প্রতিবেশী সাহিত্য
সাবীর হাকা-র কবিতা
(অনুবাদ : বাণী চক্রবর্তী)
কবি পরিচিতি : সাবির হাকা ১৯৮৬
সালে ইরানের কারমানশাহতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন মজদুর। বহুতল নির্মাণের কাজে যুক্ত।
মজদুর কবিতা প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন। এখনও পর্যন্ত তাঁর দুটো কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর লেখা মর্মস্পর্শী
এবং শ্রমিক জীবনের ছায়া পড়েছে তাতে। তাঁর কবিতা
বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে।
আমার একমাত্র ভয়
আমার মৃত্যু হ'লে...
সব প্রিয় বইগুলো সাথে নিয়ে যাবো।
কবরের ঘরখানা ভরে দেবো প্রিয় এবং
ভালোবাসার মানুষদের ছবি সাজিয়ে!
আমার নতুন আবাসে
ভয় ও ভবিষ্যতের কোনো ঘর নেই!
শুয়ে থাকবো... একটা সিগারেট জ্বালাবো,
এবং কাঁদবো সেইসব নারীদের স্মরণ করে
যাদের আলিঙ্গন করতে চেয়েছিলাম!
এতো আনন্দের মধ্যেও
একটা ভয় থেকেই যাবে!
কোনো এক প্রস্ফুটিত ভোরে
কেউ একজন কাঁধ নাড়িয়ে বলবে
"ওঠ সাবীর কাজে বেরুতে হবে"!
বিশ্বাস
আমার বাবা মজদুর ছিলো…
ইশ্বরে অসীম বিশ্বাসী মানুষ!
যখন সে নমাজ পড়তো
হাত প্রসারিত করে
আল্লাহ তার হাত দেখে
নিশ্চয়ই লজ্জা পেয়ে যেতো!
রাজনীতি
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাটি
ঘটে যায় মসৃণ সরলতার সাথে!
খুবই সহজ ব্যাপার…
তাই নয় কি?
শ্রমজীবী মানুষগুলো
রাজনৈতিক কর্মীতে বদলে গেলো!
ভার উত্তোলনের ক্রেন হয়ে গেল
ফাঁসির মঞ্চ!
ঈশ্বর
ঈশ্বরও মনে হয় এক মজদুর!
সে বিশালকায় পাথরের চেয়েও
বড় পাথর।
তাই দিনের শেষে তার চোখ
রক্তিম হয়ে যায়…
আর রাতে দেখা যায় তার
জামায় অসংখ্য ছিদ্র!
বন্ধুত্ব
ঈশ্বর আমার বন্ধু নয়
এর কারণ অনেক পুরনো,
সুদূর অতীতের।
যখন আমরা পরিবারের
ছয়জন এক সংকীর্ণ
ভাড়াবাড়িতে থাকতাম…
তার কাছে বিশাল বড় বাড়ি ছিলো
যেখানে সে একলাই থাকতো!
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন