরা না বলা কিছু কথা তাই হোয়াটস অ্যাপের
পিওনের হাতে আজ গচ্ছিত রেখে ফিরে যাব


কেমন করে তোরঙ্গ আজ খুলি?

পুরনো প্রেমিকদের চিঠি ভাসমান দিনে
একেকটা নৌকা
সময়ের সেইসব বাঁকে
অন্যমনস্ক ভাবে ছিপ ফেলে থাকে
তুমি কি রুপোলি কো
নো সংকেত পেয়েছো হে ফাতনায়?
তারা ঘাড় ঘোরায় না, হ্যারি পটারের
ভলডারমর্টের মতো ধোঁয়াশা তাদের চোখে মুখে
কোয়াণ্টাম তত্ত্বের মতোন সে দুর্জ্ঞেয় গুহা ছুঁইমুই
আলো পড়লেই যেন সরে সরে যাবে
আমি তো গাঢ় কোনো রাসায়নিক ঘুমের ভিতরে
ফসফরাসের নেভা নীলাভ অন্ধকারে দেখি
খয়ে যাওয়া নাক মুখ কিছু সকরুণ কিছু সপ্রতিভ
একমনে চিঠি পড়ে বসে একা একা


মায়া
ঝগড়ার মাঝখানে শ্যাওলা সিঁড়িতে
হুড়মুড়িয়ে নামতে গিয়ে পড়ে যায় বোকা মতো লোক
অশ্রুমু
খী বউ তার থমকে থাকে, হঠাৎ কি করে?
অকস্মাৎ ডুকরে কেঁদে ক্লান্ত পুরুষ বলে ওঠে
মায়া নেই? এতটুকু মায়া?
এরপরে ট্রামে বাসে, মানুষের ঘন নিঃশ্বাসে
সেই কথা প্রতিধ্বনি হয়
প্রতিধ্বনি হয় তার গভীর দুপুরে
সন্ধেয় চা
-এর পাশে একটু কষ্টে করা টাও রাখা থাকে
মায়া আছে, আছে আছে আছে!

দাঁত চুল লড়াইয়ে বসে দেখে অনেক সন্তান
এবং দু
দলে ভাগ হয়ে গিয়ে অনেক সন্তান
ভাবে এটা বললে বেশ হতো, কাপুরুষ!
ওই কথা বললো না কেন?
বছর ত্রিশেক পরে নোনাধরা বাড়ি কত বর্ষা বুকে নিয়ে
চেতিয়ে দাঁড়ায়
রঙচঙে প্রাইমারে শ্বাসরুদ্ধ ফ্ল্যাট,
বিদ্যুতের মতো বোঝে, এই কথা কটা -
না বললেও হতো
কী কী কথা ঘরবাড়ি সয়ে যায়?
কী কী কথা বুকে নিতে পারে?

আঁচলের হলুদের দাগে মায়া ভরা থাকে
হাজাধরা পায়ে
স্কার্টেও মায়া থাকে, খুলে রাখা ক্লিভেজেও
অনেক গভীরে
তবু কেউ ডাইনী হয়ে যায়,
কেউ কেউ
ভালোবাসা চেয়ে ভুডু করে
মাস বিদেশে ট্রিপ সেরে এসে কারা যেন হাঁ করে ঘুমোয়
অন্য কারা চেয়ে থাকে -
মায়া নেই? এতটুকু মায়া?

যদি সে তন্ত্রীতে ঘা দাও
যদি সে তন্ত্রীতে ঘা দাও
সঙ্গীত বেরোবে
কেমন দুষ্টু তারা, ফেলে ভাঙ্গে টলোমলো পায়ে
বুকের পশম জুড়ে যারা হেঁটে যায়

মহিলা তোমার বন্ধু নয়, কখনো ছিল না
কিন্তু এখন দিদা, তুমিও তো, হঠাৎ বিকেলে
যদি তার চাঁদপানা নাতিটার গাল টিপে দাও

এমন সঙ্গীত কিছু নদী হাওয়া পেলে
ভাটিয়ালি হতো
এখন সঙ্গীত তার ছায়া ছায়া ঘরে
রেডিও দুপুর
দু
বেজীর এক নাতি মরে গেছে ঠাণ্ডা লগ গয়া
এখন নাতনি যেটি খুব সাজে,
বাবু, ফেতে চায়,
লাল পিলে ফেতে, সাব, চুল বাঁধবার

রঙ্গিন অনেক ফিতে দুবের বিকেলে
গলায় মায়ার ফাঁস, দুবেজী, তুমিও দাদু হলে?
জামাই কোথায় তুমি মহিলাকে জিজ্ঞেস কোরো না  
সবাই জানতো, তুমি জানতে না? মেয়ে বা কোথায়?
সে কখনো বেড়ায় নি, শৈশবে, যৌবনে কৈশোরে
তাকে কেউ সংসারে দেয় নি বিশ্রাম
কপালের রিক্ত ক্লান্ত চক্রাকার ধ্যাবড়া সিঁদুর
উঠোনে খেলছে ফিরে,
নন্দলাল, হা রে নন্দলাল
মথুরা দেহ রে মোহে, দিন ঢলে, সায়াহ্নকাল
যদি সে তন্ত্রীতে ঘা দাও



0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন