রিমেক
চায়ে প্রথম চুমুক মেরে সুজয় বলল, “জাস্ট
টাইম কাটানোর জন্য গতকাল ‘কেলোর কীর্তি’ সিনেমাটা দেখতে গিয়েছিলাম।”
“ওগুলোকে তুই সিনেমা বলিস!” উৎপল বলল। “ওই বালের ফিলিমগুলো
যদি সিনেমা হয়, টারান্টুনোর কাজকে কী বলবি?”
“টাইম কাটাতেই গিয়েছিলাম বাঁড়া! অত ভেবে যাইনি।”
“ওহো, সুস্মিতা তো কয়েকদিন আবার মামাবাড়ি
গেছে। তোর হেবি চাপ হয়ে গেছে। তা, কাটল তোর টাইম?”
“ধুর বাল! ওটা তো নো এন্ট্রির টুকলি! সেই
সলমন-অনিল কাপুরের সিনেমাটা! পুরো কপি মেরেছে মাইরি!”
“দেব কি সলমনের রোলটা করেছে?”
“হ্যাঁ। বাল। ভাবতে পারিস?”
“আর কী করবে! ওদের যা অবস্থা! রিমেক তো
আগেও হয়েছে। বাগম্যানের সিনেমা ‘ওয়ার্লড স্ট্রবেরি’ থেকে সত্যজিতের ‘নায়ক’ হয়েছে।
আরো কত কী... কিন্তু এদের আর কত খ্যামতা! হে হে হে... আর
তোর মতো মালগুলো টাইম কাটাতে গিয়ে এদের ব্যবসাও দিয়ে দেয়।”
অভীকের চা খাওয়া হয়ে গিয়েছিল। সে উঠে
দাঁড়াল।
উৎপল বলল, “চললি?”
“কাজ আছে। একটা কথা বলি, কিছু মনে করিস
না।”
“কী?”
“টারান্টুনো নয়, ওটা ট্যারান্টিনো, অথবা
তারান্তিনো। কোয়ান্তিন তারান্তিনো। আর ওটা প্লিজ বাগম্যান নয়! ওটা বার্গম্যান। সিনেমাটাও
‘ওয়ার্ল্ড স্ট্রবেরি’ নয় - ‘ওয়াইল্ড স্ট্রবেরিজ’। নিজে ওই বিখ্যাত
নামগুলোর রিমেক করিস না প্লিজ। নামগুলো তো অলোকদার কাছে শুনেছিস, আমি জানি, মাথায়
ধরে রাখতে পারিসনি। আর হ্যাঁ, ওই ‘নো এন্ট্রি’ সিনেমাটাও কিন্তু অরিজিনাল হিন্দি
নয়, ওটাও একটা সাউথের ছবির রিমেক ছিল। রিমেক ভালো জিনিস
কিনা পরের কথা, কিন্তু রিমেক থেকে এমন অনেক সিনেমাই হয়েছে যেগুলো অরিজিনাল ছবিগুলোকে ভুলিয়ে দিয়েছে। শেকসপীয়ারের
নাটকগুলোও রিমেক। ওই যে বললি, খ্যামতার ওপর ডিপেন্ড করে। দ্যাখ, উৎপল, এসব বলার পর
তুই হয়তো আমার সঙ্গে দিন সাতেক কথা বলবি না। কিন্তু আমি তোর
সঙ্গে বলব। চলি, সন্ধেবেলা দেখা হচ্ছে।”
অভীক বেরিয়ে যাওয়ার পর উৎপল অস্ফূটে বলল,
“লে বাঁড়া! ক্ষীর খা!”
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন