কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

শুক্রবার, ১৪ জুন, ২০১৩

০৬ প্রশান্ত গুহমজুমদার

প্রশান্ত গুহমজুমদার
কাচঘরের আখ্যান



মধ্যবিত্ত যাপনের পরিচিত কিছু সংকট আছে। দেশকালে সে সব হয়তো কিছুটা অন্যরূপ পায়, বিষয়গুলি কিন্তু মূলত একই থাকে। সে সব সহ্য করাও বহু সময়ে অতি কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। আবার নশ্বরতার সব থেকে বড় সুবিধা, সব সময়ে হারাই হারাই ভাব। যা পাওয়া যায়, কোঁচড়ভর্তি করার জন্য তড়িঘড়ি। আর বিস্মিত হওয়া। আর জেগে থাকার ইচ্ছা। এই যে প্রবল গ্রীষ্মে কালচে পাতার আড়ালে হলুদ হয়ে আসছে ফল, একেবারেই নিভৃতে, নির্বিকারে, সেটুকু দেখতেই কি কম আনন্দ! আঙুলের ডগায় একটু একটু হারিয়ে যাচ্ছে পরিচিত দাগগুলো, সে আবিষ্কার কি কম বিস্ময়ের! এই যে ওই মেয়েরা, আমাদের ঘরের আর পাঁচটা মেয়েদের মতোই, অথচ আমাদের নয়, তাদের নানান ভাবে জানতে পারা, সংশ্লিষ্ট হওয়া, কম কথা! নানান ভাবে আমাদের বাবু-জীবনে রস সঞ্চার করা, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ অর্থনৈতিক পুষ্টির যোগান দেওয়া, পরিচিত সামাজিক উঠোনটাকে একটু সভ্যভব্য রাখার জন্য নিয়ত শরীর পাত করা, আমাদের সাদাটুকু কিছু অতিরিক্ত পমেটমসমৃদ্ধ করে রাখার জন্য আরও একটু বর্ণময় হয়ে ওঠার ছলে প্রতিদিন কালো হয়ে থাকা, ক্ষণনির্বিশেষে দুয়ার অবারিত রাখা –- ওই মেয়েদের এ সব ইতিবৃত্ত অন্য আরেক আলোর প্রান্তে দাঁড়িয়ে জানতে পারাও তো এক প্রাপ্তি।


সৈয়দ আনোয়ারা হক এই পরিসরে আমাকে টেনে এনেছেন। রাজশাহীর এক আলোচনাসভার শেষে যখন প্রীতি আর ভালোবাসায় ‘ব্যবহৃতা’ শীর্ষক সমীক্ষা উপন্যাসটি আমার স্ত্রী তানিয়া আর আমাকে উপহার দিলেন, বিস্মিত হইনি। যেহেতু ইতিমধ্যেই তাঁর স্বভাবজ উষ্ণতায় আমরা যুগবৎ প্লাবিত, ঋদ্ধ, আপনজন। বইটি পাঠ করার পর, এই অকিঞ্চিৎকর বেঁচে থাকাটা কি তারপর একটু তাৎপর্যমন্ডিত হয়ে উঠল না সে পাঠে! ইতিহাসে, ধর্মে, এমন কি বর্তমানেও কি আমরা জেনে যাচ্ছি না, পুরুষের অন্যতম অস্থাবর সম্পত্তি নারী! যে স্থানে সে নারী ঘটনাক্রমে স্থাপিত, যে গোষ্ঠী বা পরিবারে সে প্রণেত্রী (!) রূপে পরিচিত হতে চলেছে, সেখানেও সে কি আদপে অস্থাবর সম্পত্তির অধিক কিছু! বংশধরের অস্তিত্বের গুরুত্বকে প্রাধান্য দিয়ে বিবাহপ্রথাকে সামাজিক মান্যতা দেওয়ার মধ্যে দিয়ে নারীকে সংক্ষিপ্ত করে ফেলার যে প্রয়াস পুরুষের, এ সব সন্দেশ পুরুষশাসিত সমাজে বেঁচে থাকা আমার ভিতর কি গোপনে সব সময়ই ক্রিয়াশীল থাকে না! Ecclesiastes-এর সেই চরম বিভ্রান্তিকর উক্তি, “...এবং মৃত্যুর চাইতেও তিক্ত দেখি নারীকে, যাঁর হৃদয় হচ্ছে ফাঁদ আর জাল, এবং তাঁর হাতগুলি বেড়ী...”, সেই তাঁদের নিয়ে, এমন কি তাঁদের মধ্যে অধিকতর ব্যবহৃতা, অধিকতর গোপন অথচ প্রয়োজনীয়, পরিত্যক্তা অথচ নিয়ত শোষিতা সেই নারীদের বিষয়ে সৈয়দ আনোয়ারা হক যখন কিছু কালাতিপাত করেন, সে বিবরণ তুলে আনেন নির্দ্বিধায় শব্দে শব্দে, অভিভূত হই। নশ্বরতাকে আরও একবার ধন্যবাদ দিই, এই দাহ সহ্যের সময়কাল অসীম নয়। নতুবা এই আলোছায়ার জীবন থেকে দূরেই থাকতাম, সেই জীবন যে মূল ধারার সঙ্গে বিলীন হতে স্বতই উদগ্রীব, অথচ হায়, নানান তত্ত্বে বা ক্ষমতার কূটকৌশলে দেশকাল নির্বিশেষে প্রান্তবাসিনী। তাঁদের নিজেদের একলা ঘরে মর্যাদা নেই, মানবিক বিকাশের সমস্ত পথ তাঁদের জন্য রুদ্ধ অথচ প্রগতির রথের চাকায় তাঁরা প্রতিক্ষণে ব্যবহৃতা। পুজোমন্ডপে তাঁদের দুয়ারের মাটি অতি গুরুত্ব পায়, অথচ সমাজের কোনো স্তরেই তাঁরা স্বীকৃত নন, তাঁরা নরকের দ্বার মাত্র। তথাকথিত প্রগতির রথকে সচল রাখতে তাঁদের যতই অবদান থাকুক না কেন, সে জঙ্গম ছবিতে তাঁরা এতটুকুও প্রকাশিত নন।

এতসব চিড়বিড়ে কথা তো ভুলেই থাকতে চাই। অন্তত চাইতাম। কে হায় হৃদয় খুঁড়ে...! বেশ তো আছি রসেবশে, স্নেহে অথবা যৌনতায়! কিন্তু সৈয়দ আনোয়ারা হক দিলেন না সে স্বস্তিটুকু। কী ভাবে তিনি সক্ষম হলেন? কী তাঁর অভিপ্রায়? সে কি কেবল মধ্যবিত্তের ভদ্রাসনটুকু সামান্য নাড়িয়ে দেওয়ার জন্য? নাকি ওই সব অন্ত্যবাসিনীদের খুব নিকটে আমাদের টেনে নিয়ে যাওয়ার তাগিদে? কিংবা সে সব কিছুই নয়! তাঁদের নিয়ে আসা, তুলে আনা, একেবারে গৃহস্থের তক্‌তকে আড্ডাঘরে তাঁদের দাঁড় করিয়ে, আমাদের পুরুষদের হাতেগড়া নাড়ুর মতো সাধের সুপুষ্ট আলোবাতাসকে আরও সামান্য পূর্ণ করা! যেন বলা, এই দেখ এঁদের, এঁরা তোমারই পরিজন। এঁদের অস্বীকার করে তোমরা যে শুধু অসম্পূর্ণ হয়ে থাকছো তাই নয়, ভবিষ্যৎটিকেও ঠেলে দিচ্ছো গভীরতর অন্ধ কূপের দিকে। তোমরা পরিত্রাণ চাইছো, অথচ দেখ, সে পথ কতটাই না অপূর্ণ, খন্ড!

‘বাইরের মেয়ে’, ‘বেশ্যা’, ‘বারবণিতা’ কিংবা ‘যৌনকর্মী’, ‘পতিতা’, ‘আদিম শ্রমজীবী’ বা ‘ব্যবহৃতা’ –- যে শব্দেই এই আপাদমস্তক নারীদের অভিহিত করা হোক না কেন, তাঁরা ওই দুয়ারে দাঁড়ান অর্থাভাব, মেয়েদের সম্পর্কে আসভ্যতা প্রবাহিত ধারণা, ভোগবাদী মানসিকতা, পুরুষের প্রতারণা ইত্যাদি ইত্যাদির নিস্পেষণে। স্বভাবিক ভাবেই তাঁদের সামাজিক অবস্থান ভিন্ন হয়। যদিও উন্নতিশীল দেশসমূহের প্রান্তিক মানুষ, এমন কি যৌনকর্মীদের মধ্যে কাজ করে চলা একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা American Jewish World Service (AJWS)-এর প্রেসিডেন্ট রুথ মেসিঞ্জার-এর নিম্নোক্ত পর্যবেক্ষণ অনুধাবনযোগ্য। “...In some ways, these women are much like me: they work hard and they care about their kids. But our lives are radically different in one fundamental way. These women are denied the basic human rights I’ve always had: protection from violence, access to healthcare, and the opportunity to earn a living however I choose. অন্য দিকে এঁদের নিয়ে কিছু ক্রুদ্ধ শব্দ, মরমী প্রতিবেদন, তথ্যভিত্তিক বিশ্লেষণ ইতিপূর্বে পাঠের সুযোগ আমার হয়েছিল। বিচলিত হয়েছি, ক্ষুব্ধ হয়েছি, আর এক ধরনের হতাশা মাথা নেড়েছে সর্বক্ষণ। কোনো পথ, নিরসনের, ওই যাপনের, খুঁজে পাইনি। আজ বলতে দ্বিধা নেই, তাঁদের অবিরাম আদিম শ্রমের ক্লান্তি ক্লেদ মালিন্য ধুয়ে যাবে চিরকালের জন্য, পৃথিবীর তাবৎ সামাজিক মানচিত্রে তাঁরা সমস্তরে উঠে আসবেন, এমন অপরূপ গোসলের খোঁজ তাঁরা কোনোদিন পাবেন না, এমন প্রতীতি হয়েছে।


তাহলে ‘ব্যবহৃতা’র মতো একটি সমীক্ষা উপন্যাসের দু’ মলাটের মধ্যে বিধৃত অন্ধ সে জীবনের যে চালচিত্র, সেখানে কেন বারবার বিচরণ করি! কোনো উদ্ধারের প্রকল্প কি আশা করেছিলাম সেই ১৪৪ পৃষ্ঠার শব্দে শব্দে? দু’এক কথায় চেষ্টা করা যাক সেই কারণসমূহ কিছু জানানোর।

১) আদ্যন্ত মরমী পর্যবেক্ষণ। একজন বেশ্যার এই ভারতীয় উপমহাদেশে সাজপোশাক বা প্রসাধন কেমন, তার একটা নিখুঁত পোট্রেট তিনি তুলে ধরতে পারেন, “...চোখের গাঢ় কাজল একেবারে লেপ্টে চোখের খোড়ল ঢেকে ফেলেছে। মুখের টকটকে লাল লিপিস্টিক ঠোঁট ছাড়িয়ে ছড়িয়ে পড়েছে দু’পাশে। গালে গোলাপি রুজ দুই গাল জুড়ে। নাকে চকচকে নকল সোনার নাকফুল নাকের ফাতনা প্রায় আবৃত করে ফেলেছে। রুক্ষ চুল বুকের দু’পাশে ছড়ানো। পরনে টকটকে হলুদ শাড়ি। গলায় নকল সোনার হার। শ্যামলা পায়ে সোনালি ফিতের স্যান্ডেল...”। যার সামনে দাঁড়িয়ে তিনি আবার অনায়াসে ভাবতে পারেন, “ওদের তো মা বলে সম্বোধন করা উচিৎ”।

