কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

শুক্রবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০২১

দেবাশিস ভট্টাচার্য

 

কবিতার কালিমাটি ১০৮


পরের কবিতা

 

অনেকদিন পর এলে কবিতায় তত্ত্বজিজ্ঞাসা

মহিমমণ্ডিত স্থান নেয়

অনাস্বাদিত ভাববিগ্রহ

না-দেখা স্বপ্নের কায়া অস্থির

অনেক পরের গাথা

একেবারে নিজস্ব রচনা মনে হয় ভ্রমে-বিভ্রমে

 

পতনের ঢেউ খেলানো শিল্পায়াস

পিষ্ট বেদনা থেকে মুক্তির কথা

উচ্চারিত বাক্যবাণ ও অগ্নিলগ্ন ঘূণলাগা জিহ্বা

লবণজলের ধারা, সহস্রার ঘেঁষা নিমফুল।

 

আয়নায় মুখ

 

মুখ থুবড়ে পড়ছে স্বয়ম্বর-কথা

মুখ তুলে দেখছে নববধূ

আয়নায় ভেঙে পড়ছে চাঁদ একা

আঁকাবাঁকা তির্যক ছায়া-ক্রস

 

মুখমোহিনী লতানো উপচার

আমার ঘরে চতুষ্কোণ ব্যারিকেড

বাহারি পাতা অবুঝ এলো ফুল

মুড়কি শাদা পথের কাদা দই

 

মুখ আর আঙুলের প্র্যাকটিস

মিলে আছে জঙ্ঘা কুয়াশাসুখ

নড়ে ওঠা এলো মাতাল বুক

শিরদাঁড়া ভেঙে উঠছে অতি ধীর।

 

চিড়

 

ঠাণ্ডা পাঁকের ভেতর আমগ্ন হয়ে যাচ্ছি

নিস্তার নেই কোনো

বেশি নড়াচড়া করে লাভ নেই আর

আরো শীতল বাষ্পাকুলতায় হারাতে চাই না

এর অর্থ--বিপরীত ইচ্ছা খুব সক্রিয়

ঢলে পড়া থেকে ক্রমশ টেনে তুলছে সেই

এ শাদা কাগজ চির কূট

ছক কেটে মৃত্যুপথযাত্রী রবিবার হাতে তুলে নি-ই

 

যেমন চেয়েছি ঠিক সেভাবেই

শূন্য থেকে শূন্যাকারে

অপরূপ জান্তব ভস্ম ও গীতধ্বনি

ফেরি হয়ে দূর মফঃস্বলে বিক্রিত চাঁই

পাথরের সম্পদ গুণে

নিষ্পাপ তেলের আগুনে মাথাটি বাঁচাই।

 

পাখি ও গান

 

পাখি গান গায় ডালপালা শুকিয়ে গেছে

হেমন্তের শৈত্যে জেগে থাকা বৃক্ষ উদাসীন

এলিয়েছে মন উত্তরের শুষ্ক হাওয়ায়

 

পাখি যখন গান গাইত এত বরফ ছিল না

কাছেই পাহাড় দেখে ভয় আসে

মহিরুহ শিশুগাছ ডালপালা বিছিয়ে দিয়েছে

 

পাখনা খসে পড়েছে পথে পথে

সকলেই বুঝতে পারে গানের লহর ছিল

ইন্দ্রিয় পরিচর্যার আনন্দাংশ আর নেই

 

পক্ষীদেহ বৃক্ষতলে বরফাচ্ছাদিত

শাদা হিম ছাওয়া সমতল

জলের বিকল্প পাতা মেতেছে পাখনায়।


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন