নেহা, হে তৃষা...
(১)
দীঘল তরুর মত বেদনার আঁকিবুঁকি রেখাতে
এঁকেছি শ্যাওলার শান্ত সুরভিত সুর
তবু পদ্মফুল ছাপিয়ে চলে আসে লোবানের করুণ ঘ্রাণ
বেড়ে যায় বিষের প্রকোপ ধীরে ধীরে
প্রেম মানেই তো ক্ষতবিক্ষত হৃদয়!
ঝাপসা হয়ে যায় শ্বেত সারসের ছায়ায় শেষ দৃশ্যপট
অবগাহনের নীলিমায় আঁকা হয় এক একটি ছেঁড়া ছেঁড়া অনলে
মিথ্যেমাথুর...
(২)
সঙ্গীতের এক প্রাচীনলিপি পেয়েছি
ভোরের শিশিরের শব্দ, শুকনো পাতার পতনের মর্মরধ্বনি শুনতে
পাই
ঝর্ণার গুঞ্জন শুনবো বলে গিরিখাতের কিনারে দাড়িয়ে ছিলাম
জ্যোৎস্নার প্লাবনে ভাসছিলো রুপালী ঝর্ণা, মায়াবীনদী
একঝাক বলাকা ইশারায় ডেকেছিল
নাইটেঙ্গেলের পাখায় ভর করে ব্যালে নাচতে নাচতে
খাঁদের বুক থেকে ঝুরঝুরে বালির মত উড়ে যাই
স্বপ্নে বন্দী আমি...
আমার হৃদয় নোঙর করে ভোরের সোনালী আভায়।
(৩)
সম্মোহিত হয়ে আছি
পড়ে আছে একলা আকাশ
এখন হ্যালুসিনেশনে লাল লিটমাস, নীল লিটমাস
ছেঁড়া ছেঁড়া অবয়ব গোধূলির বালিয়াড়ি ঝাউবনে
বাদল সন্ধ্যার দুরন্তপনা গিয়ে মিশে গেছে ফেনায়িত তরঙ্গে
যেমন রৌদ্রের নৈঃশব্দ্য জলরং এঁকে দেয় গুল্মবনের গায়ে
যেভাবে তৃষ্ণা জেগে থাকে চঞ্চুদের বেতফল চোখে,
নগ্নচিকন সাদা মনে...
(৪)
কাঁঠালচাঁপা রঙের সুরভি এক সন্ধ্যায়
হাঁটু গেঁড়ে উল্কি আঁকছি তোমার চোখের ঘোরের
জ্যোৎস্নায়
বুকের ভিতর কাসপিয়ান রহস্যের অন্ধকার
এতটুকু আশ্বিন আসেনি এ হৃদয়কুলে
অথচ যত অবাধ্য ভাবনা থেকে থেকে বর্ষা নামায়
চোখে...
চোখ! সে তো প্রবাহিত নদী
রক্তিম নলীতে প্লাবন হলেই বাঁচে!
(৫)
আমি দেখেছি তোমার দৃষ্টির গভীরতায় খেলা
করে বৈকুন্ঠের নীল
একের পর এক সুতলিতে পাক খেতে খেতে গেড়ো
লেগে যায়
দূর অনন্তে কোথাও একট -দুটি তারা খসে পড়ে টুপটাপ
স্রোতস্বিনী ভাসিয়ে নিয়েছে যেমন পলকা বিলাস
তবু প্রথম যেদিন তোমাকে দেখেছি
নীলাভ জোছনায় বিষাদের ওড়নার মতো
নদীতে ধীরে ধীরে মিলিয়ে যাচ্ছো
তোমার চোখের জলের রোদেলা স্বপ্নে আমিও
সেদিন ভেসেছিলাম মায়াবী ভেলাতে।
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন