কবিতার কালিমাটি ১১৮ |
উর্বশী
ধ্রুব ছিল শুধু অনিশ্চিতি?
অঞ্জলি ভরে কি শুধু দিয়েছিলে
ফাঁকি?
মানুষের
পরিচয়হীন,
মানুষীর
পরিচয়হীন,
নামহারা অস্তিত্ব আমার
ব্যবহৃত
হয়ে গেছে
এই
গ্লানি
ভুলতে
পারি না।
ধ্রুব
ছিল শুধু অনিশ্চিতি!
বিন্দু বিন্দু ঝরে গেছে সঘন
বিস্ময়,
অনাবিল
ঊষা তাই
উর্বশী হয়ে যায়-
প্রেমহীন
আসঙ্গভিখারী
দুই
হাতে মেখেছিল আলো,
শিশিরের
কান্না শোনেনি।
ভোরের
হাওয়ার মতো
স্নিগ্ধ
কোন অনুভব ছুঁয়েছিল মন?
জেনেছিলে কী বিষাদ
বৃষ্টির
ধারায় নেমে
স্পর্শ
করে মাটির আকুতি?
কেন
সূর্যমুখী
আকণ্ঠ ভরে নেয় রৌদ্রের দাহ?
জানুহীন দ্বিচারী পৌরুষ
জানে শুধু সুচারু সম্ভোগ-
স্বর্গের স্বেচ্ছাচার,
পার্থের কুণ্ঠাভরা গ্লানি,
অপমানে ভরে দেয় উর্বশীর ছড়ান আঁচল।
আনন্দ দিয়েছিল তাই
নাম তার রেখেছ প্রমদা!
মোহন
পৃথিবীটা তোমার–আমার
এবং
পাখির
এবং
ফুলেদের-
ভালোবাসার
মত কবোষ্ণ উজ্জ্বল সকাল
এবং
তীব্র গলানো সোনার মত পাপড়ি মেলা
আজকের
সূর্য;
পৃথিবী-
এই তো
দেখলাম তোমায়,
তুমিও
আমায়
কিছুতেই ভুলবে না জানি।
কর্কট
পায়ে পায়ে মৃত্যু হাঁটে
মৃত্যু গালে দিয়ে গেছে চুমো,
প্রতিদিন জেগে উঠি,
প্রতিরাত বলে যায়, ‘ঘুমো’।
ক্ষুধার্ত চাঁদ একা
গেয়ে যায় মৃত্যুর গান-
নক্ষত্ররাত বলে,
‘আমিও তো নই অনির্বাণ’!
পলে পলে বেঁচে থাকি,
প্রতিভোরে জন্ম নেয় প্রাণ-
বিকচ জবায় বাজে
জীবনের উদাত্ত আজান।
দিন ঢলে, রাত বাড়ে,
দিগন্তে খসে পড়ে তারা-
ক্ষয় হয়ে আসে আয়ু,
কানে বাজে মৃত্যুর ইশারা;
প্রতিদিনই জন্মদিন,
প্রতিরাত যেন মৃত্যুরাত-
প্রতিভোর নবজন্ম
মৃত্যুজয়ী, বাড়াই দু’হাত!
বারে বারে জন্ম নিই,
বেঁচে থাকি আশার কুহকে-
বিন্দু বিন্দু পরমায়ু
জড়ো করি রুপোলি তবকে,
দিন গুণে, পল গুণে,
ধারাপাতে জেনে নেই ফের-
কতটুকু পার হল,
আর কত প’ড়ে আছে ঢের?
পৃথিবীটা পাক খায়,
সূর্যের অয়ন চলন-
মৃত্যুর ছায়া মাপি
মুঠো হাতে আঁকড়ে জীবন;
ঋতু, মাস, বছরের
গুণতিতে নেই কোন ফাঁকি-
পেরোতে পাঁচের গাঁট
আর ক’টা কেমো আছে বাকি?
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন