কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

বৃহস্পতিবার, ২৫ মে, ২০১৭

শুক্লা মালাকার

যাত্রী বদল

হতচকিত তুফান মাঝে মাঝেই আছড়ে পরে
মাস্তুলে, পাটাতনে
একটা মস্ত ঢেউয়ের চাপড়ে
যে কোনো সময় খুলে যাবে স্বপ্নময় সৃষ্টি, থেমে যাবে বাণিজ্য
সৈকতময় ছড়াছড়ি হবে প্রেমের খেয়াল
বিজয় কথা

বেঁচে থাকারও আছে কষ্ট বিচ্ছেদের মতো
অস্তিত্বের মেঝেতে কান পেতে শুনি
বুড়ি চাঁদ ভেসে যায় নি বেনোজলে

শূন্য থেকে ঝরে পড়া শব্দ
নীল সমুদ্রের লোনাজল, মুক্ত মলিনতা আর
আলোছায়াময় হেমন্ত জুড়ে জুড়ে
কাছি বানাই-
বেঁধে ফেলি জনাকীর্ণ এক দ্বীপের ঝাউডালে,
বসন্ত শেকল হাতে নিয়ে ভীড় ঠেলে উঠে আসে নাবিক
সিগাল উড়ে উড়ে শিষ দিয়ে গেল
যাত্রী বদল হয়ে গেছে।


জননী জন্ম ভূমিশ্চ...

নিজের ছায়াকে তুমি ভুলে গেছ এই তো সেদিন তোমার বুকের নরম ছোঁয়া আমাকে পথ চলতে শিখিয়েছিল সামনে পিছনে ভয়ঙ্কর মুখোশ রঙা শ্বাপদ কীভাবে গিলে খায় জীবন, শুনিয়েছো-
তোমার পিছনে ছিল গৃহস্থালীর অন্তহীন কর্মমিছিল, তবুও তুমি আমার ব্যক্তিত্ব ঝকঝকে করে তুলেছ একতাল কালো মাটি দিয়ে গড়েছ আমায় তোমার নিষ্ঠা,  বল্গাহীন আবেগে নীতিবোধ জাগিয়েছিলে যখন আমি সদ্য কিশোরী আমি পড়েছি তুমি হাত ধরে উঠিয়েছো আমায় তোমার এলোমেলো রুক্ষচুল উড়েছে, অথচ আমায় পরিপাটি করে সাজিয়েছো তুমি আমার বুকে ভরে দিয়েছো কৃষ্ণচূড়ার স্পর্ধা
তারপর একদিন, কিংবদন্তীর নৌকোয় চাপিয়ে অচেনা মাঝির হাতে সঁপে দিলে সেই থেকে একা চলেছি উত্তপ্ত দিনে ফুটিফাটা মাঠ পেরিয়েছি, ভরা বর্ষায় বুজিয়েছি খানাখন্দ কপট হাওয়ার গন্ধে মিশিয়ে দিয়েছি স্বপ্নের রেণু রক্তচন্দনের আলপনা বুকে এঁকে ছুটে যেতে চেয়েছি তোমার ছায়ায় তুমি সরে সরে গেছ তোমার হাতে নতুন বাঁশী, বাজিয়েছো আমার কাছে তার সুর পাঠাওনি
নীল শূন্যতায় আমার গাছ শীর্ণ হতে হতে ছায়া সরিয়ে নিয়েছেবল্লমের মতো তীব্রগতিতে নেমে এসেছে রোদ্দুর, পুড়িয়েছে, তুমি দেখতে চাওনি নিত্য ভেঙেছি পাথর-মাটি, ফুসফুসে ভরেছি বিষ আমার সেই নিমগ্ন বেদনায় তোমার আকুলতা আর প্রলেপ লাগায় নি কেন বলতে পারো?
অবশেষে, তোমার কৃষ্ণচূড়া হয়ে জঞ্জাল ভরা দিন আবর্জনার স্তূপে ফেলে স্ফটিক হলাম উজ্জ্বল, স্থির অন্যের নয় আমারই জীবন, বিসারিত করতে চাইলাম আকাশে আকাশে তুমি মুখ ঘুরিয়ে নিলে ওদিকে তখন তোমার দোদুল্যমান মাঝি বিস্ফোরণের হাওয়া থেকে আগুণের পালক তুলে আমায় ছুঁয়ে দিল
জ্বলন্ত অঙ্গার থেকে কাঠকয়লার রূপান্তর এত সহজ আগে জানি নি



0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন