‘ইক্যুয়াস’: এক দুর্বোধ্য ল্যাবিরিন্থ
সার্ত্রের ‘নো এক্সিট’। গার্সাঁ আর এস্তেল বদ্ধ ঘরে, এক
আবেগঘন পরিস্থিতে, একে-অপরের ঘনিষ্ঠ হতে প্রবলভাবে উদ্যত। কিন্তু ঘনিষ্ঠ হতে পারে
না কারণ সেখানে তৃতীয় একজন ব্যক্তির উপস্থিতি রয়েছে — ইনে। ইনে সব দেখছে। ইনের
দৃষ্টি অতিক্রম করে তাদের পক্ষে মিলিত হওয়া সম্ভব না। এবার, ধরা যাক, ইনের বদলে
সেখানে রয়েছে একটি ঘোড়া — অবলা জীব। তাকেও কি গার্সাঁ আর এস্তেল ভয় পাবে? মানুষ
কখনো ঘোড়াকে ভয় পেয়েছে? নাকি, মানুষ নিজেকেই ভয় পেয়ে এসেছে? অথবা সমাজকে? সমাজের
একাধিক অদৃশ্য চোখ জোড়াকে? এই অদৃশ্য বিষদৃষ্টির ছায়ায় মানুষ নিস্তেজ হয়ে পড়ে,
বিহ্বল, বিমূঢ় হয়ে যায়। হ্যাঁ, মানুষ ভয় পায় সমাজকে। সমাজের উপরিভাগে বিস্তৃত
সুন্দর, সুদৃশ্য, মখমলি পর্দার আড়াল থেকে বিভিন্ন আকারের, বিভিন্ন রূপের, বিভিন্ন
ধরণের যে তীব্র হানাদারী দৃষ্টি বর্শার তীক্ষ্ণ ফলার মতো নিয়ত, ক্রমাগত মানুষের
মনের একেবারে কেন্দ্রবিন্দু পর্যন্ত ঢুকে যায় সেই দৃষ্টিকে ভয় পায়। মানুষ ঘোড়াকেও
ভয় পায়। যদি সেই ঘোড়া হয়ে ওঠে সেই সমস্ত অদৃশ্য চোখের প্রতিনিধি। মানুষের
আর্কেটাইপাল প্রতিনিধি হিসাবে অ্যালানও ভয় পায়। অ্যালান স্ট্র্যাং, পিটার
শ্যাফার-এর লেখা জটিল ও বিখ্যাত নাটক ‘ইক্যুয়াস’-এর সতেরো বছর বয়সী প্রোটাগনিষ্ট।
তার ভয় আছে ঘোড়ার প্রতি, ইক্যুয়াস-এর প্রতি। অথবা ভক্তি আছে। অথবা মনের জটিল ও
দুর্বোধ্য ল্যাবিরিন্থ-এ ঘুরে বেরানো গভীর কোন বোধ। একইরকম আবেগঘন পরিস্থিতিতে
অ্যালান চিৎকার করে বলে ওঠে, “He was there. Through the door. The door was
shut, but he was there! . . . He’d seen everything. I could hear him. He was
laughing. . . Mocking!. . . Mocking!” জিল ম্যাসন,
তার সমস্ত ইন্দ্রিয়গত ও শারীরিক সৌন্দর্য ও মাদকতা সমেত অ্যালানের চোখের সামনে থেকে
সরে যায়। ইক্যুয়াস-এর রুক্ষ অবয়ব জিলের কোমল নারী শরীরের স্থলাভিষিক্ত হয়:
“. . . When I touched her, I felt Him. Under me. . . His side, waiting for
my hand. . . His flanks. . . I refused Him. I looked. I looked right at her . .
. and I couldn’t do it. When I shut my eyes, I saw him at once. The streaks on
his belly. . . [With more desperation.]
I couldn’t feel her flesh at all! I
wanted the foam off his neck. His sweaty hide. Not flesh. Hide! Horse-hide! . . . Then
I couldn’t even kiss her.”
এ যেন হেটেরোনরমাটিভ সিস্টেম-এর বিরুদ্ধে এক যাত্রা! এই
যাত্রা অবশ্যই আমাদের সমাজ-স্বীকৃত তথাকথিত নরমাল জেন্ডার সিস্টেম-এর বিরুদ্ধে
প্রতিবাদ। অথবা প্রশ্ন। তবে এই যাত্রা আদতে বোধহয় এক তীর্থযাত্রা! হেটেরোনরমাটিভ
সিস্টেম-এর বিরুদ্ধে অ্যালান ও ইক্যুয়াসের কামজ সম্পর্ক শুধুমাত্র কোন
বায়োলজিক্যাল ফেনোমেনন নয়। এর পিছনে রয়েছে গভীর ধর্মবোধ। সেই ধর্মবোধও আবার
স্বাভাবিক ও স্বীকৃত বোধ নয়। সেখানেও অ্যালান ছাঁচ-ভাঙা বিদ্রোহী। আসলে,
‘ইক্যুয়াস’ নাটকটি আশিরনখর প্রতিষ্ঠান-বিরোধী। ডায়ালেক্টিক্স-এর চরম উদাহরণও বটে।
আমার, এবং আপনারও, দৈনন্দিন টুকিটাকির মধ্যেই পারস্পরিক দ্বন্দ্বের যে চোরাস্রোত,
যে চোরাস্রোত নিয়ত বহমান, তার নাটকীয় চরিত্রায়ন ও উপস্থাপনা হল এই অ্যালান
চরিত্রটি, এই নাটকটি। এ হল বাইনারি সিস্টেম-এর বিভিন্ন বিপরীত মেরুবিন্দুর নাটকীয়
দ্বন্দ্বের প্রকাশ: ‘ধর্ম’ ও ‘বিজ্ঞান’; ‘কল্পনা’ ও ‘বাস্তব’; ‘স্বাভাবিকতা’ ও
‘অস্বাভাবিকতা’; ‘রাষ্ট্র’ ও ‘ব্যক্তি’; ‘দর্শক’ ও ‘দ্রষ্টব্য’; ‘আমি সত্তা’ ও
‘অপর সত্তা’; ‘অ্যাপোলোনিয়ান’ ও ‘ডায়োনিশিয়ান’ ডিকোটমি। নিরন্তর দ্বন্দ্বের এই
প্রচ্ছন্ন উপস্থিতি প্রকট করে তোলে সেন্টার স্টেজ-এর চৌকোণা বক্সিং রিং। এই রিং-এর
ভিতরেই নাটকের মূল ঘটনা গুলো ঘটতে থাকে একে একে। কখনো বর্তমানে, কখনো অতীতে। টাইম
এবং স্পেস-এর দৃঢ় ও স্থায়ী কাঠামোকে দুমড়ে মুচড়ে এক একটি ইমেজ ভেসে ওঠে চেতনার
স্রোতে, স্ট্রীম অফ কনশাসনেস-এ। মনের অলিন্দে বিভিন্ন ঘটনার ক্রমাগত নতমস্তকে
যাতায়াতের মধ্যে থেকে স্থির ও ঋজু হয়ে উঠে দাঁড়ায় একটি প্রশ্ন। সেই সর্বজনীন ও
শাশ্বত প্রশ্ন: জীবনের চরম ও পরম উদ্দেশ্য কি? আপনি কেন বেঁচে আছেন? আমিই বা কি
কারণে বেঁচে আছি? অ্যালান স্ট্র্যাং-এর জীবনের উদ্দেশ্য কি? আর, ডক্টর ডাইসার্টের?
প্রথম দৃশ্যেই ডক্টর ডাইসার্ট — একজন মনোবিদ, এবং সেই অর্থে বিজ্ঞানী — এই
প্রশ্নের উত্তর সন্ধানে নিজের মনের মানচিত্র নিরূপণের চেষ্টা করে:
“ . . . I keep thinking about the horse! Not
the boy: the horse, and what it may be trying to do. I keep seeing that huge
head kissing him with its chained mouth. Nudging through the metal some desire
absolutely irrelevant to filling its belly or propagating its own kind. What
desire could that be? . . . You see, I’m wearing that horse’s head myself.
That’s the feeling. All reined up in old language and old assumptions,
straining to jump clean-hoofed on to a whole new track of being I only suspect
is there.”
‘All reined up
in old language and old assumptions, straining to jump clean-hoofed on to a
whole new track of being ...’— এখানে ডাক্তারের ভাষা অশ্বারোহণ-সম্বন্ধীয়,
ভঙ্গী চিকিৎসকের, কিন্তু চিন্তা অন্টোলজিকাল, আর রূপক কিয়ের্কেগার্দ-এর ‘লিপ অফ
ফেইথ’-এর প্রতি ইঙ্গিত করে। কিন্তু এই ‘লিপ’-ই সেই সনাতনী প্রশ্নের উত্তর দিতে
সক্ষম সেই সম্বন্ধে কিছু সন্দেহও বাঙময় হয়ে ওঠে—
“ . . . a whole new track of being I only suspect is there. I can’t see it, because my educated, average head is being held at the
wrong angle. I can’t jump because the bit forbids it, and my own basic force—
my horse-power, if you like— is too little.”
এই একই এগজিস্টেনশিয়াল
অনিশ্চয়তা অ্যালানের মধ্যেও শিকড় গাড়ে — বোধহয় তার মধ্যে আরও গভীর সেই শিকড়ের
প্রসারণ। এবং এই অস্থিরতার মাধ্যমে অ্যালান ও ডাইসার্ট হয়ে ওঠে একে অপরের প্রতিরূপ
— স্বাধীনতা হরণকারী শৃঙ্খলজালে বাঁধা সমাজ-ব্যবস্থার যমজ সন্তান। ওরা দু’জনে একই
পথ ধরে এগিয়ে চলে কোন এক অদৃশ্য আলোর খোঁজে। অদৃশ্য আলোর আশায়। তবে ওদের এই
পরিক্রমা চলে ওদের নিজস্ব ঢঙে, নিজস্ব রঙে। ডাক্তারের পদ্ধতি যদি অ্যাপোলোনিয়ান হয়
— যুক্তি ও তর্কের ইঁট দিয়ে বাঁধানো সুশৃঙ্খল রাস্তা, অ্যালানের পদ্ধতিকে
ডায়োনিশিয়ান বলা যেতেই পারে। আবেগপ্রবণ। প্রবৃত্তিনির্ভর। ফলতঃ, এক সম্পূর্ণ
বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির জন্ম হয় তার হাত ধরে। কিন্তু আত্মবিশ্লেষণী যুক্তিশীল ডাক্তার
নিজের ব্যর্থতা সম্পর্কে নিঃসন্দিহান। সে নিশ্চিত যে সে মুক্তি পাবে না। বিপরীতে,
অ্যালান পেয়েছে। এবং পেয়েছে বলেই আজ সে সমাজের চোখে ‘অস্বাভাবিক’। ডাক্তার, যে
নিজে একই অন্বেষণে অগ্রগামী অথচ নিশ্চিত অসফল, তার কাজই হল সফল অ্যালানকে
‘স্বাভাবিক’ করে তোলা। এ এক অদ্ভুত প্যারাডক্স! কিন্তু, প্রশ্ন হচ্ছে ডায়োনিশিয়ান
অ্যালান পেরেছে, কিন্তু অ্যাপোলোনিয়ান ডাক্তার পারবে না কেন? এই প্রশ্নের উত্তর
ডাক্তারের বক্তব্যেই প্রকট— ‘I can’t see it,
because my educated, average head is being held at the wrong angle.’ ইডিওলজিকাল স্টেট অ্যাপারেটাস-এর অন্যতম অ্যাপারেটাস, তথা
শিক্ষাব্যবস্থায়, ডাইসার্ট শিক্ষিত। এই শিক্ষা, অথবা দীক্ষা, তাকে সামাজিক
লক্ষ্মণরেখায় আবদ্ধ রাখে। তার সত্তার প্রতিটি মজ্জা সংক্রামিত— বিচ্ছিন্নতা,
একাকীত্ব এবং বীর্যহীনতার জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত। অ্যালানের ক্ষেত্রে জ্ঞানমূলক
শিক্ষাযন্ত্র, যা কিনা আদর্শগত শিক্ষার ছদ্মনাম, সক্রিয় ছিল না। বরং, ইডিওলজিকাল
স্টেট অ্যাপারেটাস-এর অন্য অ্যাপারেটাসগুলো সক্রিয় ছিল একেবারে ছোট বেলা থেকেই:
পরিবার, ধর্মীয় শিক্ষা। নিজেকে নিপীড়িত মানুষদের একজন, বা সোশিয়ালিস্ট হিসাবে দাবি
করা ফ্রাঙ্ক স্ট্র্যাং— অ্যালানের বাবা— নিজে কিন্তু একজন সার্বভৌম শাসক!
ফ্লবেয়ার-এর ‘মাদাম বোভারি’ উপন্যাসের মসিঁয়ে হোমাই-এর মতো সেও ধর্মকে স্বাস্থ্য,
সংস্কৃতি এবং সভ্যতার পরিপন্থী হিসাবে গণ্য করে। তার স্ত্রীর
অতিরিক্ত ধর্মবিশ্বাস এবং ছেলের মনে সেই বিশ্বাসের বীজ ছড়িয়ে দেওয়া ফ্রাঙ্কের একক
কর্তৃত্বপূর্ণ শাসন-ব্যবস্থার প্রতি
আঘাত-স্বরূপ। এবং, সেই কারণেই ফ্রাঙ্কের মতে ধর্ম হয়ে ওঠে অ্যালানের যাবতীয়
স্খলনের একমাত্র অনুঘটক:
A boy spends night after night having
this stuff read into him: an innocent man tortured to death— thorns driven into
his head— nails into his hands— a spear jammed through his ribs. . . . Bloody
religion— it’s our only real problem in this house.
যদিও ফ্রাঙ্ক নিজে সিনেমা হল-এ গিয়ে তথাকথিত নিষিদ্ধ পর্নোগ্রাফিক সিনেমা
দেখে, কিন্তু অ্যালানের ক্ষেত্রে ফ্রাঙ্কের চাপানো অনুশাসন নেমে আসে টেলিভিশন
দেখার উপরে নিষেধাজ্ঞা রূপে। টেলিভিশন বিভিন্ন অর্থহীন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে
শুধুমাত্র ক্যাপিটালিস্ট প্রোপাগান্ডা ছড়ায়। কোন ব্যক্তিকে মানসিকভাবে পঙ্গু করে।
ধ্বংস করে। ঠিক একইভাবে, বাস্তবে, ফ্রাঙ্কের যুক্তিহীন, অনমনীয় ও একপেশে কঠোর
অনুশাসনের কারণে অ্যালানও ক্রমশ মানসিক ভাবে পঙ্গু হয়ে যায়, ধ্বংস হয়ে যায়। উলটো
দিকে অতিরিক্ত ধর্মপরায়ণা ডোরা স্ট্র্যাং, তার চাপিয়ে দেওয়া অন্ধ ধর্মনীতি সহ,
ইডিওলজিকাল স্টেট অ্যাপারেটাস-এর মন্ত্র জপ করে নিরন্তর: “God sees you, Alan. God’s
got eyes everywhere”। অ্যালান ক্রমশ
মর্গের মৃতদেহ হয়ে ওঠে যাকে অনুক্ষণ কাটা-ছেঁড়া করা হয়। অ্যালান ক্রমশ
এক দ্রষ্টব্যে পরিণত হয়। তার বাবা-মা হয়ে ওঠে মিশেল ফুকো’র পাওয়ার ডিসকোর্স-এর
প্যানপটিকন-এর রক্ষী। জাক লাকাঁ’র সাইকোঅ্যানালিসিস তত্ত্বের ‘The
Other’ (বড় হাতের ‘O’),
বা ‘বড় অপর’ সত্তা। রাষ্ট্রযন্ত্রের হাতিয়ার। অথবা, স্বয়ং রাষ্ট্রযন্ত্র।
শাসনযন্ত্রে
নিষ্পেষিত, অতন্দ্র প্রহরায় হাঁপিয়ে ওঠা, বৃহৎ সত্তার দ্বারা আবৃত অ্যালানের
সত্তাও বিচ্ছিন্ন, একাকী এবং বীর্যহীন হয়ে পড়ে, এলোমেলো হয়ে পড়ে। ডাইসার্টের
সত্তার মতোই। তার সামনের প্রতিটা দরজা একে একে বন্ধ হতে থাকে আর সে ক্রমশ বন্দী
হতে থাকে। ছাঁচ-বন্দী। এক সময় তার ঘাড়ের উপরে চেপে বসা আঁধারকে অগ্রাহ্য করে
অ্যালান তার নিজস্ব ‘আমি’ সত্তার খোঁজে যাত্রা করে। এই যাত্রা মেটাফিজিকাল, এবং
ইম্যাজিনারি। রাতের অন্ধকারে, সবার অজান্তে, নিয়মের রক্তচক্ষুকে ফাঁকি দিয়ে সে
আলোর খোঁজে যাত্রা করে ইক্যুয়াসের উপর ভর করে। ছ’ বছর বয়সে সে প্রথম পরিচিত হয়
ইক্যুয়াসের সাথে — তার অসীম শক্তি, অফুরন্ত তেজ আর স্বাধীনচেতা মানসিকতার সাথে। যা
কিছু থেকে অ্যালান নিজে বঞ্চিত তা সবই ইক্যুয়াসের মধ্যে আছে। অ্যালান শক্তিহীন,
দুর্বল, ভীতু। এবং অনুশাসিত। তাকে সেইদিনও জোর করে ইক্যুয়াসের পিঠ থেকে নামিয়ে আনা
হয়। অনেকটা তার ঘরের দেওয়ালে টাঙানো যীশু খ্রীষ্টের ছবির মতোই ছিল অ্যালান— “loaded
down with chains, and the centurions were really laying on the stripes”। ওর বাবা ঐ ছবিটি ছিঁড়ে ফেলে। তার জায়গায়, পরে
কিছুটা বাধ্য হয়ে, ইক্যুয়াসের ছবি টাঙানো হয়: “a beautiful white one,
looking over a gate…staring straight at you”। ইক্যুয়াসের এই ছবিটি, অথবা তার সামগ্রিক প্রতিচ্ছবিটিই,
অ্যালানের কাছে এক ‘আয়নাতে’ পরিণত হয়। আর অ্যালান নিজে হয়ে ওঠে এক শিশু— অপরিণত,
অসম্পূর্ণ, অক্ষম। জাক লাকাঁ’র ‘মিরর স্টেজ’ তত্ত্বের ‘মিরর’ এবং ‘শিশু’ হয়ে ওঠে
ইক্যুয়াস এবং অ্যালান।
একটি শিশু। বাইরের
অবাক করা পৃথিবী আর সেই পৃথিবীর আরও অবাক করে দেওয়া এক একটি জিনিস দেখছে, চিনছে,
উপলব্ধি করছে। তখনো তার শারীরবৃত্তীয় গঠনপ্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়নি। যন্ত্রাংশগুলি
পুরো মাত্রায় সচল হয়নি। বা, বলা যায়, যন্ত্রাংশগুলি সম্পূর্ণরূপে নিজের আয়ত্তাধীন
হয়নি, নিজের মস্তিষ্কের ইচ্ছা-অনিচ্ছার দ্বারা চালিত হতে শুরু করেনি। সে অন্যের
ইচ্ছায় কাজ করে। এই সময়ে, কোন এক দিন, সেই শিশুটি তার মা’য়ের কোলে চেপে আয়নার
সামনে হাজির হয়। জীবনে সেই প্রথম সে তার ‘আমি’ কে দেখে, চেনে, ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে
প্রথমবার উপলব্ধি করে। এই অভিজ্ঞতাটি ক্ষণস্থায়ীত্বকে ছাপিয়ে চিরস্থায়ী হয়ে ওঠে।
তার কল্পনা-শৃঙ্খলে নিজের চিত্রটি— তার ‘আমি’ সত্তার চিত্রটি— স্থায়ীভাবে খোদাই
হয়ে যায়। এখানে আয়নায় যে প্রতিবিম্বটি ওই শিশু দেখে সেটি হল ‘other’, বা ‘ছোট অপর’
(ছোট হাতের ‘o’)। এই ‘ছোট অপর’ হল ‘আমি’ সত্তার কাল্পনিক প্রতিরূপ। শিশুটির মনে
এই প্রতিরূপটি কিন্তু আপাতদৃষ্টিতে শিশুটির মতো শারীরিক গঠনমূলক অসম্পূর্ণতার দোষে
দুষ্ট হিসাবে ধরা দেয় না। এবং ফলতঃ সে পরাধীন নয়। সে এক পরিপূর্ণ প্রতিচ্ছবি। এই
সম্পূর্ণ, এবং তার ফলে স্বাধীন প্রতিরূপটি ওই শিশুটির মনে নিজের সম্পূর্ণ ও
স্বাধীন ভবিষ্যৎ সত্তার আগাম আভাস রূপে হাজির হয়। সে বুঝতে পারে সেও ওই ইমেজটির
মতো পরিপূর্ণ ও স্বাধীন হয়ে উঠবে। এই ‘ছোট অপরের’ সাথে ‘আমি’ সত্তার আত্তীকরণ
সম্ভব। এই আত্তীকরণ ঘটে। কিন্তু ওই আয়নায় শিশুটির মা’য়ের যে প্রতিফলন শিশুটি দেখে
তা হল ‘Other’— ‘বড় অপর’ সত্তা। এই ‘বড় অপর’ সত্তার সাথে ‘আমি’ বা ‘ছোট অপরের’ আত্তীকরণ
কোনদিনই সম্ভব না। বরং, ‘বড় অপর’ সত্তা শিশুটির মনে খানিক ভয় জাগিয়ে তোলে।
উদ্বেগের জন্ম দেয়। অ্যালানের কাছে ইক্যুয়াসের প্রতিকৃতিটি হয়ে ওঠে ‘আমি’ সত্তার
প্রতিরূপ— ‘ছোট অপর’। তার বাবা-মা ‘বড় অপর’।
অ্যালান ইক্যুয়াসের মধ্যে নিজের স্বাধীন ভবিষ্যৎ সত্তার হদিশ পায়। তার অপূর্ণতার
পূর্ণতাপ্রাপ্তির মাধ্যম হচ্ছে ইক্যুয়াস। কাউবয়-এর মতো সেও যখন ইক্যুয়াসের সাথে
‘এক’ হবে তখন তাদের সবাই ভয় পাবে: “No one ever says to cowboys ‘Receive my meaning’!
They wouldn’t dare.”। অ্যালানের মানস কল্পনায় ঘোড়া ও তার উপরে সওয়ারী মানুষ ‘একত্রীভূত’
হলে ঈশ্বর হিসাবে পরিগণিত হয়। ঠিক যেমন— সে তার মা’য়ের কাছে শুনেছিল— ‘নিউ
ওয়ার্ল্ড’-এর পেগান মানুষরা প্রথম খ্রীশ্চিয়ান ক্যাভালরির ঘোড়ার পিঠে সওয়ার
মানুষদের দেখে তাদের ঈশ্বর ভেবেছিল।
এই ভাবেই অ্যালান ও ইক্যুয়াস এক হয়ে ওঠে। এবং, ইক্যুয়াস ও
ঈশ্বর এক হয়ে ওঠে। অ্যালানের কাছে আস্তাবল হয়ে ওঠে ‘টেম্পল’, ‘হোলি অফ হোলিজ’।
ইক্যুয়াসকে, যে ইক্যুয়াস “was
born in the straw”, লাস্ট সাপার হিসাবে চিনির ঢেলা দেয় অ্যালান এবং তার পরে
মন্ত্রের মতো জপ করতে থাকে— “Take my sins. Eat them for
my sake”। কিন্তু এখানেও এক অদ্ভুত
প্যারাডক্স আছে। অ্যালানের কল্পনার ঈশ্বর সেই ঈশ্বর নয় যে সকলের আরোগ্য কামনা করে
এবং পাপীদের ক্ষমা করে। এই ঈশ্বর ‘Songs of Experience’- এর
ঈশ্বর— বলশালী, তেজীয়ান, কঠোর বিচারক, শত্রু ধ্বংসকারী, নেমেসিস। এই ঈশ্বর
অ্যালানের পরিপূরক। দুর্বল অ্যালান, শক্তিমান ঈশ্বর। একইভাবে ইক্যুয়াসও
হল বুক অফ জোব-এর প্রবল পরাক্রমী ঘোড়া:
Hast thou given the horse strength? Hast thou
clothed
his neck with thunder? . . .
He swalloweth the ground with fierceness and
rage . . .
He saith among the trumpets, Ha, ha [Job 39:19-25].
his neck with thunder? . . .
He swalloweth the ground with fierceness and
rage . . .
He saith among the trumpets, Ha, ha [Job 39:19-25].
ইক্যুয়াস ‘হোয়াইট হর্স ইন রিভিলেশন’-এর ঘোড়ায় পরিণত হয়— ‘He that sat upon him was
called Faithful and True. His eyes were as flames of fire.’ মাঝরাতে, শুদ্ধ মনে,
শুচিবস্ত্র ত্যাগ করে, ধর্মাচারের মতো সে সত্তানুসন্ধান করে; অথবা,
সত্যানুসন্ধান। এই সন্ধান সংঘটিত হয় ইক্যুয়াসকে জয় করার মাধ্যমে, তার সাথে একাত্ম
হওয়ার মাধ্যমে। সে ইক্যুয়াসের মধ্যে বিলীন হয়ে যায়। ঈশ্বরের মধ্যে বিলীন হয়ে যায়:
The King rides out on Equus, mightiest of horses. .
. . His neck comes out of my
body. It lifts in the dark. Equus, my Godslave! . . . Now the King commands
you. Tonight, we ride against them all.
[He whips Nugget]
And Equus the Mighty rose against all!
His enemies scatter, his enemies fall! . . .
. . .
[He whips Nugget]
And Equus the Mighty rose against all!
His enemies scatter, his enemies fall! . . .
. . .
Feel me on you! On you! On you! On you!
I want to be in you!
I want to BE you forever and ever!—
Equus, I love you!
Now!—
Bear me away!
Make us One Person!
[He rides Equus frantically.]
One Person! One Person! One Person! One Person!
[He rises up on the horse’s back, and calls like a trumpet.]
Ha-Ha! . . . Ha-HA! . . . Ha-HA!
[The trumpet turns to great cries.]
HA-HA! HA-HA! HA-HA! HA-HAH! HA!
HA. . . HAAAAA!
[He twists like a flame. Silence . . . Slowly, the boy drops off the horse’s back.]
AMEN!
অ্যালানও, তার
কল্পনার ঈশ্বরের মতোই, শত্রু দমন করতে চায়। ভেঙ্গে দিতে চায় সমস্ত শিকল। ধ্বংস
করতে চায় দমনমূলক রাষ্ট্রযন্ত্র, ক্ষমতার প্যানপটিকন, ‘বড় অপর’ সত্তার অধীনতা।
কিন্তু এখানেই সবথেকে বড় প্রশ্নটির জন্ম হয় যা আমাদের বোধকে
আত্মসমীক্ষার অণুবীক্ষণের নীচে ফেলে বিচার করতে বাধ্য করে। অন্য কোন সত্তায় নিজেকে
বিলীন করে দিয়ে, অন্য কোন সত্তার সাথে আত্তীকরণের মাধ্যমে নিজ সত্তার স্বাধীনতা
লাভ কি কখনো সম্ভব? অন্য সত্তায় বিলীন হয়ে গেলে স্বকীয় সত্তার কোন অস্তিত্বই কি
থাকে আর? তখন সেই অন্য সত্তাটিই হয়ে ওঠে সর্বোচ্চ শক্তিমান, সর্বগ্রাসী, এক
সন্ত্রাসের প্রতিরূপ। তাই আগল ভাঙার হাতিয়ার, বাঁধন পেরোনোর বাহন ইক্যুয়াসও
অ্যালানের কাছে সন্ত্রাসে পরিণত হয়। ইক্যুয়াসের সামনে জিল-এর সাথে শারীরিক মিলনের
মতো স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় আচরণ করতেও ব্যর্থ হয় অ্যালান। ভয়ের কাছে আত্মসমর্পণ
করে সে ক্ষমা চায় ইক্যুয়াসের কাছে:
ALAN: . . . [To the silence: terrified.] Friend. . .
Equus the Kind. . . The Merciful! . . . Forgive
me! . . . It wasn’t me. Not really me. Me!
. . . Forgive me! . . . Take me back again! Please! . . . PLEASE!
[He kneels on the downstage lip of the square, still facing the door,
huddling in fear.]
I’ll never do it
again. I swear. . . I swear! . . . [In a
moan.] Please!!! . . .
কিন্তু ইক্যুয়াস তাকে ক্ষমা করে
না। মুক্তি দেয় না। বরং, দখলনামা ঘোষণা করে— ‘Mine! . . . You’re mine! . .
. I am yours and you are mine!’ এখনেই, ঠিক এই মুহূর্তে, ইক্যুয়াস
নিজেই হয়ে ওঠে একটি প্রতিষ্ঠান। রূপান্তরিত হয় ব্যক্তি স্বাধীনতা হরণকারী
রাষ্ট্রযন্ত্রে, ক্ষমতাসীন শক্তিতে। ঠিক এই মুহূর্তেই ইক্যুয়াস ‘ছোট অপর’ সত্তা
থেকে রূপান্তরিত হয় ‘বড় অপর’ সত্তায়:
ALAN: … Then I see his eyes.
They are rolling!
[NUGGET begins to advance slowly, with relentless hooves, down the central
tunnel.]
‘I see you. I see you. Always! Everywhere!
Forever!’
DYSART: Kiss anyone and I will see?
ALAN [to
DYSART.]: Yes!
DYSART: Lie with anyone and I will see?
ALAN [to
DYSART]: Yes!
DYSART: And you will fail!
Forever and ever you will fail! You
will see ME— and you will FAIL!
. . .
The Lord thy God is a Jealous
God. He sees you. He sees you forever and ever, Alan. He sees you! . . . He sees you!
. . .
ALAN [in terror]:
Eyes! . . . White eyes— never closed! Eyes like flames — coming — coming! . . .
God seest! God seest! . . . NO! . . .
প্যানপটিকনের অদৃশ্য রক্তচক্ষু থেকে প্রাণপণে মুক্তি চায়
অ্যালান। ভাঙতে চায় সমস্ত ছাঁচ, বাঁধন। এমনকি ইক্যুয়াসের আলিঙ্গন থেকেও স্বাধীনতা
চায় সে। ঈশ্বরের দৃষ্টি থেকেও। শিকলের মর্মর শব্দ ছাপিয়ে ভেসে ওঠে অ্যালানের
জেহাদ:
ALAN: No more. No more, Equus.
[He gets up. He goes to the bench. He takes up the invisible pick. He
moves slowly upstage towards NUGGET,
concealing the weapon behind his naked back, in the growing darkness. He
stretches out his hand and fondles NUGGET’s mask.]
[Gently.] Equus . . . Noble Equus. . . Faithful and True. . .
God-slave. . . Thou – God – Seest – NOTHING!
[He stabs out NUGGET’s eyes.
The horse stamps in agony. A great screaming begins to fill the theatre,
growing ever louder. ALAN dashes at
the other two horses and blinds them too, stabbing over the rails. . .
Relentlessly, as this happens, three more horses appear in cones of light: not
naturalistic animals like the first three, but dreadful creatures out of
nightmare. Their eyes flare – their nostrils flare – their mouths flare. They
are archetypal images – judging, punishing, pitiless. . . As they trample at
him, the boy leaps desperately at them, jumping high and naked in the dark,
slashing at their heads with arms upraised . . .]
ALAN: Find me! . . . Find me! . . . Find me!
. . .
KILL ME! . . . KILL ME! . . .
উপরের অদৃশ্য অথচ বর্তমান চোখগুলো সদা-সর্বদা আমাদের
পর্যবেক্ষণ করে। এবং নিয়মভঙ্গের
শাস্তিস্বরূপ গারদে নিক্ষেপ করে। অথবা পাগলা গারদে। অ্যালান তাদেরকে, তাদের
ছোট্ট এক প্রতিরূপকে ধ্বংস করে। নিজে হাতে। ধ্বংস করে পরাধীনতাকে। কিন্তু এখানেও
প্রশ্ন আছে। এই ধ্বংসকার্যটি অ্যালানের বাস্তব-জীবনে সংঘটিত, কিন্তু মুক্তিলাভ কি
বাস্তবে ঘটে? এই মুক্তিলাভ এক ইলিউশান নয় তো? বাস্তবে সে সাময়িক ভাবে পরাধীনতাকে
পরাজিত করে, অধীনতার একটি নির্দিষ্ট হাতিয়ারকে অন্ধ করে দেয়, কিন্তু আদতে তার
মুক্তি আসে কল্পনায়। যে পরাধীনতাকে অ্যালান ধ্বংস করে তা পরাধীনতার এক প্রতীক
মাত্র। বাস্তবে অ্যালান গ্রেপ্তার হয়। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ শাস্তিদানের প্রক্রিয়া
চালু হয়। সে রিপ্রেসিভ স্টেট অ্যাপারেটাস-এর বলি হয়। এই ব্যবস্থারই অঙ্গ হিসাবে
তাকে ডাইসার্টের কাছে পাঠানো হয় তার ‘অস্বাভাবিকতাকে’ মুছে ফেলে তাকে ‘স্বাভাবিক’
করে তুলতে। তাকে ছাঁচবদ্ধ করতে। তার ওই চোখটাকে— যে চোখে সে কল্পনার জাল বোনে, যে
কল্পনার জগতে সে একদিন ইক্যুয়াসের মাধ্যমে, ঈশ্বরের হাত ধরে, নিজের স্বাধীনতা
খুঁজে পেয়েছিল— সেই চোখটাকে উপড়ে ফেলাই হল ডাইসার্টের কাজ। সেই চোখে স্বাধীনতার
নেশা লেগে আছে। তাই সেই চোখ ‘অস্বাভাবিক’— ভয়ঙ্কর ও ক্ষতিকর:
DYSART: The Normal is the good
smile in a child’s eyes— all right. It is also the dead stare in a million
adults. It both sustains and kills— like a God. It is the Ordinary made beautiful; it is also the Average made lethal. The Normal is the
indispensable, murderous God of Health, and I am his priest. My tools are very
delicate. My compassion is honest. I have honestly assisted children in this
room. I have talked away terror and relieved many agonies. But also— beyond
question— I have cut from them parts of individuality repugnant to this God, in
both his aspects. Parts sacred to rarer and more wonderful Gods.
ডাইসার্ট নিজেও তার এই পরাধীনতা থেকে মনেপ্রাণে মুক্তি চায়।
কিন্তু, তার ‘প্যাশন’ নেই— অ্যালানের মতো। সে ভয় পায়— ধরা পরে যাওয়ার ভয়।
অ্যালানের মতো বিদ্রোহীদের চোখ উপড়ে নেওয়ার, তাদের কল্পনাময় জগতটাকে কেড়ে নেওয়ার
এই সামাজিক কর্তব্য-কর্ম নিয়ে তার নিজের সন্দেহ, হতাশা, যন্ত্রণা ধরা পড়ে যাওয়ার
ভয়। দুঃস্বপ্নেও এই ভয় তাকে তাড়া করে:
DYSART: . . . Of course, I
redouble my efforts to look professional— cutting and snipping for all I’m worth:
mainly because I know that if ever those two assistants so much as glimpse my
distress— and the implied doubt that this repetitive and smelly work is doing
any social good at all— I will be the next across the stone.
এক্ষেত্রে ডাইসার্ট সম্পূর্ণ রূপে সফল হয় নিজের সামাজিক
কর্তব্যে। সে হত্যা করে অ্যালানের ‘অস্বাভাবিকতাকে’, তার কল্পনাকে, তার
স্বাধীনতাকে। হত্যা করে অ্যালানের স্বকীয় সত্তাকে। অ্যালান এবার এক ভূতে পরিণত
হবে— ‘a
ghost’! একটি আর্কেটাইপাল ভূত। যে ভূতের অস্তিত্বের স্পন্দন টাইম
এবং স্পেস-এর বেড়াজাল টপকে আমাকে, আপনাকে, এমনকি সমগ্র মানবজাতিকে ছুঁয়ে, অজগরের
মতো পেঁচিয়ে, আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে, নিজের মধ্যে আত্তীভূত করে নিয়েছে। এই ভূত চলমান,
কিন্তু মৃত। স্বাভাবিক, কিন্তু প্রশ্নহীন, কল্পনাহীন, বীর্যহীন। এবং আবেগহীন।
ঋণ
স্বীকার: আন্তর্জাল ও গ্রন্থ
1.
Equus. Peter
Shaffer.
4.
“The Mirror Stage as Formative of the Function of
the I.” Literary Theory: An Anthology. Ed. Julie Rivkin and Michael
Ryan.
(এই প্রবন্ধটি ‘অপ্রচলিত’ নামক একটি পত্রিকায় বেশ কয়েক বছর
আগে প্রকাশিত হয়েছিল। নাট্যকার পিটার
শ্যাফারের মৃত্যু উপলক্ষে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের উদ্দেশ্যে 'কালিমাটি
অনলাইন' ব্লগজিনে পুনঃপ্রকাশিত হলো।)
অদ্বয় সমৃদ্ধ হলাম!
উত্তরমুছুনধন্যবাদ, স্বপন দা!
মুছুনঅদ্বয় সমৃদ্ধ হলাম!
উত্তরমুছুনosadharon laglo...
উত্তরমুছুনSrabani