২) মধ্যবিত্ত সীমাবদ্ধতার অসংকোচ প্রকাশ, “...যে বিছানায় শরীর বেচাকেনা হয়, সেখানে বসতে আমার শরীর কেমন ঘিনঘিন করতে লাগলো”। অথবা “...অতিশয় ভয়ে সেই নলে মুখ রেখে আমি পেপসিতে চুমুক দিলাম”। কিংবা, “...একজন যৌনকর্মীর এরকম আলিঙ্গন আমার ভালো লাগেনি”।

৩) সামাজিক লাম্পট্যের উন্মোচন, “...একজন সতী নারীর আত্মহত্যার চেয়ে একজন চরিত্রহীন মানুষের এ সমাজে বেশি প্রয়োজন”। আবার, “...নারীর মর্যাদা এবং সতীত্ব নিয়ে তাদের ভাবার কোনো সময় নেই। শুধু তাদের ঘরের নিজের নিজের বউ এবং মেয়েগুলো সতী থাকলেই হলো। তাদের সতীচ্ছেদ করবে পৃথিবীর একজন মাত্র পুরুষ, ব্যস...”।

৪) আন্তরিক উচ্চারণ, “...যখন তার নিজের শরীর লেপ্টে আছে ফেলে আসা শৈশব, ফেলে আসা খেলার সাথীরা, দুধের গন্ধ লেগে আছে তাদের কচি মুখে। নরক তাহলে কাকে বলে?” কিংবা তাঁর ভাবনা, এই মেয়েটি “...কি একজন যৌনকর্মী নাকি একজন মা? নাকি এই দুই মিলিয়েই সে একজন নারী?”

৫) উত্তর প্রজন্মের জন্য আর্থসামাজিক প্রেক্ষিতে একজন রেসিডেন্স বেইসড্‌ পতিতার কথাগুলি আবার মনে করতে পারি, যেখানে তিনি অক্লেশে বলছেন, “...আমাদের ক্লায়েন্টদের প্রায় প্রত্যেকে, বলতে গেলে পঁচানব্বই ভাগই বিবাহিত। বাড়িতে তাদের স্ত্রীরা আছেন। তাদের আমরা ঝুঁকিহীন জীবনযাপনে সাহায্য করছি। তাদের এসটিডি আর এইডস্‌-এর হাত থেকে বাঁচিয়ে রাখছি। এ সাহায্য চোখে দেখা যায় না বটে, কিন্তু এটি একটি বিশাল সাহায্য, দেশের স্ত্রীদের সুস্থ রাখার জন্য”। অথবা লেখিকার একান্ত উদ্বেগ, “...তাদের মনোজগতের ধসের সাথে কারও পরিচয় হচ্ছে না। তারা নিজেদের ভেতর নিজেরাই মরে যাচ্ছে। তারা বড় হওয়ার সাথে সাথে কীটদষ্ট হয়ে যাচ্ছে”।

৬) প্রবল কনজিউমারিসম্‌-এর বিরুদ্ধে সোজাসাপটা কথা, “...এই যে দেশব্যাপী বিজ্ঞাপনের ছড়াছড়ি, এটাও কি একটা যৌনব্যবসা নয়? ...যেখানে পণ্যদ্রব্য আর নারীকে এক পাতে কেনা হচ্ছে”। অথবা, একজন বাইরের মেয়ের ক্ষুব্ধ উচ্চারণ, “...আমরা হচ্ছি অসামাজিক পণ্য”।

৭) অতিজীবিত এক দার্শনিক প্রশ্ন, “...না কি এসব কিছু না, সব কিছু একটা ক্ষমতায়নের বলয়ের ভেতরে ঘূর্ণিত হচ্ছে?”

৮) এবং ওই আসভ্যতা বুনো জলের প্রবল স্রোতের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে একজন গবেষকের অপূর্ব মানবিক ক্ষেদ, “...এখন আমার বুকের ভেতরে যেন সেই ফারাও-এর বুকের ফাটল! অসংখ্য অজস্র ফাটল। আর সেই ফাটলের ভেতর দিয়ে যেন পায়রার মতোন একেকটা জিনিস উড়াল দিয়ে বেড়িয়ে যাচ্ছে! বেড়িয়ে যাচ্ছে মানুষের প্রতি আমার আশা, আমার বিশ্বাস, আমার শ্রদ্ধা, আমার প্রেম, আমার আস্থা। তারা সব বেড়িয়ে যাচ্ছে আর হারিয়ে যাচ্ছে দিগন্তে। ...পুরুষের প্রতি, যে পুরুষ আমার বাবা, আমার স্বামী, আমার পুত্র, তাদের প্রতি কেন এরকম মনোভাব আমার হচ্ছে!” সসাগরা এই ধরণীর একজন নারীর এই অনুভবে বিস্তৃত সামাজিক জীবনের অপর লিঙ্গ কি কোনোদিনই ভাবিত হবে না! উত্তরপৃথিবীতে তাহলে কি আমরা সবাই বেশ্যা (!) হয়ে যাব! অথবা এখন-ই তাই?

৯) পৃথিবীর প্রায় সমস্ত প্রান্তে, এই বারবণিতারা আইনরক্ষকের হাতে গ্রেপ্তার হচ্ছেন, তাঁদের জরিমানা হচ্ছে; এমন কি সমাজসভ্যতাকে পরিচ্ছন্ন রাখার অজুহাতে কাজের ক্ষেত্র থেকে, বাড়ি থেকে তাঁদের উচ্ছেদ করা হচ্ছে। উন্নত বা উন্নতশীল দেশে অসম নীতির কারণে আইনরক্ষকদের লম্বা হাতে কত অনায়াসেই না তাঁরা বিভিন্ন সময়ে নিগৃহীতা হতে থাকেন, ধর্ষিত হন, এমন কি তাঁদের ব্যক্তিগত জিনিসপ্ত্র কন্ডোমসমেত বাজেয়াপ্ত করা হয়। একজন শ্রমজীবী, সভ্যতার মোড়কে ঢাকা একটা সমাজে কেন এমন ব্যবহার পাবেন, ‘ব্যবহৃতা’ এই জরুরি প্রশ্নটিকেও রেখেছেন আমাদের সামনে। একজন দক্ষ সমাজকর্মীর কাছে তাইল্যান্ড-এর বারবণিতার উচ্চারণ দেশনির্বিশেষে সমস্ত যৌনকর্মীর, “Nothing about us, without us.” “If we intend to develop policies that are fair and just, we must collaborate with sex workers’ themselves to afford them the dignity that they and all of us deserve. It’s time for sex workers’ rights to be an integrated part of the global human rights agenda.” তাঁরা Freedom of movement to migrate, Freedom to access quality health services, Freedom to work and choose one’s occupation, Freedom to associate and unionize, Freedom to be protected by the law, Freedom from abuse and violence, Freedom from stigma and discrimination কেন পাবেন না, এই প্রশ্ন সামান্য অন্যভাবে সৈয়দ আনোয়ারা হক-ও উত্থাপন করেছেন। এখানেই তিনি সার্থক, হয়তো অনন্যাও। প্রস্তাবটি শুধু যৌনকর্মীদের সংগঠনসমূহের কাছে নয়, এমন কী তাবৎ নারীবাদী নেত্রীদের কাছেও নয়, বরং এই সরল জিজ্ঞাসা সমস্ত পতিতাদের তরফে সভ্য শিক্ষিত মরমী মানুষের কাছে, অতীব শক্তিমান রাষ্ট্রের কাছে। এ নিয়ে ভাবার প্রয়োজন এসেছে।

বইটির প্রচ্ছদশিল্পীকে হার্দ্য অভিনন্দন, একটি চমৎকার প্রচ্ছদ পাঠকদের উপহার দেওয়ার জন্য। ‘শুদ্ধস্বর’ এমন একটি প্রকাশ-এর জন্য গর্ব বোধ করতেই পারেন।

[এই সমীক্ষা উপন্যাসটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল গত ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে। প্রকাশক : শুদ্ধস্বর, ৯১ আজিজ সুপার মার্কেট, (৩য় তলা), শাহবাগ, ঢাকা, বাংলাদেশ। বইটির বিনিময় মূল্য ২২৫ টাকা। প্রচ্ছদশিল্পী : শিবুকুমার শীল।]

0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন