কবিতার কালিমাটি ১২১ |
হারানোর বিচিত্র
কথামালা
(১)
কোনো কোনও হারিয়ে যাওয়ার মধ্যে
একেকটা দিলখুশ বসে থাকে তার একতারাটি নিয়ে
মেহেদিবনে যখন খুশি হারিয়ে যাওয়া জোনাকি জ্বলতে জানে, হারাতেও…
টৈটুম্বুর মেঘ
মাঝে মাঝেই হারিয়ে যায় ঝড়ের বুকে
গভীর সুখ লেগে থাকে তার পালকে
যেসব মেহগনি গাছ হারিয়ে যাচ্ছে প্রতিদিন
তার খোলা-দরজায় শিকল তুলে দিচ্ছে চার-দেওয়ালের চাকচিক্য
হারিয়ে যাচ্ছে তার পূর্ণচাঁদের মায়াবন্ধন
হারিয়ে যাচ্ছে তার হারানোর নিজস্ব কানন
রাগরাগিণীর মউপ্রহরে
সুরের বন্ধন আপনিই খুলে যায়
খোলা আঁচল উড়িয়ে সে হারিয়ে হারিয়ে যায়
অর্গল খোলা অনন্তের দিকে…
(২)
হারিয়ে যাচ্ছে সবুজ
অরণ্য-বনানী আর গাইতে পারছে না ফটোসিনথেসিসের গান…
বুকের ভেতর ঝরনাটা শুকিয়ে গেলে
গান হারিয়ে ফেলে নিজস্ব
নদী
নদী না গাইলে
হারিয়ে যায় উৎসবের ভাঁড়ার
নমুনা থাকে না গতিছন্দের
অহমিকার
হৃদয়পুরে চাঁদের ছলাৎ হারিয়ে গেলে
রক্তাক্ত হয়ে যায় দখিনাহাওয়ার ওড়না
একটা পারিজাত বন গুমঘরে হারিয়ে
যায়
কয়েকটা মৌলবাদী চোখের
ইশারায়…
(৩)
বৃষ্টির গল্পে,
মেঘের দখলদারি চিরন্তন…
মেঘের কথায় কিছু মনখারাপ
হাঁটুতে মুখ ডুবিয়ে বসে
থাকে
তার খোলা চোখে সব-হারানোর মানচিত্র
এখানেই হাওয়ার মোড় ঘুরে যায় রহস্যের দিকে…
মেঘলা রহস্যে একটা দেশ
অবহেলে ভেঙে যায়
টুকরো হয়ে যায় নদী
দেশ আর মনের রক্তাক্ত শিলালিপিতে
হায় হায় করে চেয়েথাকা
মানুষের চোখের জল…
জমিদারী কেতার নবাবীয়ানা আর
কালোমেঘের গল্প একসাথে শুনতে শুনতে
৭৫টা বছর নষ্ট হয়ে
যায়
একটা দেশ হারিয়ে যায় তার সম্প্রীতির ঘরানা থেকে…
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন