কালিমাটি অনলাইন / ৭৮
এবছর রবীন্দ্রনাথের ১৫৯তম জন্মদিনটি সবার অলক্ষ্যে নীরবে নিভৃতে পালিত
হলো। কিছুদিন ধরে সারা বিশ্ব জুড়ে ভয়ংকর করোনা ভাইরাসের যে ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ চলেছে,
তাতে প্রত্যেককেই থাকতে হচ্ছে নিজ নিজ ঘরে, কেননা বাইরে বেরোলেই সংক্রমণের আশঙ্কা।
ইতিমধ্যেই মানুষের মৃত্যুমিছিল মানবসমাজের অস্তিত্ব পর্যায়ে একটা প্রশ্নচিহ্ন তুলে
ধরেছে। তাই নিজেদের সুরক্ষিত রাখার জন্য স্বেচ্ছা গৃহবন্দী মানুষ একদিকে যেমন শারীরিকভাবে
পারস্পরিক সান্নিধ্যে মিলিত হতে পারছে না, অন্যদিকে তেমনি আয়োজন করতে পারছে কোনো উৎসব
বা সমাগম। সেজন্য স্বাভাবিক কারণেই মনে অতৃপ্তি ও দুঃখ থাকলেও সবাই অসহায়। তবে আমার
মনে হয়, এবছর রবীন্দ্রজয়ন্তী প্রকাশ্যে জনসমাগমে
পালন না করে ভালোই হয়েছে। কেননা বারোয়ারীভাবে অনুষ্ঠান করে অনেক ক্ষেত্রেই যথার্থ গুণী
ও মহৎ ব্যক্তিত্বের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা নিবেদন
করা যায় না। যেমন, রবীন্দ্রনাথের বিশাল রচনাসম্ভারের পাঠ ও সারমর্ম অনুধাবন ব্যতিরেকে, তাঁর আদর্শ ও ভাবনার
যথার্থ অনুশীলন না করে, তাঁর উদার আন্তর্জাতিকতাবোধ এবং মানবতাবোধকে অনুসরণ না করে
রবীন্দ্রনাথের জন্মদিন পালনের কোনো অর্থ হয় না। এবং সেইসঙ্গে একথাও মনে হয়, রবীন্দ্রচর্চায়
শুধুমাত্র রবীন্দ্রনাথের বিশাল সত্ত্বাকে অনুভব করলেই তা শেষ হয়ে যায় না, বরং নিজেদের জীবনে যদি তা প্রয়োগ না
করতে পারি, তবে সেই চর্চাও অসম্পূর্ণ থেকে যায়। ভাবলে খুব কষ্ট হয়, এই পুঁজিবাদী সমাজব্যবস্থায়
আরও অন্যান্য বস্তু, বিষয়, ভাবনা ও ভাববাদী দর্শন
তথা মতবাদ যেমন আজ পরিণত হয়েছে পণ্যে, অনুরূপে ‘রবীন্দ্রনাথ’ নামক প্রতিষ্ঠানটিও
পর্যবসিত হয়েছে নিছক পণ্যে। এবং এটা অত্যন্ত লজ্জা ও পরিতাপের ব্যাপার, রবীন্দ্রনাথের
সৃজন আজ অনেকের কাছেই শুধুমাত্র বিনোদনের উপকরণ রূপেই গৃহীত হয়ে থাকে। আর তাই, রবীন্দ্রজয়ন্তী
উপলক্ষ্যে আয়োজিত প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে অহেতুক সাজসজ্জা, আড়ম্বর, শব্দদূষণ, দৃশ্যদূষণ এবং অন্তঃসারশূন্য
জাঁকজমক মনকে তৃপ্তি দিতে পারে না।
আমি
একান্তই ব্যক্তিগত ভাবনায় মনে করি, রবীন্দ্রনাথ একইসঙ্গে আমার শিক্ষাগুরু, সাহিত্যগুরু,
সংস্কৃতিগুরু। সেইসঙ্গে আমার সামাজিক দায়বদ্ধতা, রাজনৈতিক দায়বদ্ধতা এবং মানবিক দায়বদ্ধতার
পথপ্রদর্শকও তিনি। পরবর্তী পর্যায়ে আরও অনেক মনীষীর চিন্তাভাবনা, আদর্শ ও মতবাদেও প্রভাবিত
হয়েছি। এবং রবীন্দ্রনাথের ভাবনার সঙ্গে সেইসব মনীষীর ভাবনার কোনো বৈষম্য আমি খুঁজে
পাইনি। তাঁদের সবার ভাবনা ও মতবাদ আমাকে প্রতিনিয়ত সমৃদ্ধ ও ঋদ্ধ করে চলেছে।
আমাদের
সঙ্গে যোগাযোগের ই-মেল ঠিকানা :
kajalsen1952@gmail.com / kalimationline100@gmail.com
দূরভাষ
যোগাযোগ :
08789040217
/ 09835544675
অথবা
সরাসরি ডাকযোগে যোগাযোগ :
Kajal Sen, Flat 301, Phase 2,
Parvati Condominium, 50 Pramathanagar Main Road,
Pramathanagar, Jamshedpur 831002, Jharkhand, India.
আমাদের তো একটাই ঠাকুর রবিঠাকুর, আমাদের একটাই বিবেক বিবেকানন্দ, আমাদের একটাই নেতা নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। এ ছাড়া আর কি আছে আমাদের। রবীন্দ্রনাথ রোমারোলাকে বলেছিলেন, ভারতকে জানতে হলে বিবেকানন্দকে জানতে হবে। তাই রবীন্দ্রনাথও ভারতীয় আত্মার প্রকাশ বলে আমি মনে করি। তাঁর মানবিকতা, তাঁর দেশপ্রেম, তাঁর স্বদেশভাবনা এবং জাতীয়তাবোধ আজও আমাদের দীক্ষা দেয়।
উত্তরমুছুনশুধু শিক্ষা সাহিত্য ও সংস্কৃতির বাইরেও আমরা এক অনন্য রবীন্দ্রনাথকে পাই , যার সমাজ সংস্কার মূলক দর্শন ও ভাবধারা আজ এই অসহিষ্ণু পরিবেশে আমাদের ক্রমাগত দংশন করে। বিশেষ করে জমিদার রবীন্দ্রনাথের পঞ্চায়েত ব্যবস্থা ও কৃষক দের উন্নত জীবনধারার জন্য কৃষি বিষয়ক বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তি গত শিক্ষা প্রদান , যার সূচনা হয় শিলাইদহে , তার জুড়ি আজ এই গ্লোবালাইসেশন এর যুগে মেলাও ভার । সাহিত্য , শিক্ষার বাইরেও আমাদের অনেক কিছু শিক্ষণীয় রাজনীতিবিদ বলা ভাল জননীতিবিদ রবীন্দ্রনাথের থেকে ।
উত্তরমুছুনসম্পাদকীয়তে যথার্থ বার্তাই তুলে ধরা হয়েছে। 'রবীন্দ্রনাথ' আমাদের অনেকের কাছেই একটা অভ্যাস মাত্র। অভ্যাসে অনুভূতি খুব একটা প্রকট থাকে না।
উত্তরমুছুনরবীন্দ্রনাথের ব্রাক্ষ্মধর্ম উন্নত ধর্ম চেতনায় সমৃদ্ধ। সেও তো বিলুপ্ত। নাস্তিক্য ভাবধারার প্রতি তাঁর সমীহ ছিল।মে পণপ্রথার প্রতি আঙুল তুলেছিলেন তা আরো শ্বক্তি বাড়িয়ে সমাজে স্থায়ী হয়েছে। বাঙালি তাকে শুধু জলসার কবি বানিয়ে রেখেছে।
উত্তরমুছুনসম্পাদকীয় এর সঙ্গে একমত
উত্তরমুছুনহক কথা
উত্তরমুছুনএবারের কালিমাটি সংখ্যা খুবই ভালো হয়েছে কাজলদা। পড়বার পর মন আচ্ছন্ন হয়ে গেছে।
উত্তরমুছুনহ্যাঁ কাজলদা, আমরা, যারা লেখালেখি করি ,তাদের অনেকেরই প্রাণের ঠাকুর রবীন্দ্রনাথের মুখকে স্মরণ মনন ও যাপনের মধ্যে দিয়ে চলতে হয়। আর তাই রবীন্দ্রনাথই,হ্যাঁ,তিনিই আমাদের নীরব নিয়ন্ত্রক।।
উত্তরমুছুনঅন্তরের কথা
উত্তরমুছুন-