কবিতার কালিমাটি ১৩১ |
স্বপ্ন
সুদীর্ঘ পথের ক্লান্তি নিমেষেই দূর হয়ে যায়;
একটি ভবনশয্যার অ্যামারিলিস-রব আকাশের সমগ্রতা স্পর্শ করে। ভবনটির উত্তরে রন্ধনশালার
অস্পষ্টতার ভেতর পদ্মের সরবতা। ব্যাঙ্কোয়েট পরিকল্পনা সংশোধনের জন্য মহারাজ অদৃশ্য
হলে পদ্মপ্রজ্ঞা কমলারং ছড়াতে ছড়াতে ধীরে ভবনটিতে প্রবেশ করে। আমার করতলে পদ্মদল
সাইজমিক তরঙ্গরেখা আঁকতে থাকে; অগণিত রেখার নীলত্বের ভেতর আমি নিমজ্জিত হই এবং উন্মগ্ন
হয়ে কিথারার ধ্বনির প্রিজমে মিশে যাই। ভবনটির পশ্চিমে দুএকর জমি; এ জমির পশ্চিম প্রান্তে
দীর্ঘ একতলা ভবন স্বপ্নপ্রকল্পের দেশীয় সরঞ্জামে পূর্ণ; পূর্ব দিকে এক টুকরো অরণ্যের
বিশ্বাস ঘিরে জেগে উঠেছে হলুদ ফুল। আমরা হেঁটে হেঁটে ফুলের গহন সঙ্গীত শুনি। পদ্মপ্রজ্ঞার দীপ্তি সমস্ত প্রাঙ্গণে ছড়িয়ে রাখে পাহাড়ি ঝরনার
কথকতা।
অষ্টম দশকের পেন্ডুলাম
আমার গহন অস্তিত্বের শেহেরাজাদ মৃত্তিকাশ্রিত বাবার
ঠোঁটে নদীর ঔদার্য এঁকে দেয়; তাঁর চোখে ফিরে আসে কর্পূর শাখার স্মৃতি--শীতলতম ফুলের
প্রকৃতি বদলে যায়, আমার সুগুপ্ত বাসনা জুঁই কম্পনের সাথে যোজিত হতে থাকে--দীর্ঘ দিন
পর বাবার মৌন ভেঙে যায়, দূর থেকে ভেসে আসা শ্যামকল্যাণ তরঙ্গ আমার শরীরকে অষ্টম দশকের
পেন্ডুলামে রূপান্তরিত করে।
অমৃতের বুদ্বুদ
দুপুরে গার্বেজ ট্রাক রাজপথে দীর্ঘস্থায়ী দুর্গন্ধ
ছড়াবার পর আমার সাথে একজন রিকশাওয়ালা হকার-স্টলের সামনে এসে দাঁড়ান; তাঁর জন্য কোনো
দেবতা কূর্মরূপ ধারণ করবেন না বলে তিনি এককাপ
ইক্ষুরসে অমৃতের বুদ্বুদ আবিষ্কার করেন। এ রাজপথে বিত্তহীনের পানীয় দুর্লভ।
তিনটি কবিতাই সুন্দর।
উত্তরমুছুন