কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / চতুর্থ সংখ্যা / ১২৪

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / চতুর্থ সংখ্যা / ১২৪

শুক্রবার, ২ আগস্ট, ২০২৪

শিবাংশু দে

 

একজন শিকলছেঁড়া লেখকের খোঁজে 



আর ছ-মাস  পর তাঁর জন্মের একশো বছর পূর্ণ হবে। বাঙালি 'জন্মশতবর্ষ'কে খুব মূল্য দেয়। কিছু দিনের জন্য হলেও মানুষের স্মৃতিতে সেই সব স্রষ্টারা আবার ফিরে আসেন, প্রাসঙ্গিকতার দাবি নিয়ে। যদিও স্মৃতির টান নিতান্ত তাৎক্ষণিক। তবু যাঁরা আগুনে পোড় খেয়ে নিজস্ব স্বরকে মজবুত করেছিলেন, সেই সব শিল্পীকে স্মৃতির মহাফেজখানায় আবার নির্বাসিত করে দেওয়া যায় না। এই শব্দশিল্পীর  ছিলো সেই সব বিরল ক্ষমতার মানুষদের তালিকায় নিজের নাম মুদ্রিত করে দেওয়ার এলেম।

বছর কুড়ি আগে এক আড্ডায় কথা চলছিলো সাম্প্রতিক কালের বাংলা লেখকদের হাল হকিকৎ নিয়ে। প্রশ্নটি উঠতে পারে 'সাম্প্রতিক' বলতে ঠিক কী বোঝায়? 'সাহিত্যকাল' কীভাবে নিরূপিত হয়? একসময় 'রবীন্দ্রনাথ' ছিলেন একটি 'স্তম্ভ', যেখান থেকে ফিলমি নায়কের ভাষায়, 'লাইন' শুরু হয়।  পাঁচ-ছয় দশক থেকে গোলপোস্ট পিছিয়ে তিন 'বাঁড়ুজ্যে'র এলাকায় চলে যায়। তাঁদের সমান্তরালে ছিলেন পরবর্তী আরও চারজন। সুবোধ ঘোষ, বিমল কর, নরেন্দ্রনাথ মিত্র ও নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়। এর বাইরে যে বাংলা আখ্যানের অন্য ভুবনও থাকতে পারে, গরিষ্ঠ পাঠকরা সে রকম ভাবতে পারতেন না। বিপুল প্রভাব ছিলো তাঁদের। প্রসঙ্গত এঁরা সবাই বাংলাগদ্যের ইতিহাসে প্রধান সেনানায়কদের মধ্যে গণ্য হন। এই রকম একটা সময়ে 'লিখতে' এসেছিলেন তিনি। তাঁর একটা প্রমাণ করার জেদ ছিলো। এই সব গোলপোস্ট পেরিয়ে এসে নতুন কিছু লেখার। তিনি এঁদের প্রতি শ্রদ্ধাবান ছিলেন। কিন্তু  কখনও 'অনুসরণ' করেননি। বাইশ বছর বয়সে লিখেছিলেন 'আদাব'। তখনও দেশ স্বাধীন হয়নি। 'আদাব' থেকে 'দেখি নাই ফিরে' পর্যন্ত যে যাত্রাপথ, তার বিস্তৃতি ও গভীরতা নিয়ে কোনও প্রশ্ন ওঠে না।  উত্তরসূরী বাংলা কথাকারদের থেকে ধারে ও ভারে তাঁর সৃষ্টির ফসলগুলি অনেক সময় এগিয়েই থাকে। অন্তত পিছিয়ে তো থাকে না কখনও। তবু বিভিন্ন বর্গের সাধারণ বাংলা পাঠক ও সাহিত্য উৎসাহীদের আলোচনায় তাঁর উপস্থিতি অপেক্ষাকৃতভাবে কমে যাচ্ছে কেন, তাই নিয়েই আমাদের আড্ডা চলছিলো সেদিন। তাঁর সময়কালের বিষয় বা ভাষাশৈলী কি প্রাসঙ্গিকতা হারিয়ে ফেলছে? গত শতকে পাঁচ থেকে আট দশকের বাংলা সৃজনশীল আখ্যান সাহিত্যে তাঁর দাপট ছিলো প্রশ্নাতীত। তবে কেন?

তাঁর সমসময়ের বিচারে তিনি ছিলেন ব্যতিক্রমী। ব্যক্তি ও লেখনজীবনে। এখন পিছু ফিরে দেখলে মনে হয়, তিনি হয়তো  সচেতনভাবে 'ব্যতিক্রমী' হতে চাননি। ভবিতব্যের টানেই তাঁর গতিপথ নানা বাঁক নিয়েছিলো, যা ঠিক মধ্যবিত্ত বাঙালির মানচিত্রে থাকে না। পনেরো বছর বয়স থেকেই তিনি বাঁধা গতের জীবনযাপন থেকে অব্যাহতি নেন। ইশকুলের লেখাপড়া থেকে ইস্তফা দিয়ে জীবনের পাঠশালায় ভর্তি হয়ে যান। ১৯৩৯ থেকে ১৯৪৬ পর্যন্ত চলে তাঁর জীবনের আসল পাঠ। স্বঘোষিত গুরু ম্যাক্সিম গর্কির মতো তিনিও নিজের ব্যক্তিজীবনকে তাঁর শিল্পের ক্যানভাস করে তুলতে চেয়েছিলেন। তাঁর আগে শরৎচন্দ্র এবং নজরুল ছাড়া আর কোনও বাঙালিকে এই 'দুঃসাহস' করতে দেখা যায়নি। বিশদ বিচার করতে গেলে এই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি হয়তো দুই পূর্বসূরিকেও অতিক্রম করে গিয়েছিলেন। গান্ধিজির মতো 'আমার জীবনই আমার বাণী' ভাবতে পারার হিম্মত বাঙালি লেখকদের মধ্যে এক বিরল দৃষ্টান্ত। এই গোত্রের সৃজনশীল মানুষদের মধ্যেও তিনি এক অগ্রগণ্য শিল্পী।

দশক্লাসে পড়ার সময় তাঁর বন্ধুর দিদিকে বিবাহ করে গৃহত্যাগ করেন। দিদি ছিলেন বয়সে চার বছরের বড়ো এবং তিনি সে সময় বিবাহিত স্বামীসঙ্গ ত্যাগ করেছিলেন। যদিও সেই বিচ্ছেদে কোনও আইনি মোহর পড়েনি। তখনও তাঁর বয়স আঠেরো হয়নি। উনিশ থেকে চব্বিশ বছর বয়সের মধ্যে তাঁর চার সন্তান জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এর মধ্যে অবিভক্ত কম্যুনিস্ট পার্টিতে সস্ত্রীক যোগদান। সক্রিয় অংশগ্রহণ। হাজতবাস। স্রেফ বেঁচে থাকার জন্য অসম্ভব যুদ্ধ। পোল্ট্রি, চটকল, নানা ধরনের ঠিকে কাজ, স্ত্রীর সেলাইকল, গানের টিউশনি, পার্টির সঙ্গে বিচ্ছেদ তৎসহ কারাবাস ইত্যাদি চলেছিলো  ১৯৫১ পর্যন্ত। সে বছর কারামুক্ত হয়ে লেখালেখিকে পুরোদস্তুর পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। তখনও পর্যন্ত বাংলাভাষায় পুরোপুরি 'পেশাদার' লেখক হিসেবে আমরা শুধু মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানতাম। পেশাদার লেখক হিসেবে সমরেশ তাঁর পূর্বসূরির থেকে বিন্যস্ত স্বভাবের ছিলেন। তাঁর প্রথম উপন্যাস 'উত্তরঙ্গ' একান্ন সালে, দ্বিতীয় 'নয়নপুরের মাটি' বাহান্ন সালে এবং তৃতীয় উপন্যাস  'বি টি রোডের ধারে' তিপ্পান্ন সালে প্রকাশিত হয়েছিলো। তিপ্পান্ন সালেই 'উত্তরঙ্গ' উপন্যাসের দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশ পাবার পর সমরেশ 'তিন-চারশো' টাকা রয়্যালটি পেয়েছিলেন। পেশাদার লেখক হিসেবে ওটাই ছিলো তাঁর প্রথম 'বড়ো' রোজগার। 'বি টি রোডের ধারে'  উপন্যাসটি প্রসঙ্গে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন,

'...তখনকার খুব উচ্চাঙ্গ সাহিত্যের প্রকাশক সিগনেট প্রেসের দিলীপকুমার গুপ্ত 'বি টি রোডের ধারে' উপন্যাসের লেখককে সোনার কলম পুরস্কার দেবার কথা ঘোষণা করলেন, তারাশঙ্কর থেকে নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় পর্যন্ত খ্যাতনামা লেখকেরা সাদর অভ্যর্থনা জানালেন। আমাদের মতন কফিহাউসের ছেলে ছোকরারা তাঁকে বরণ করে নিয়েছি আরও আগেই।'

আমার সমরেশ বসু পড়তে শুরু করা সেই  'বি টি রোডের ধারে' উপন্যাসটি দিয়েই। তবে সে পাঠের সময়কাল ছিলো বইটি প্রকাশের বিশ বছর পরে। ক্রমশ সমরেশ বসুর উল্লেখযোগ্য সমস্ত লেখাই অবশ্য পাঠ্য হয়ে উঠেছিলো।

'লেখক' হিসেবে সমরেশ জনপ্রিয়তার স্বাদ প্রথম পেয়েছিলেন 'কালকূট' ছদ্মনামে 'অমৃতকুম্ভের সন্ধানে' প্রকাশিত হবার পর। সাগরময় ঘোষ তাঁকে আনন্দবাজারের পক্ষ থেকে ১৯৫৪ সালে কুম্ভমেলা নিয়ে লেখার জন্য এলাহাবাদ পাঠিয়েছিলেন। তারই বর্ণনা এই গ্রন্থটি। সংখ্যাগুরু বাঙালি পাঠকের সমরেশের লেখার সঙ্গে প্রথম পরিচয় এই রচনাটি পড়ে।

একজন কথাকার হিসেবে সমরেশ বসুর মাহাত্ম্য তাঁর বিষয়ের ব্যাপ্তি আর আপাতসরল ভাষার 'বিটুইন দ্য লাইন' মাত্রাগুলির জন্য। ১৯৬৫ সালে শারদীয় 'দেশ' পত্রিকায় তাঁর 'বিবর' নামের উপন্যাসটি প্রকাশিত হয়েছিলো। বাংলা ভাষায় এমন 'বিতর্কিত' রচনা তার আগে আর দেখা যায়নি। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় লিখেছিলেন, '...'বিবর' প্রকাশিত হবার পর সন্তোষকুমার ঘোষ একটা চিঠি লিখে সেই উপন্যাসের অজস্র প্রশংসা করে জানান যে, তাঁর মতে বিবর দশটি শ্রেষ্ঠ বাংলা উপন্যাসের অন্যতম। প্রায় সমসাময়িক কোনো লেখক সম্পর্কে অপর প্রতিষ্ঠিত কোনো লেখকের এরকম লিখিত উচ্ছ্বাস সাহিত্যের ইতিহাসে বিরল। তারপরেই 'বিবর'কে কেন্দ্র করে বিতর্কের ঝড় ওঠে। পরের বছর ‘প্রজাপতি’ প্রকাশিত হলে সেই বিতর্ক অন্যদিকে মোড় নেয়। সাহিত্যে শ্লীল-অশ্লীল বিষয়ে আলোচনা-সভা বসে বহু জায়গায়, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, রবীন্দ্রভারতী, এবং অন্যত্র। কেন জানি না সেই সব সভাতে আমারও ডাক পড়তে লাগলো, সেই সূত্রেই তাঁর সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত পরিচয়টা জমে ওঠে।'

লোকে বিস্ময় মানতো একই লেখক কীভাবে 'অমৃতকুম্ভের সন্ধানে', 'গঙ্গা'-র সঙ্গে 'বিবর', 'প্রজাপতি' লিখতে পারেন? 'প্রজাপতি' উপন্যাসের বিরুদ্ধে ১৯৬৮ থেকে ১৯৮৫ পর্যন্ত দীর্ঘকাল আইনি মামলা মোকদ্দমা চলেছিলো। বুদ্ধদেব বসু, নরেশ গুহ সমরেশের সমর্থনে দ্ব্যর্থহীন সওয়াল করা সত্ত্বেও হাইকোর্টে লেখকের শাস্তি বহাল ছিলো। শেষে  মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তিনি বেকসুর অব্যাহতি পান।

আমাদের শহর জামশেদপুরে বঙ্গসংস্কৃতির অন্যতম অভিভাবক ছিলেন ডাক্তার বিষ্ণু মুখোপাধ্যায়। আমার পিতৃদেবের কিশোরকালের বন্ধু এবং ওই শহরে বঙ্গীয় সংস্কৃতির মুখ হিসেবে সুপরিচিত বিষ্ণুদা ছিলেন আমারও অভিভাবক। কোনও একদিন তাঁর সঙ্গে আমার জোর আলোচনা হয়েছিলো সমরেশের 'মহাকালের রথের ঘোড়া' (১৯৭৭) এবং ‘শিকলছেঁড়া হাতের খোঁজে' (১৯৮৪) উপন্যাস দুটি প্রসঙ্গে। তাঁর মনে ছিলো। ১৯৮৪-র শেষদিকে বিষ্ণুদা সমরেশকে জামশেদপুরে একটি  সাহিত্য সম্মেলনে আমন্ত্রণ করে নিয়ে আসেন। অবিভক্ত কম্যুনিস্ট পার্টির পুরনো কমরেড হিসেবে ওঁদের মধ্যে বেশ হৃদ্য সম্পর্ক ছিলো। সেবার প্রথম দিনের সান্ধ্য অনুষ্ঠানে সমরেশ শ্রোতাদের উদ্দেশে এক তরফা ভাষণ দিয়েছিলেন। বিষয়, যদ্দূর মনে পড়ছে, মানুষের দৈনন্দিন জীবনে সাহিত্যের প্রাসঙ্গিকতা। বেশ গুছিয়ে বলেছিলেন প্রায় পঁয়তাল্লিশ মিনিট। পরের দিন রবিবার প্রভাতী অনুষ্ঠানে বিষয় ছিলো সমরেশ বসুর সাহিত্য ও প্রাসঙ্গিক আলোচনা। বিষ্ণুদা আমাকে আদেশ করেন  সমরেশের লেখা নিয়ে তাঁর ও আমার মধ্যে আগের দিনের আলোচনাটি  আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে।  'মহাকালের রথের ঘোড়া' ও 'শিকলছেঁড়া হাতের খোঁজে' উপন্যাস দুটি ভিত্তি করে সমরেশ বসুর উপস্থিতিতে  তাঁর মূল্যায়ণ করার দায়িত্ব আমার স্কন্ধলগ্ন হয়। আমার শহরে সেই সময় পঞ্চাশ থেকে সত্তর দশকের আগুনখেকো বাঙালি মেধাবান মানুষরা একজন কনিষ্ঠ কমরেড হিসেবে আমাকে স্নেহ করতেন। আমার পিতৃদেব সেই সব অগ্রজদের কাছে শ্রদ্ধেয় হলেও তাঁর বৃত্ত ছিলো আলাদা। বিষ্ণুদার আদেশে সমরেশকে বিষয় করে, তাঁর উপস্থিতিতে কিছু বলবো, এই খবরটি তাঁদের বেশ কৌতুহলী করেছিলো। তাঁদের অনেকেই এসেছিলেন শ্রোতা হয়ে। সভা পরিচালনার দায়িত্বে বাবা থাকলেও 'সমরেশ' বিষয়ক  আলোচনাটির সূত্রধার ছিলেন স্বয়ং বিষ্ণুদা। মনে আছে, বলার জন্য আহ্বান করার আগে সমরেশের প্রতি তিনি আমার প্রসঙ্গে বলেন 'শিবাংশুর পড়াশোনা বিস্তৃত এবং জিহ্বা শানিত।' লেখক সস্মিত মুখে প্ররোচনা দিয়েছিলেন, মনে আছে। আমি কী বলেছিলুম তার সবটাই ফুলেল ছিলো না অবশ্যই। কাঁটা তো থাকবেই। প্রত্যুত্তরে সমরেশ নিখুঁত বল-প্লেয়ারের মতো কাঁটাগুলি কাটিয়ে গোলপোস্টের কাছে পৌঁছে গিয়েছিলেন। পরবর্তী কালে ব্যক্তি ও কথাকার সমরেশ বসুর নিবিড়তর সন্ধান করতে গিয়ে সেকালের এসব ছেলেমানুষি হাস্যকর মনে হয়েছিলো।

ছবি দুটির প্রথমটিতে সান্ধ্য অনুষ্ঠানে মঞ্চে আসীন সমরেশ বসু, আমার পিতৃদেব এবং কবি গোপালহরি বন্দ্যোপাধ্যায়। দ্বিতীয়টি পরের দিন সকালে আলোচনা সভার ছবি। বাঁদিক থেকে ডাক্তার অজিতকুমার বাগচি, বিষ্ণু মুখোপাধ্যায় এবং সত্যেন্দ্র দে। ছবিটির মধ্যে একটি মজা রয়েছে। যখন বলছিলুম,  আমার পিতৃদেব একটু উৎকণ্ঠা নিয়ে শুনছিলেন। কারণ তিনি জানতেন তাঁর পুত্র সত্য 'অপ্রিয়' হলেও বলে ফেলতে দ্বিধা করে না। একজন আদ্যন্ত সুভদ্র মানুষ হিসেবে তিনি ভেবেছিলেন, বড়ো মাপের একজন  অতিথির মর্যাদায় দাগ পড়ে এমন  কোনও মন্তব্য যেন আমি না  করি। কিন্তু পাশেই বিষ্ণুদার মুখে  তাঁর স্বভাবসিদ্ধ মুচকি হাসিটি দেখা যাচ্ছে। বোঝা যাচ্ছে তিনি আমার বক্তব্যটি উপভোগ করছেন। সমরেশ বসেছিলেন আমার ঠিক সামনে। শ্রোতাদের সঙ্গে। তাই তাঁর ছবি এই ফ্রেমে নেই।

এদেশে জন্মের শতবর্ষ পালনের সময় বড়ো মাপের লেখকদের প্রতি পাঠকদের আগ্রহ নতুন করে জেগে ওঠে। প্রকাশকদের উদ্যোগে তাঁদের বই  নতুন করে ছাপা শুরু হয়। সমরেশ বাংলাভাষার অরণ্যে এক চিরজীবী হরিৎ বনস্পতি। 'শতবর্ষ'-এর জন্য তাঁর নতুন করে কোনও মোড়ক প্রয়োজন হয় না।  নবপ্রজন্মের লেখক এবং পাঠকদের জন্য তিনি একটি বাতিঘর। নতুন সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে সন্ধান করা আমাদের সমুজ্জ্বল মানসিকতার নিদর্শন হয়ে উঠতে পারে। একজন শিকলছেঁড়া লেখকের প্রতি এই প্রজন্মের পাঠকরা আরও আগ্রহী হয়ে উঠুন।  এই মুহূর্তে এটুকুই শুধু চাওয়ার।

 


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন