কালিমাটি অনলাইন

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

একাদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১২০

শনিবার, ২৫ জুন, ২০১৬

মো: সুরুজ আলী

বাংলা লোকসংগীতে রাজনৈতিক ইতিহাস




সারসংক্ষেপ:

একটি নির্দিষ্ট ভৌগোলিক অঞ্চলকে ভিত্তি করে প্রকৃতি, লোকায়ত জীবনের নির্যাস হলো লোকসঙ্গীত লোকসঙ্গীতের মধ্যে জনজীবনের ভাব ভাষা, সুর গীত হয়ে ধরা পড়ে সমাজে বসবাসরত জনগোষ্ঠীর জীবন ঘনিষ্ঠ বিষয়গুলো (হাসি-কান্না, প্রেম-ভা্লোবাসা, আনন্দ-বেদনা ইত্যাদি) যেমন প্রাধান্য পেয়েছে পাশাপাশি তেমনি সমাজ রাষ্ট্রের মূল ইস্যুগুলোও (অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক প্রশাসনিক প্রভৃতি) লোকসঙ্গীত শিল্পীরা বিচক্ষণতার সহিত গ্রহণ করেছেন রাষ্ট্রযন্ত্রের শাসন-শোষণ, দমন-নিপীড়ন স্বার্থান্বষেী রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী ভাষা অবলীলায় খুঁজে পাওয়া যায় লোকসঙ্গীতের মধ্যে তাই লোকসঙ্গীত নিছক বিনোদনেরই মাধ্যম নয়,  প্রতিবাদের হাতিয়ারও লোকসঙ্গীত শিল্পীরা সমাজেরই মানুষ, তারা মানবতার কথা বলে, দেশ দশের কল্যাণের কথা বলে যা দেশ জাতির জন্য অশুভ, অকল্যাণকর যে নিয়ম দেশের জনগণকে কোণঠাসা করে তখনই তাদের  প্রতিবাদী কণ্ঠ প্রকাশ পায় লোকসঙ্গীতরে মধ্যে দেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ, উদ্বুদ্ধকরণ প্রতিবাদী করে তোলার অমূল্য প্রচেষ্টা বাংলায় বিভিন্ন শাসক গোষ্ঠীর (ঔপনিবেশিক শাসনামল থেকে বর্তমান বাংলাদেশ) তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার যে দমননীতি শাসনব্যবস্থা শুরু করেছিল, সে  সম্পর্কে জনগণকে জানান দেওয়ার মাধ্যমে সচেতনতা তৈরির ক্ষেত্রে এই লোক মাধ্যমটি (লোকসঙ্গীত) যে অবদান রেখেছে এবং বর্তমানেও সে ধারা বহমান, পাশাপাশি শাসক গোষ্ঠীর রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রতিহত জগণকে উদ্বুদ্ধকরণ, জাতীয়তাবোধ জাগ্রতকরণ সবোর্পরি জনসংযোগ সৃষ্টিতে লোকসংগীতের রয়েছে বিশেষ ভূমিকা


মূল প্রবন্ধ

লোকসংস্কৃতির একটি বিশাল অংশ জুড়ে আছে আমাদের বিপুল সমৃদ্ধ ঐতিহ্যবাহী লোকসংগীত হাজার হাজার বছর ধরে এই সঙ্গীত একদিকে যেমন  গ্রাম বাংলার মানুষকে আনন্দ দিয়ে আসছে তেমনি অন্যদিকে বাংলাদেশের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনেতিক রাজনৈতিক জীবনের ভাঙ্গাগড়া  টানাপোড়নের ক্ষেত্রেও লোকসংগীত এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে শিল্পবিপ্লব, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি, সাংস্কৃতিক অভিঘাতের ফলে রেডিও,  টেলিভিশন, ভিসিআর. সিডি ইত্যাদির মাধ্যমে আমাদের এই লোকসঙ্গীত ধীরে ধীরে রূপান্তরিত হচ্ছেবাংলা লোকসঙ্গীত বৈচিত্র্যময় পল্লীর শ্রমজীবী  জনমানসের সংস্কারগত চিন্তা-ভাবনা, বারোমাসে তের পার্বণের উৎসব-অনুষ্ঠান, জগৎও জীবন সম্পর্কে ঔৎসুক্য, বাংলার নিসর্গ শোভা, নদী নৌকারূপকাশ্রয়ী চিন্তা-চেতনা, দারিদ্র সমাজের অন্যায়-অবিচার, নিত্য ব্যবহার্য জিনিসপত্রের অগ্নিমূল্য প্রভৃতি বিষয়গত বোধ অলৌকিক বিশ্বাসকে অবলম্বন করে  গ্রামবাংলার মানুষ গান বেঁধেছেলোকসঙ্গীত সম্পর্কে সংক্ষেপে বলা যেতে পারে, লোকসঙ্গীত হলো লোকসাহিত্যের এমন একটি ধারা যা নামহীন রচয়িতার  (কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম আছে যেমন, বাউল গান) মাধ্যমে সুর লয় সহযোগে সৃষ্টি লাভ করে এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে ঐতিহ্যানুসারে হস্তান্তরিত হয়,  যেখানে লোকসঙ্গীত শিল্পীরা ফুটিয়ে তোলে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার মাধ্যমে সমাজে বসবাসরত মানুষের আনন্দ-বেদনা, প্রেম-বিরহ ভালোবাসা হাসি-কান্না প্রভৃতি

বাংলাদেশ বলতে সাধারণত বুঝায় বাংলা ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীর দেশ এবং এই জনগোষ্ঠীকে বলা হয় বাঙালি তবে বর্তমান বাংলাদেশ সমগ্র বাঙালি জনগোষ্ঠীর দেশ নয়্ পূর্ব ভারতের যে বিস্তীর্ণ এলাকায় বাঙালি জনগোষ্ঠী প্রাচীনকাল হতে বসবাস করে আসছে বাংলাদেশ তার একটি অংশ মাত্র আজকের বাংলাদেশ যে এলাকা নিয়ে গঠিত তা দীর্ঘদিন যাবত পূর্ব-বাংলা নামে পরিচিত ছিল দেশ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধর্ম, বংশ ভাষাভাষী শাসকবর্গ দ্বারা শাসিত হয়েছে, কখনও পৃথকভাবে, কখনও অন্যান্য এলাকার সংঙ্গে যুক্তভাবে মধ্যযুগে প্রায় সাড়ে পাঁচশ বছর (১২০৪-১৭৫৭ খ্রিষ্টাব্দ)পর্যন্ত দেশে শাসন করেইরান-তুরস্ক-আফগানিস্তান হতে আগত মুসলমান শাসকরা সে সময় এক প্রকার সামন্ত সমাজ উৎপাদন ব্যবস্থা প্রচলিত ছিল রাজস্ব আদায় ব্যতীত সাধারণ মানুষের সঙ্গে শাসকগোষ্ঠীর তেমন কোনো সম্পর্ক ছিল না আধুনিক অর্থে জাতীয়তাবোধ ছিল সম্পূর্ণ অনুপস্থিত ১৭৫৭ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয়ের মধ্য দিয়ে বাংলায় ব্রিটিশ শাসনের গোড়াপত্তন হয় প্রায় দু বছরের ব্রিটিশ শাসনে ভারবর্ষের সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি, যোগাযোগ প্রভৃতি ক্ষেত্রে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগে এবং জাতীয়তাবাদের উন্মেষ ঘটে ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ সরকার স্বাধীনতা দিতে বাধ্য হয় এবং দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে ভারতবর্ষ বিভক্ত হয়ে পাকিস্তান সৃষ্টি হয় পূর্ব বাংলা তথা বাংলাদেশ পাকিস্তানের একটি প্রদেশে  পরিণত হয় এবং শেষ পর্যন্ত ১৯৭১ সালে বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে একটি স্বাধীন সার্বভৌম মর্যাদা লাভ করেবাংলায় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন শাসকের আগমন ঘটে তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল, প্রশাসনিক ব্যবস্থা দৃঢ় করার জন্য বাংলার মানুষের উপর তাদের দৃষ্টি যতটা না নরম ছিল তার থেকে কঠোর ছিল দ্বিগুণ তাদের রাজনৈতিক শাসনব্যবস্থার কর্মকাণ্ডগুলো লোক  সঙ্গীতের মধ্যে খুব সহজেই ধরা পড়ে আলোচ্য লোকসঙ্গীতের মধ্যে তিনটি রাজনৈতিক শাসকগোষ্ঠীর কর্মকান্ড প্রত্যক্ষ করা যায় আলোচনার সুবধিার্থে- তিনটি ভাগে বিভক্ত করা হলো:-

এক. ব্রিটিশ শাসনামলে রাজনৈতিক অবস্থা (১৮৫৮-১৯৪৭)
দুই. পাকিস্তান শাসানামলে রাজনৈতিক অবস্থা (১৯৪৭-১৯৭১)
তিন. বাংলাদেশ শাসানামলে রাজনৈতিক অবস্থা (১৯৭১- বর্তমান সময়)


এবার পর্যায়ক্রমে উপর্যুক্ত শাসক গোষ্ঠীর রাজনৈতিক শাসন-ব্যবস্থার যে চিত্র লোকসঙ্গীতে ধরা পড়ে তা সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো

এক. ব্রিটিশ শাসনামলে রাজনৈতিক অবস্থা (১৮৫৮-১৯৪৭)


পলাশীর বিপর্যয়ের মাধ্যম সূচনা হয় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর শাসন ব্যবস্থা ভূমি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় হেস্টিংস এক বৈপ্লবিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেন শতাব্দী প্রাচীন কর প্রথা থেকে বেরিয়ে এসে তিনি প্রতিষ্ঠিত জমিদার তালুকদারদের স্থলে সেইসব ইজারাদার খাজনাদাতা জোতদারদের নিয়োগ করেন যারা সর্বোচ্চ খাজনা প্রদানের অঙ্গীকার করেন কোম্পানী কৌশলে কাজটি সম্পন্ন করে যার প্রভাব পড়েছিল কৃষকদের উপর এদেশের কৃষকদের কাছ থেকে নেওয়া হয় অধিক হারে খাজনা যার ফলে কৃষকরা জমি ভিটা হারিয়ে নি:স্ব হয়ে যায় বিষয়টি ফুটে ওঠে বারমাসী গানের মধ্যে-

আষাঢ় মাসে আশরাফ মুনসী
পানি হইল নেরাকার
কিরূপে পালনা যাইরে
নাবালগ যাদু তোমার
জাগা ইহল খাস কোম্পানী
খাজনার করেন জাগা
কোম্পানিক নিলামদে

উপর্যুক্ত বারমাসী গানের মধ্যে দিয়ে খাজনার কারণে কৃষকের জমি কোম্পানির নিকট নিলাম দেওয়ার বিষয়টি ফুঠে ওঠেছে

স্বদেশী আন্দোলন ভারতে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন আন্দোলন ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গ হতে উদ্ভূত হয়ে ১৯০৮ সাল পর্যন্ত চলমান ছিল আন্দোলন ছিল গান্ধী-পূর্ব আন্দোলন সমূহের মধ্যে সর্বাপেক্ষা সফল ব্রিটিশের নানা  ধরনের অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে বাংলার মানুষ রুখে দাঁড়ায় শুরু করে  তাদের স্বদেশী আন্দোলন, জাগিয়ে তোলা হয় সকল মানুষের মধ্যে  জাতীয়তাবোধকে বাংলার মানুষ তখন ব্রিটিশদের সকল কিছু বর্জন করে অধিক হারে এদেশের সব কিছুকে অধিক মাত্রায় গুরুত্ব দেয় নিম্মোক্ত গানটির মধ্যে স্বদেশী আন্দোলনের চিত্র পাওয়া যায়-

ব্রিটিশের বিরুদ্ধে যখন
আসে স্বদেশী আন্দোলন
ভারতবাসী সবাই তখন
একই দাবী করে
ব্রিটিশ যাইবে যখন
ভারতবর্ষ ছেড়ে
সবাই তখন সুখে রবে
এই আশা সবার অন্তরে

বাংলার মানুষ বিভিন্ন সময় ইংরেজদের বিরুদ্ধে হাতিয়ার তুলে নিয়েছে যার প্রমাণ ফকির সন্ন্যাসী বিদ্রোহ, রংপুর কৃষক বিদ্রোহ, চাকমা বিদ্রোহ, বরিশালের বলাকী শাহের বিদ্রোহ, ময়মনসিংহের পাগলপন্থী বিদ্রোহ, তিতুমীরের বিদ্র্রোহ, সিপাহী বিদ্রোহ এদেশের মানুষ ইংরেজদের অন্যায়-অত্যাচার, অবিচার, শাসন-শোষণ, নির্যাতনের কারনেই যে হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছিল তা নিচের ধূয়া গানের মধ্যে দেখা যায়-

ওরে ইংরেজ যুদ্ধে যাবো
বার কইরা দে তোর কামান
আসমান জমিন করবো রে খন্ড
যা করে ইসকের ভগবান

ভারতবর্ষের মানুষ যখন ইংরেজদের অন্যায় অবিচার অত্যাচারকে দমন করার চেষ্টা করে আসছে তখনই তারা জারি করে বাংলার মানুষের উপর শোষণের আইন তারা যে বাংলার মানুষকে শাসন করার জন্য নতুন নতুন আইন জারি করে তা এদেশের মানুষ সহজেই উপলব্ধি করতে পারে বিষয়টি জারি গানের মধ্যে দেখা যায়-

ইংরেজ লোকের বুদ্ধি ভারি
নতুন আইন জারি কইরলো ভারতে
ভাবছি বইস্যা না পাই দিশ্যা
কহুন জানি বাইগ্যে কি ঘটে



 ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ভারতবর্ষের মানুষ গড়ে তুলেছিল গণআন্দোলন তারা ব্রিটিশদের শাসনকে প্রতিহত করার জন্য গড়ে তোলে স্বদেশী আন্দেলন, বর্জন করে বিদেশী পণ্য গ্রহণ করে দেশীয় পণ্য সব কিছুতে একটি স্বদেশমনা ভাব গড়ে উঠেছিল ভারতবর্ষের মানুষের মধ্যে তাত্ত্বিকভাবে স্বদেশী আন্দোলনের মধ্যে দুটি মূলধারা সনাক্ত করা যেতে পারে, গঠনমূলক স্বদেশী এবং রাজনৈতিক চরমপন্থা স্বদেশী আন্দোলনকে সফল করার জন্যবর্জননীতি ছিল মুল হাতিয়ার ‌‌গঠনমূলক স্বদেশী ছিল সংগঠন গড়ার প্রচেষ্টার মাধ্যমে আত্মসংস্থানের ধারা ফলে বাধ্য হয়ে ছাড়তে হয়েছিল ব্রিটিশদের ভারতবর্ষকে এই বিষয়টি দেখা যায় নিশিকান্ত সরকারের কণ্ঠে-

আসিল গণ আন্দোলন
প্রতি ঘরে ঘরে
জনগণচায় না যখন
সে কি আর থাকতে পারে১০


ব্রিটিশ শাসকদের বিরূপ মনোভাবের কারণে তারা এদেশের মানুষের মনে স্থান করে নিতে পারেনি যার ফল হয়েছিল ভারতবর্ষ পরিত্যাগ করা





দুই. পাকিস্তান শাসানামলে রাজনৈতিক অবস্থা (১৯৪৭-১৯৭১)

ভারত উপমহাদেশের রাজনীতিক বিবর্তনের ইতিহাসে ১৯৩৭-৪৭ সন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ১১ ১৯৪৭ সালের আগষ্ট মাসে ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারতীয় উপমহাদেশ স্বাধীন হয় এবং ভারত বিভক্ত হয়ে দুটি পৃথক স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয় মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা নিয়ে গঠিত হয় পাকিস্তান এবং হিন্দু অন্যান্য  ধর্মাবলম্বী অধ্যুষতি অঞ্চল নিয়ে গঠিত হয় ভারত নবগঠিত রাষ্ট্র পাকিস্তান দুই হাজার মাইলের ব্যবধানে অবস্থিত দুটি প্রদেশের সমন্বয়ে গঠিত হয় পূর্ব পাকিস্তান (অধুনা বাংলাদেশ) পশ্চিম পাকিস্তান ভৌগোলিক সাংস্কৃতিক  দিক দিয়ে যোজন যোজন ব্যবধানে অবস্থিত দুটি অংশের মধ্যে ছিল কেবল সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ধর্মে পাকিস্তানের জন্মলগ্ন থেকেই এর পূর্ব অংশ পশ্চিম  অংশের তুলনায় নানাভাবে বঞ্চিত হতে থাকে এবং স্বাধীন বাংলাদেশের জন্মের আগ পর্যন্ত দীর্ঘ ২৩ বছর ছিল পশ্চিম পাকিস্তান কর্তৃক পূর্ব পাকিস্তনকে শোষণ-বঞ্চনার ইতিহাস১২ পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানের শোষণমূলক আচরণ কেবল অর্থনৈতিক শোষণ নয়, বাঙালী সংস্কৃতি    ঐতিহ্যের ওপরও নিপীড়ন শুরু হয়, এর প্রথম দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয় যখন পাকিস্তানের জনক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঘোষণা করেন, কেবল মাত্র উর্দুই  হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা সাথে সাথে বাঙালীরা এর প্রতিবাদ করে ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি ভাষার জন্যে এই আন্দোলন তীব্রতম রূপ ধারণ করে
বাংলা মোদের মায়ের ভাষা মাতৃভাষায় যেভাবে মনের ভাব প্রকাশ করা যায় অন্যভাষায় সেভাবে প্রকাশ করা যায় না ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে মায়ের মুখের ভাষার রক্ষার দাবিতে প্রাণ দিয়েছে সালাম, শফিক, জব্বার, বরকত সহ নাম না জানা অনেকে তাদের রক্তের বিনিময়ে বাংলা ভাষা আজ ইউনেস্কো কর্তৃক আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার মর্যাদা অর্জন করেছে কিন্তু এই ভাষাকে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী স্থিমিত করার যে চেষ্টা চালিয়েছিল, তা দেখা যায় নিম্নোক্ত লোকসংঙ্গীতটিতে-

জন্মভূমি মায়ের ভাষা বলতে কেন বাধা
তোমার কি হয় মাথা বেথা?
হায়রে বনের পাখি বনে থাকে
যার যার ভাষায় সেই ডাকে
তাতেই খুশি আল্লাহপাকে১৩

পাকিস্তান রাষ্ট্রের অন্তিম অধ্যায়ের নায়ক কলঙ্কিত ইয়াহিয়ার শাসনকাল সচতুর ইয়াহিয়া ক্ষমতা গ্রহণ করেই নতুন চাল চালেন তিনি ঘোষণা করেন দেশের রাজনৈতিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থির উন্নতির সাথে যতশীঘ্র সম্ভব যাতে অনতিকালের মধ্যে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধির দ্বারা একটি গণতান্ত্রিক সংবিধান রচনা এবং নিয়মতান্ত্রিক গণ সমর্থিত একটি সরকার গঠন করা যায়১৪ কিন্তু তিনি সরকার গঠন করতে ব্যর্থ হন ইয়াহিয়া অকস্মাৎ নাটকীয়ভাবে ঘোষণা করে্ন যে, জাতীয় পরিষদের অধিবেশন অনিদিষ্টকালের  জন্য স্থগিত থাকবে১৫ এতে দেশবাসী প্রতিবাদী হয়ে ওঠে ইয়াহিয়ার নেতৃত্বে  ভয়ংকর যুদ্ধ সংঘটিত হয় এবং তার পরাজয় নিশ্চিত হয় ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ যৌথ কমান্ডের অধিনায়ক জেনারেল অরোরার নিকট পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করে এবং তাদের ভারতের কারাগারে পাঠানো হয় ইয়াহিয়াকে তিরস্কার করে মজিবার মোল্লার কণ্ঠে ফুটে ওঠে-

ইয়াহিয়া যুদ্ধ করে করলো
কিরে ভাই তোমার পাক সৈন্য কোথায়?
ইন্দিরা দেবীর কারাগারে আছে তারা
দিন অন্তর একটি রুটি ডাল চচ্চরি খাচ্ছে তারা
দিন রজনী ঘি পোলাও ডিম কাবাব
কেন দিচ্ছো না তাদের এই সময়১৬

৭১ সালে জামায়াতে ইসলামীর বর্বরতার আরেকটি নৃশংস উদ্যোগ হচ্ছে হিটলারের গেস্টাপো বাহিনীর কায়দায় আলবদর আলশামস বাহিনী গঠন, বুদ্ধিজীবী হত্যার নীল নকশা প্রণয়ন জামায়াতের ঘাতকদের দ্বারা সুপরিকল্পিতভাবে বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী পেশাজীবীদের হত্যা


পূর্ব পাকিস্তান বর্তমান বাংলাদেশের জনগণকে ধ্বংসের জন্য কিছু বিশ্বাসঘাতক দলের সৃষ্টি হয়েছিল ১৭৫৭ সালে নবাব সিরাজউদৌল্লা পলাশীর যুদ্ধে ব্যর্থ হওয়ার একমাত্র কারণ ছিল মীর জাফরের দালালিপনা ১৯৭১ সালের যুদ্ধে ঠিক রকম দলের সৃষ্টি হয়েছিল যারা রাজাকার, আলবদর, আল শামস নামে পরিচিত তারা এদেশেকে পশ্চিম-পাকিস্তানিদের কাছে পূর্ব পাকিস্তানকে তুলে দেওয়ার অনেক চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তাতে তারা ব্যর্থও হয়েছিল  কবিয়াল মজিবর মোল্লার গানে তাদের চিত্রও ফুটে ওঠে কোথায় তোমার রাজাকারে দল
কোথায় রয়ে দালাল
কোথায় তোমার গুলি কামান
আর সৈন্য বিমান মুক্তি
সেনার গুতোর চোটে রাজাকার চললো হেঁটে
পাও ধরে করে সারেন্ডার১৭

পশ্চিম পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সময় ভারত এদেশের পক্ষ নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল ভারতের সে সময়কার প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ৯৮ লাখ ৯৯ হাজার ৩০৫ জন শরর্ণাথীকে আশ্রয় দেন তাদরে চিকিৎসারও ব্যবস্থা করেন বাংলাদেশের পক্ষে তাদের সেনা বাহিনীদের নিয়োজিত করে এবং গোলাবারুদ, কামান, ভারী অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহ করেন সে সময় ইন্দিরা গান্ধী অনেক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন এদেশের প্রতি, বিষয়টিও ফুটে ওঠে কবিয়াল মজিবারের মোল্লার গানে-

হাজত ঘরে বন্দি করে
আজ তাদের জানে বাঁচা হইল দায়ে
ইন্দিরা গান্ধী হয়ে বাংলার জননী
দান করিল গুলি কামান আর সৈন্য বিমান-১৮

১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে এদেশের অনেক মা বোন তাদের সম্ভ্রম হারিয়েছেন মাসে বাংলাদেশে লাখের মতো নারী পাকিস্তানি সৈন্যদের দ্বারা ধর্ষিত হয়েছিল পাকিস্তানি নরখাদকরা বাংলার মা-বোনকে জোর করে তুলে নিয়ে গেছে তাদের ক্যাম্পে আবার কখনও স্বামী-সন্তান, পিতা-মাতার সামনে সৃষ্টি করেছে নারকীয় ঘটনা যুদ্ধের সময় তারা এদেশের নিরীহ মা বোনদের প্রতিও বিন্দু মাত্র দয়া দেখায়নি মানুষ কতটা হীনমনের হলে এমন নারকীয় তাণ্ডব চালাতে পারে! এদেশের মা বোনদের উপর চালিয়ে যাওয়া নির্মম নির্যাতনের চিত্র ফুটে ওঠে ধূয়া গানে-

বাহু ধইরা টাইন্যা আনে
কারো আনে নতুন বউ
চোখের উপর বাপে মায়ে
নায়েক যিনি হারায় কেউ১৯

হিন্দু মুসলমান উভয়েই পূর্ব পাকিস্তানে বসবাস করত এদেশের মাটি মাটির গন্ধ তাদের অস্থিমজ্জাগত ছিল তাই এদেশে পশ্চিম পাকিস্তানের হস্তক্ষেপ তারা কখনও মেনে নিতে পারেনি বেইমান বেদুইনদের প্রতিহত করার চেষ্টা করেছে  তাদের সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে শরীরে শেষ বিন্দু রক্ত দিয়ে হলেও তারা এদেশকে মুক্ত করে ছাড়বে বলে সংকল্পবদ্ধ ছিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সে সময়কার প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর রয়েছে অনেক অবদান তিনি শুধু এক কোটি বাংলাদেশীকে আশ্রয় খাওয়া পরার ব্যবস্থায়ই করেননি, মুক্তি যোদ্ধাদের জন্য প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করেন আর বাংলাদেশের জন্য আন্তর্জাতিক বিশ্বের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা চালিয়েছেন এমনকি মার্কিন রক্তচক্ষুর বিপরীতে এক অনন্য অবস্থান নেন তিনি এই তীব্র মানসিকতা ফুটে ওঠে মহেন্দ্রনাথ গোস্বামীর কণ্ঠে-হিন্দু মুসলিম দুইয়ে মিলে
হাতিয়ার ধরো জোয়ে মিলে
বাচাইলে দেশের মান
পাকিস্তানি বেলুচি বেঈমান
মারল দেশের মান
ভারত সরকার ইন্দিরা গান্ধী
রাখল দেশের মান২০

সে সময় সকল জনগণকে আহ্বান জানানো হয়েছিল পশ্চিম পাকিস্তানিদের প্রতিহত করার জন্য কারণ তখন অন্তিম পর্যায় চলে এসেছিল বাঙালী  জনগণের জন্য, তাই এখন আর মুখ বুজে সহ্য করার সময় নেই। এখন যার  যে অস্ত্র আছে তাই দিয়ে পথ অবরুদ্ধ করে দিতে হবে পাকিস্তানি শাসকদের বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে নিমোক্ত লোক সঙ্গীতের মধ্যে-

মুক্তি সেনার নিশান তলে
আয় ছুটে বাঙালি ভাই
শক্ত হাতে দাঁড়া সবে
আরও বুঝি সময় নাই২১

নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ করে এদেশের ত্রিশ লাখ শহীদের জীবনের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছিল এদেশের স্বাধীনতা, সৃষ্টি হয়েছিল আজকের বাংলাদেশ এদেশের মানুষ পেয়েছিল তার মায়ের ভাষায় অভিব্যক্তি প্রকাশের স্বাধীনতা এদেশের মানুষ পেয়েছিল পাকিস্তানি শাসকদের অত্যাচারের শিকল থেকে মুক্তি এই আনন্দের বাণী শুনতে পাওয়া যায় মজিবর মোল্লার কণ্ঠে-

তিন দিনেতে হইল পথে
ছিল যত পাবলিক সাথে
উড়াইলো জয়ের নিশান
খেকো তালার ইয়ারতে
বাংলাদেশ মুক্ত হয়ে যায়২৩

পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠী চালিয়েছিল এদেশের মানুষের উপর ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ অতিষ্ঠ করে তুলেছিল এদেশের মানুষকে যার পরিণাম হয়েছিল পাকিস্তানি শাসকদের কাছ থেকে শাসন ক্ষমতা ছিনিয়ে নেয়া এবং বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা২২

তিন. বাংলাদেশ শাসনামলে রাজনৈতিক অবস্থা:

অতি কষ্ট করিয়া
আনিলেন জয় করিয়া
সকলে মিলিয়া
সোনার বাংলার গান গাইয়া
মনের আনন্দ পাইয়া
এমন ভাগ্য কয় জনার হয়২৩

উপর্যুক্ত লোকসঙ্গীতটিতে পশ্চিম পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর কাছ থেকে সোনার বাংলাকে ফিরে পাওয়া যে প্রশান্তি তা ফুটে উঠেছে

১৯৭১ সালের পর থেকে বাংলাদেশের নতুন রাজনীতির সূত্রপাত ঘটে পাকিস্তানি শাসকদের বিদায়ের পর সূচিত হয় এক নতুন রাষ্ট্রের কিন্তু তখন বাংলাদেশ একটি সংকটময় সময় অতিবাহিত করেছে যদিও দেশের সামগ্রিক অবস্থা যেমন অর্থনৈতিক মাত্রা, বিজয়ের ইতিহাস, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, সাধারণ মানুষের মাঝে আজও আলোর সঞ্চার করে চলেছে বাংলাদেশের রাজনীতির একটি মূল বৈশিষ্ট্য হলো বাঙালি জাতীয়তাবাদ বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের দ্বন্দ্ব বাংলাদেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ বিএনপি লোকসঙ্গীত শিল্পীদের গানে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে তাদের স্থানও

শেখ মুজিবুর রহমান এক সময় এদেশের শাসনভার গ্রহণ করেছিলেন এবং তাঁর কন্যাও এদেশের শাসনভার গ্রহণ করেছেন এতে তাঁরই পিতার মুখ উজ্জ্বল  হয়েছে শেখ মুজিবুর রহমানকে তার পরিবারকে দুর্বৃত্তরা খুন করেছিল বিষয়টি ফুটে ওঠে মাজেদ মোল্লার গানে-বহু সাধনার পর ফুটাইছে বাপের নাম
মাতা-পিতা ভাই-ব্রাদার খুন করল ভাই
আপন বলত তার দুনিয়ায় কেউ নাই
বি হাত-শক্তি ভাইরে আওয়ামী লীগের
জনগণ২৪

নেতারা হলো সাধারণ জনগণের প্রতিনিধি জনগণের সুখ শান্তি রক্ষার দায়িত্ব তাদের যখন জনগণ বিপদে পড়বে তখন ছুটে যাওয়া প্রত্যেক নেতাদের দায়িত্ব কারণ তারাই হলো রক্ষার কান্ডারি এই আহ্বান জানানো হয়েছে চারদলীয় ঐক্যজোটের (বিএনপি) নেতাদের প্রতি মাজেদ মোল্লার কণ্ঠে ফুটে ওঠে-

চারদলীয় নেতা যারা
হুঁশিয়ার থাকবেন তারা
ডাক দিলে ভাই দিবেন সাড়া
ঐক্যজোট ঠিক রাখা চায়২৫

দেশকে দুর্নীতিমুক্ত সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য দরকার আইনের শুধু আইন প্রণয়ন করলে চলবে না আইনটি হতে হবে সঠিকভাবে কার্যকর আওয়ামী লীগ সরকার সে বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছিল এই বিষয়টি দেখা যায় মাজেদ মোল্লার গানে-

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
আইন করেছে বাংলায়
দুর্নীতি আর কালোবাজারি
রাখবে না এই বাংলায়২৬

গরীব দুঃখীদের মুখে যেন দুবেলা অন্ন তুলে দেওয়া যায় বিষয়টি নিয়েও সরকারদের সজাগ থাকতে হয় কারণ দেশের প্রত্যেকটি মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য সরকারের রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গরীব দুঃখীদের ভাতা দেওয়া, চাল আটা দিয়ে যে সরকার সাহায্য করে তা দেখা যায় মাজেদ মোল্লার গানে-

চারদলীয় ঐক্যজোটে ভালই হইল ভাই
প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া
গরিব দুঃখীকে সাহায্য করে
চাল আটা দিয়া২৭


তাই পরিশেষে বলা যায়, রাজনীতি হলো  একটি দেশের সুখ সমৃদ্ধি শান্তির নির্ধারক দেশের অগ্রযাত্রা সমৃদ্ধি তখনই হবে যখন রাজনীতির চর্চা সুষ্ঠু ভাবে করা হয় লোকসঙ্গীত শিল্পীরা রাজনীতিবিদদের মতো রাজনীতি নিয়ে  চুলচেরা বিশ্লেষণ হয়তো করে না, তবে তাদের সৃষ্ট গানের মধ্যে দেশের যে  আর্থ-সামাজিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে যে বক্তব্য প্রকাশ পায়, তাতে  তারা প্রশংসার দাবিদার লোকসঙ্গীত এমনই একটি ধারা যেখানে প্রাধান্য পেয়েছে দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের বিভিন্ন চিত্র শিল্পীরা তাদের নিজ অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যা প্রত্যক্ষ করেছে ঠিক তাই ফুটিয়ে তুলেছে লোকসঙ্গীতের মধ্যে প্রশংসার পাশাপাশি সমালোচনার বিষয়টি প্রাধ্যান্য পেয়েছে লোকসঙ্গীতের মধ্যে

তথ্যসূত্র :

(প্রবন্ধে উদ্ধৃত লোকসংগীতগুলো ২০১২ সালে বাংলাদেশের মাগুরা জেলা থেকে ক্ষেত্রসমীক্ষার মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়েছিল)

. শফিকুর রহমান (সম্পাদিত)- বাংলাদেশের লোকসংগীত (ঢাকা : বাংলা একাডেমী, ১৯৯৪)পৃ.- ১১৫
. বাংলাপিডিয়া- (https://bn.banglapedia.org/index.php?title.......
. . আবুল ফজল হক- বাংলাদেশের শাসন ব্যবস্থা রাজনীতি (ঢাকা : বাংলা একাডেমী, ১৯৭৪) .- ৩৭৫
. উইকিপিডিয়া- (https://bn.m.wikipedia.org/wiki-জমিদার
. তথ্যদাতা : অসিতকুমার, বয়স- ৬০, গ্রাম- রাওপাড়া, থানা+জেলা- মাগুরা, পেশা-দিনমজুর
. তথ্যদাতা : মো: রাহাজ মন্ডল, বয়স- ৫৫, গ্রাম- রাওপাড়া, থানা+জেলা- মাগুরা, পেশা-মুদি দোকানদার
. তথ্যদাতা : মো: নিশিকান্ত সরকার, বয়স- ৫৫, গ্রাম- বাদুনা, থানা- সদর, জেলা- মাগুরা, পেশা-কৃষক
. তথ্যদাতা : মো: মাজেদ মোল্লা, বয়স- ৪০, গ্রাম- ইছাখাদা, থানা- সদর, জেলা- মাগুরা, পেশা-কৃষক
. বাংলাপিডিয়া- (https://bn.banglapedia.org/index.php?title.........
১০. তথ্যদাতা নিশিকান্ত সরকার, প্রাগুক্ত
১১. . মুহম্মদ আবদুর রহিম-বাংলাদেশের ইতিহাস (ঢাকা: নওরোজ কিতাবিস্তান, ২০০৬, পৃষ্ঠা- ৪২৫)
   . আবদুল মমিন চৌধুরী
   . এবিএম মাহমুদ
   . সিরাজুল ইসলাম
১২. উইকিপিডিয়া- (https://bn.m.wikipedia.org/wiki-স্বাধীনতা যুদ্ধ
১৩. তথ্যদাতা : আশের মন্ডল, বয়স- ৫০, গ্রাম- রাওপাড়া, থানা+জেলা- মাগুরাপেশা-মুদি ব্যবসায়ী
১৪. . মুহম্মদ আবদুর রহিম, প্রাগুক্ত, পৃ. ৪৮৪
   . আবদুল মমিন চৌধুরী
   . এবিএম মাহমুদ
   . সিরাজুল ইসলাম
১৫. প্রাগুক্ত, পৃ. ৪৮৪
১৬. তথ্যদাতা : মো: মজিবার মোল্লা, বয়স- ৭০, গ্রাম- ইছাখাদা, থানা- সদর, জেলা- মাগুরা, পেশা-কৃষক+লোকসংগীত শিল্পী
১৭. প্রাগুক্ত
১৮. প্রাগুক্ত
১৯. তথ্যদাতা : মো: নজির শেখ, বয়স- ৫৫, গ্রাম- রাওপাড়া, থানা+জেলা- মাগুরা, পেশা-কৃষক
২০. তথ্যদাতা: মহেন্দ্রনাথ গোম্বামী, বয়স- ৫০, গ্রাম- নোয়াখালী, থানা- শালিঘা, জেলা- মাগুরা, পেশা- লোকসঙ্গীত শিল্পী
২১. তথ্যদাতা : মো: জমশেদ আলম, বয়স- ৫৫, গ্রাম- ইছাখাদা, থানা- সদর, জেলা- মাগুরা, পেশা-দিনমজুর
২২. তথ্যদাতা : মজিবার মোল্লা, প্রাগুক্ত
২৩. তথ্যদাতা : মহেন্দ্রনাথ গোস্বামী, প্রাগুক্ত
২৪. তথ্যদাতা : মো: মোল্লা, প্রাগুক্ত
২৫. প্রাগুক্ত
২৬. প্রাগুক্ত
২৭. প্রাগুক্ত

(মো: সুরুজ আলী : গবেষক, ফোকলোর বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী, বাংলাদেশ)  




0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন