কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

শনিবার, ৪ জানুয়ারী, ২০২০

দিশারী মুখোপাধ্যায়


আমাদের শোক 

আপনার আগেও অনেক কবিই জানতে পেরেছিলেন 
দেশের মানুষ তাঁদের মৃত্যুতে শোকাহত 

মন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপ্রধানরা 
তাঁদের শোকের ফ্লেক্স টাঙিয়ে দেন 
সংবাদমাধ্যমের ভাড়া করা দেওয়ালে 

এইসব যা যা আপনি বেঁচে থাকা অবস্থায় দেখেছেন 
মৃত্যুর পরেও দেখছেন উদাসীন চোখে 

ঈশ্বরের সাধনার জন্য মাইকের চল হয়েছে বহুদিন 
শোক প্রকাশের জন্যও হোক 
লোককে তো জানানো দরকার 
অমায়িক শ্রদ্ধা শোক বড় সেকেলে 

আপনার আগেও অনেক কবিই জানতে পেরেছিলেন 
তাঁদের লেখা দু’চার লাইন কবিতার বাজারদর 

মহাপ্রস্থানের সময় 
আপনার নখ চুল সব সঙ্গে নিয়ে যেতে পেরেছেন যথাযথ 
এও আমাদের কম ভালবাসা নয় 


কেঁদুলিতে আয়ান 

অজয়ের ঘাট। আমি আর জয়দেব। কাঁচাঘুম থেকে উঠে সেখানে হাজির হয়েছে সূর্য। চতুর্দিকে ঘন কুয়াশা। নিরিহ জলের দেহে তখন ধূম জ্বর। মাইনাস ডিগ্রী ফারেনহাইট। আমাদের দেখেই সে  আলিঙ্গন চাইল। ঘাটের দিকে তাকিয়ে যেন খুঁজতে চাইল অন্য কাউকে। আমি জয়দেবের মুচকি থেকে কিছুটা অনুমানে। 

জল থেকে উঠে হাওয়ার গামছা দিয়ে জল মুছতে মুছতে আমি ঠাণ্ডায় অসাড়। জয়দেব বাড়িয়ে দিলেন গাঁজার কল্কে। কিছুক্ষণের মধ্যে কুয়াশা কাটলে দূরের মাঠে সর্ষে ফুলের রঙ স্পষ্টতর। আমাকে সঙ্গে নিয়ে জয়দেব তার ছিটেবেড়ার ঘরের উঠোনে। একগলা ঘোমটা দেওয়া পদ্মাবতী আমাদের আপ্যায়নে গরম গরম গোবিন্দভোগের ঘ্রাণ। 

আজ ২৯ পৌষ। মকর সংক্রান্তি। লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী অজয়ের সঙ্গে দেখা করে মন্দিরে গিয়ে অবাক। রাধাগোবিন্দের পাশে আরেকজন অজ্ঞাত পরিচয়। ঠান্ডায় কাতর আয়ান কাল রাত্রি থেকে কবিদম্পতির আশ্রয়ে।

কর্ণ হতে চাই 

ভেবেছিলাম আমার লেন্স আমার ছাঁকনি আমার হরতন 
আমারই লকারে লুকিয়ে রাখবো চিরকাল একান্ত নিজের সম্পদ করে 
কিন্তু চতুর্দিকে যেভাবে সংক্রামক রোগের দাপট দেখছি 
নিজের কাছে তাদের রাখতে সাহস হচ্ছে না 
বলা কি যায় আমার হাত ঘাতক হবে না 
বলা কি যায় আমার বাকরের হুতাসন 
তোমাকেও চাইবে না আগ্রাসনে 
নিজের কাছে নিজের এসব ষষ্ঠীসহস্র রিপুর আধারকে রাখার 
ঝুঁকি নিতে চাই না 
তাই এ সুযোগে সর্বস্ব দিয়ে 
দাতাকর্ণ হতে চাই




0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন