কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

বৃহস্পতিবার, ৩ জানুয়ারী, ২০১৯

উমা মণ্ডল




সভ্যতার  নগ্নঘুম  
 

(১)


শীত চলে গেছে ভেবে গার্হস্থ্য লক্ষীর হাঁড়ি জানালা খুলে দেয় 
হুড়মুড়
 করে  ঢুকে পড়ে ধুলো-বালির রোদ 
অনেকদিন
 পর একটু তাত দেবে বলে পুরনো সিন্দুক থেকে 
উইলের
 গিঁট খোলে, 
হলুদ
 হওয়া পাতায় জলছাপ 
শুকিয়ে
 যাওয়া সেই  ছাপের প্রান্ত রিনরিন করে ওঠে শিরার ঠোঁটে 
হরমোনের
 ক্ষরণ বাড়তে থাকে 
কপালের
 নদী ঘাম হয়ে বয়ে যায়... 


(২)


জননীর পিঠে সিমেন্টের বস্তা 
তার
 ভিতরে সদ্য জন্ম নেওয়া শিশুর নিথর শরীর, 
একটা
 স্মৃতি-সৌধ গড়ার সখ  ইহ-চৌকাঠে পা পড়তেই 
পোড়াইট
 দিয়ে গাঁথা মালা আর চন্দনের ইচ্ছা-চিহ্ন 
একটার
 পর একটা ঝুরঝুরে মাটির ডি-এন-এ বন্ধন, 
ঈশ্বরের
 পাঞ্চজন্য জেগে ওঠে... 


কুরুক্ষেত্রর
 ওপর সিরিয়ার চাঁদ উঠে গেছে 
খাবলা
 মাংস ঝলসে যাক জ্যোৎস্নার নীল তেজে, 
নরম
 দুধেল শরীরের স্বাদ বাজপাখি জানে  
আর
 জানে রাষ্ট্র-তন্ত্রের দালালের জিভ 


(৩)


উইলের গিঁট বাঁধা সুতো একগাদা ফাইলের মাঝে 
হারিয়ে
 গেছে  
কাঁটাতারের
 ওপর গালে হাত দিয়ে পাশা খেলছে 
মহাভারতীয়
 চাকা, 
একঢোক
 মদিরায় অক্ষরের সলিলসমাধি ঘটে গেছে... 
ইচ্ছাপূরণের
 মেলোডি গাইছে ধন্বন্তরির নাভি-বিন্দু 
কী
 ধারালো সমাপ্তি! 
কেটে
 কেটে যায় ঐতিহাসিক পাখির নরম ডানা 
তার
 পালকের অভিশাপ কে মুছে দেবে? 

জল
 মুছে নাও পৃথিবীর আঁচল, একটু তফাতে বসো' 
শীত
 চলে গেছে ভেবে পুরাণকে জাগিয়ো না 
গিঁট
 বাঁধো প্রত্যেক ধ্বংসস্তূপের গোড়ায় 
শিশুর
 মুণ্ডহীন দেহ এক-একটি যখ 
ব্যথা
 লাগে ঘামে, নদীতে 
নীলনদ
 লুপ্তপ্রায় আগ্নেয়গিরি হয়ে বেঁচে থাক 
পৃথিবীর
 গর্ভে 
ঘুমিয়ে
 থাক, ঘুমিয়ে থাক চোখের কাজল 
মা
 কোলে... 


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন