কালিমাটি অনলাইন

ত্রয়োদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১৩৭

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

ত্রয়োদশ বর্ষ / দশম সংখ্যা / ১৩৭

শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৫

তৈমুর খান

 

কবিতার কালিমাটি ১৫২


আর্তনাদ

সনাতন আর্তনাদ আজও কেন ওঠে?

তোমাকে বহন করি ক্রোধে ও স্বপনে

সাম্রাজ্য ধ্বংস হয়, উত্থান হয়

আমাদের মৃত্যু হয়, পুনরায় বাঁচি

 

দিনান্ত গ্রহণ করো স্মৃতি ও বিস্মৃতি

রাত্রির কাছে সব পোশাক খুলে শোব

কালো হরিণ কবে উজ্জীবিত করেছিল

শিকারের ভাষা?

মাংসে তবু রুচি ছিল একদিন

শিস দিয়েছিল প্রথম আগুন

 

পরস্পর সেঁকে নেওয়া আমাদের মন

উত্তুঙ্গ জলের কাছে পিপাসা-চুম্বন চেয়ে নিয়ে

এই তীর্থক্ষেত্র রচনা

 

আর্তনাদ তবুও বিরামহীন কাঁপে

ভাঙাগড়া পুলকে-পার্বণে পুরুষ ইচ্ছার স্রোত তার

 

দূরত্ব

হাত দিয়ে ওর হাত ধরি

মনকে কিছুতেই ধরতে পারি না

আমার দিন ফুরিয়ে যায়

 

দুয়ার খুলেই রাখি

জ্যোৎস্না ঢোকে মনের জানালায়

আমার আকাশটুকু ওকেই শুধু দিই

 

জলচর পাখি উড়ে গেলে

নিজের নিঃসীম নৌকাখানি দোলে

লন্ঠনে মাস্তুলে গোলশূন্য পাক খায়

 

রোজ আমি বিনয়ের কাছে যাই

রোজ নতমস্তকে করুণার উচ্চারণ শিখি

দেশ ও বিদেশ থেকে বিপ্লবেরা ফিরে আসে ঘর

আমি শুধু দূরে দূরে চলে যেতে থাকি

 

স্মৃতির ঘরে

স্মৃতির ঘরে ওকে ডেকে বসাই

আজ বিনোদন নেই, কাতর অব্যয়

আর যাযাবর স্বপ্ন

 

নিয়ন্ত্রিত সামাজিক জীবনের কিছু ক্রিয়া

নিঃস্ব বিশেষণ

সবাই এসেছে সঙ্গে তার

 

তোমরা কেহই বৃদ্ধ হওনি?

আমি তো নিরালম্ব, ব্যর্থ ধীবর

শূন্যে ফেলেছি জাল, মৎস্যহীন

কিছু উড়ন্ত মাছের দৃশ্য, অন্তহীন জল

গভীর মহাকাশ আর ত্রিকালপ্রাজ্ঞ বক

 

সে এসে একে একে খুলে দেয় নদীর উৎস

অথবা উৎসব

রোদের হাসির মতো বিবাহের তাপ

 

আমি নৌকা বানাবার ভাষা খুঁজি

ওকে নিয়ে পার হব মহাকাল-নদী

দু-একটি যৌবন-গাছ আমার অন্তর্গত হাত নাড়ে

আমি পরামর্শ পাই আমারই স্মৃতির ঘরে

 

প্রাচীন স্পর্শের সেই বিশেষণ উচ্চারিত হলে

বুঝতে পারি

বয়স কখনো বৃদ্ধ করে না আমাদের

আমরা যুবকজলে দেখি যুবতীর স্নান


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন