ক্রিসমাসের কবিতা
সেভাবে ক্রিসমাস এলো না এ বছর।
তবে শীত খুব জাঁকিয়ে পড়েছে,
আর নোনাধরা দেওয়ালের কানা বেয়ে
উঠে গেছে পোকাদের লালারস
শরতের মাধুকরী পেরিয়ে।
এখানে মাথা নিচু ক’রে হাঁটাহাঁটি –
পপলারে, অ্যাস্পেনে উঁচু নয়
এ শহরের অহঙ্কার,
তবু ঠোঁটের কোণে লা গেকোণ্ডার হাসির মতো
ভাঁজ খুললেই জ্বলে উঠছে আস্ত একটা্ ডগলাস ফার,
আর ক্যারলে চ্যান্টে সারারাত উদ্দাম নাচছে
বো ব্যারাকের বাড়িগুলো।
কম পড়ছে দিনগুলো, ধুলোখেলার
টান পড়ছে গল্পে, সাবেকী ঠাম্মাদের ছেড়ে
তবু জড়ো হচ্ছে ছোট ছোট ইস্কুলজীবন,
হাত ছাড়ছে মা-র, চলকে পড়ছে সিলেবাস
বিলেতী প্রচ্ছদে,
আর কী আশ্চর্য, দেখুন রাণী আঁতোনিয়েত
কেক খাচ্ছে, ওরা কেক খাচ্ছে!
আর রোগা হচ্ছে চায়ের দোকানের হাত-পা
রাতারাতি হারিয়ে যাচ্ছে ম্যাগডালেন
বস্তিকে বস্তি মোজা ঝুলিয়ে কেটে যাচ্ছে রাত,
সকাল হলেই শক্ত হছে ভিত
সন্ত নিকোলাসের হাড়গোড়ে...
তারপর বছরভর শীত-গ্রীষ্ম-গরিবি-বেকারি পেরিয়ে
একসময় দরদামে শান্ত হন শয়তান,
যখন শ্যাম্পেনে, জিনে মদির হয় রাত
যখন পেরেক গাঁথা হয় গেরস্থালি গথিকে
আর আমি চুমুতে চুমুতে ভরিয়ে দিই তোকে,
সঙ্গমের নীল আলোয় শোওয়াই
ভারতবর্ষের মানচিত্রের আকারে,
চিনিয়ে দিই এই আমার প্রণয়ী, আমার ধাত্রী,
আমার শেষ নৈশাহারের সাক্ষী...
এই বাজারে কী আর হয় বল, মাত্র তিরিশটি রূপোয়?
আবহাওয়ার খবর
আকাশ
অংশত মেঘলা হয়ে পড়ছে...
হাওয়া মোরগের সাথে সাথে
খুব ভোর ক’রে উঠছে
আমার তোমার
আমাদের ব্যক্তিগত সময়ঘড়ি...
গত চব্বিশ ঘণ্টায় ভালোবাসাবাসি সেভাবে হয়নি
আর চৌকাঠে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে
কিছু অভ্যেসী আদুরেপনা, তবে
ঘরে ঢোকেনি।
বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা
খুব বেশি হ’লে
শতকরা একশ’ – গত জন্মের
কোনও এক
হঠকারী দুপুরে
তার হিসেব লেগে আছে – আর
সবচেয়ে কম
ঠিক মনে নেই – এ জন্মের
রাস্তাঘাটে
তার একবাটি ভিক্ষে রাখা।
দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
বালিশ-তোশক-খেলনাবাটি জড়িয়ে
কোনো মতে হিমাঙ্কের ওপরে,
আর সর্বনিম্ন
স্বভাবগত শীতলতার কাছাকাছি।
আমরাও হাত ছোঁয়াছুঁয়ি পারতপক্ষে এড়িয়েছি,
চোখাচুখি হ’লে খবর নিয়েছি
উদাসীন অনাত্মীয়ের মতো,
ঘর ভাগ করেছি অবাক দেওয়ালে – শরীর বয়সী হ’লে
বিভাজিকা যেমন অথবা
ঝগড়াটে পড়শি দেশের মাঝে
সীমান্তরেখা।
আর মনে রেখেছি চাতকের
গল্পটা –
গত চব্বিশ ঘণ্টায়
বৃষ্টি হয়নি।
ভালো লাগলো কবিতা
উত্তরমুছুনdhonnobad...
মুছুন