কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

মঙ্গলবার, ৮ মার্চ, ২০২২

মোনালি রায়

 

অংশু মারা গেছে

 

স্বস্তি




 

‘সারা ঘরে শুধু অংশুর গন্ধ ঘুরে বেড়াচ্ছে’

 

একবার টেলিফোন।

কয়েক মিনিট। পারাপার। ব্যস। 

দিন প্রতি ২৩ ঘন্টা ৫৩ মিনিট, বন্ধ দরজা। বাধার দেওয়াল। মুখোমুখি। মূর্তিমতি কালী। রক্ত পা। রক্ত চোখ।  

সে কখনো ভালবেসে দেখে, হারানো আয়না। কখনো রাগে আঁচড়ায়, কামড়ায়।

কখনো, ঘর থেকে বেরিয়ে রেলিং ঘিরে দাঁড়ায়। মেঘের নীচে চেয়ার পেতে বসে।  ঘর ডেকে নেয়। ভয়ে।

সে, ফোন, কালী। কালী, ফোন, সে।

ঘর বারান্দা রান্নাঘর ড্রয়িংরুম। প্রদক্ষিণ করতেই থাকে

অন্য কারো কাছে পৌঁছয় না।

 

নো




 

‘বিছানার তোষকের ওপর অংশুর শরীরের বায়বীয় ছাপ থেকে গেছে’

 

প্রথম যে নালক ও চেনা কাঠগোলাপ, পাপড়ি ছিঁড়ে ছিঁড়ে তার সামগান

বন্ধ দরজাদের অন্ধকার বিরতি থেকে পলাতক চপল ধুম কমল প্রভৃতি

এবং খেলা শুরু না হতে লাল ঘোটকীর দল তাকে নিয়ে গেছে জল জঙ্গলের সুদূর পাড়ে, চিকন জমিতে

মুগ্ধতার মোলায়েম দাগে দীর্ঘ  ডুবেছে গোধূলি। ক্ষুরের আঁকিবুকি খানিক গিলেছে খরা বন্যা আকাল

 

পরাবাস্তবতার বায়না কাটিয়ে ওঠ পিয়ানো ঘিরে তবু, তার আসা-যাওয়া লেগেই রয়েছে

 

বৃহস্পতি




 

‘তার জীবন তাকে ঘিরে শুধু এখানেই ছিল’

 

কুয়াশার দিকভুল, জাফরিহীন ঘরে ঝুলে আছে। কেউ তাকে চেনে না। সে নিজেও না

ধারালো মুষল ফুঁড়ে দিচ্ছে পায়ের পাতা। চেন নামিয়ে মাংস খুবলে নিচ্ছে গরম শিক। স্নায়ু ঘেঁটে বিষমুক্ত সাপ বিশ্রামের তোড়জোড় করছে

অথবা, এসব কিছুই হচ্ছে না

চালচিত্রের মায়া থেকে সবেগে বেরিয়ে যাচ্ছে এঁটোকাপ গ্লাসকাট রঙগুদাম

...তার হাইফেন' বারান্দার আর কোনও ক্ষতিবৃদ্ধি হয় না

আঙুলে আঙুল জড়ায় না, কিছুতেই

 

দধাতু




 

‘শরীর থেকে কিছু ধুলো খসে হাওয়াতে ভেসে বেড়াচ্ছে এখনও’

 

সংকীর্তন শেষে একা রয়ে যায় অষ্টম প্রহর

তীক্ষ্ণ নাম গান, জ্যান্ত কোষ ঝাঁঝরা করে উঠে যায় দূরের খেয়ায়

বালিঝড় নামিয়ে আনে রাত

 

উঁচু ডাল লক্ষ্য রাখে শিকার

মুক্তি পতাকা, গাঁথা

অতি-শীত-আতপ ছাড়া সকল বাহুল্য খসে গেলে

ন্যাকড়ায় মোড়া অথর্ব প্রাণহীনতা, ইন্দ্রিয়হীন বোধবিকারহীন

তবু, ভেজা মাটি উসকে দেয় বীজতলা

কাঁটাদের ঘুরে দাঁড়ানোর স্পৃহা

 

‘বসন্ত আসছে’

 

[শিরোনাম ও সকল উদ্ধৃতি : অশোক তাঁতী]

অংশু মারা গেছে - এই শিরোনামে অশোক তাঁতী ঝুরো গল্প লিখেছিলেন, যে গল্পের প্রথম বাক্য ছিল - অংশু মারা গেছে।এখন আবার ঘরদোর পরিষ্কার করতে হবে...।চিত্র শিল্পী মোনালী রায় ঐ প্রথম বাক্যটি ব্যবহার করে অশোক তাঁতী স্মরণে নিজের লেখাটি লিখেছেন।


1 কমেন্টস্:

  1. এই গদ্যের প্রতিটি ছবি মোনালীর আঁকা, ও নিজে যেহেতু একজন দক্ষ ছবি আঁকিয়ে, লেখার সাথে মানানসইভাবে ওর তুলি কথা বলেছে
    ধন্যবাদ কি জানবো জানা নেই মোনালী

    উত্তরমুছুন