কবিতার কালিমাটি ১২১ |
ফেরিওয়ালার
সেলুলয়েড
(১)
ওয়ার্ডফাইলে সাদার সামনে বসে থাকি। একটা পাহাড় এসে বসে পাদমূলসহ। সবুজ আসে। চলে যায় প্যান করে। আর-একটা সবুজের অন্য আসে। চলেও যায়। ফাইল আমাকে আঁকাবাঁকায় নিয়ে যায় মংপু। খেয়ালই ছিল না কতক্ষণ বসে আছি সিটবেল্ট ছাড়া
চোখ যতটা সরে, ততটাই সারে। নিঃশ্বাস যতটা ফেলি, ততটাই দম বাড়ে। খবরের শেষপ্রান্তে এসে প্রথমটা ভুলেযাওয়া শুধরে যায়। একটা তাল সাইজের ব্যথা সরষেদানা হতে থাকে। নিলামে উঠতে যাওয়া শরীর বেশি দাম হাঁকে। বিকোয় না। আমারই থেকে যায়
ঘরে এসে দেখি, পুতুলের মেদ বেড়ে আলমারির কাচ ভেঙেছে। দেখি, চেয়ারগুলো উচ্চতায় বেড়ে বসার জায়গা ছোটো করেছে। শুনি, দেয়ালগুলো ভীষণ বকছে কাউকে শ্লীলতার সীমা ছাড়িয়ে। শুনি, বহুদূরের ট্রেনের হুইসেল ভেন্টিলেটরের ফোকর বড়ো করে কানের কোটরে হুংকার। টের পাই, বিছানার নরমটুকু অতলে ডোবার অভিসন্ধি। টের পাই, ফাঁকা কমে এলেও, যেমন ছিল না কেউ, এখনও নেই…
১৫-০৬-২০২২
(২)
বাঁক পেরোলে উঁচুতে বিদ্যাকারখানা। পেরোতে, বাঁক আরও বাঁকা হয়ে যায়। একটা বাঁকের মধ্যে আরও কত যে অবাকরা বাঁক লুকিয়ে থাকে! টুপি ওঠে, মাফলার ওঠে, কোমরের বেল্ট ও শু। আমি কি উঠেছি, যতটা ওঠা থেকে শুরু করেছিলাম! কারখানার গেটে একদল তরুণীর স্কার্ফ… নীল… খিলখিল ফোটোসেশন
পিছন ফিরলে আরও একটা-দুটো টুপি, একটা-দুটো উইন্ডচিটার। ডাকি, ‘আয়, উঠে আয়, দেখে যা শ্যাওলারঙের পাইন’। ঠোঁট কি নড়ল? না-নড়লেও উঠে আসছে বিন্দুমেরুণ। বুলবুলি বসে মাথায়। হাতে পাখির বাসা। তেরোটা ঘণ্টা বাজল কারখানায়। এ-কেমন সময়বোল! হেসে ফেরাচ্ছে পাহাড় ঢং… ঢং… তেরো
চোখ ঠিক দেখছে না। কান ঠিকঠাক শুনছে না। কখন পেরিয়ে গেল ময়ূর পেখম না-মেলে! চুপ কারখানা পেরিয়ে আরেকটা বাঁকে কারা সব জটলা, মজা, হুল্লোড়! মাঝখানে একই জায়গায় দাঁড়িয়ে আমি দেখে যাচ্ছি নীচে সোনালি স্কার্ফের গ্রামে ফেরা। বাঁকটা কখন গোল হয়ে আমাকে ঘিরেছে, খেয়াল নেই। দাঁড়িয়েই আছি…
১৬-০৬-২০২২
(৩)
উড়ছে পাখি, ঘুরছে ময়ূর। মাঝেমাঝে ঢালে নামছে-উঠছে ফুল। উড়ুউড়ু মেঘউড়ান। কিলবিল ভাবনাকলস ডানাছাড়া ওড়ে। ওখানেই সখ্যতা এক আকাশ। অন্ধকাররাতে দেখতে পাই না, ভাবতে পারি, গন্ধ যেন স্থায়ী। সঞ্চারিভাবনা তখনও ডাল খুঁজে না-পেয়ে সক্রিয়
চলছে নদী পাহাড়খাদে, ঘুরছে নুড়ি। সরছে নীচে। সচলে সরবতা শুনতেও পাচ্ছি। ভাবনা নীরবতা মেনে শুধুই নামছে না, উড়ছেও। বাঁক নিচ্ছে শব্দ, নীরবতা বাঁক নিলেও স্থানু। ছড়িয়ে পড়লে কম্পাঙ্ক কমে আসে, নীরব আরও ছড়িয়ে পড়ে সঅহম
পাখি ভোলে না কোন পথ দিয়ে উড়েছিল। নদী ভোলে না কোথায় যেতে হবে। ভাবনারা ভুলে যায় কোন অয়নে ভেবেছিল। জানে না কোথায় গিয়ে বন্দরের আলো পায় নীরবতা! আদি নেই, অন্ত ভাবাও কঠিন। শুধু জেগে থাকে, ছড়িয়ে পড়তে চেয়ে
১৮-০৬-২২
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন