কবিতার কালিমাটি ১১৬ |
পড়া
আমি পড়ি তার
সিঁথি, চোখদুটো
নাকে ঢাকা গোলাপী
মাস্ক
পড়ে নিই হাতের
চুড়ি, পরনের শাড়ি
লুকিয়ে লুকিয়ে
পড়ে ফেলি
শাড়ির পাড়,
পায়ের গোড়ালি।
সেও আমাকে পড়তে
থাকে
পড়ে নেয় আমার
চুল-দাঁড়ি, আমার দীর্ঘতা
আমার ঘিলু,
বুকের হৃৎপিন্ড, প্রশ্বাসের দীর্ঘতা।
অথচ আমরা কেউ
কাউকে
শেষ পর্যন্ত
বুঝে উঠতে পারি না!
স্কুলের শেষ
ঘন্টা বাজে।
ঘরে ফিরি,
কালিমাখা আঙ্গুল,
ঝাপসা চোখ
আর ব্যাগের
ভেতরে স্কুলের সাদা শূন্যখাতা!
কাচের গোলক
‘জলে ভাসা কাচ’
উড়ে আসছে মন্দিরের মঞ্চসজ্জা থেকে।
যমুনার থেকে
রামের বায়ুমন্ডল ছেঁকে নিচ্ছে চতুর কিছু জেলে,
জল-ধর্মে মিশে
যাচ্ছে গেরুয়া জন্ডিস!
নির্মাণের নামে
ভেঙ্গে পড়ছে চূড়ার গম্বুজ
নিরপেক্ষতার
নামে দূরে সরে যাচ্ছে সুজন স্বজন।
একটা আত্মহত্যাকারী
ছুরির ফলাকে
পেজমার্ক করে
রাখা হয়েছে ইতিহাস বই-এর ফাঁকে -
আমাদের বর্ণমালাগুলো
এখন ভয়ংকর রকমের আত্মঘাতী!
পবিত্র ধর্মস্থলের
স্থাপত্যে দিনমানে অস্থির ভঙ্গুরতা,
টুকরো টুকরো
ছিঁড়ে যাচ্ছে মানচিত্র
রক্তাক্ত দুটো
পা, ভেঙ্গে ছিটকে পড়ছে গোলোকের কাচ!
জ্যামিতিক ঘরবাড়ি ও নিরালম্বতা
জ্যামিতিক বাক্সের
ভেতরেই অধিকাংশের ঘরবাড়ি!
খোপ খোপ বাক্সগুলোর
ভেতরটায়
সাজানো আয়না
ও ড্রেসিংটেবিল -
এগুলোর সামনে
দাঁড়িয়ে
প্রত্যেকেই
নিজেকে সুন্দর ভাবে!
সবইকে ঘিরে
থাকে এক একটা অনুগামী বৃত্ত,
যা সবাই সুবিধামতো এঁকে নিয়েছে নিজস্ব কম্পাসে।
কখনো কখনো জ্যামিতিক
বাক্স থেকে
বেরিয়ে আসতে
বললেই
কারণে অকারণে
ভেঙ্গে যায় কম্পাস,
মুখ থুবড়ে পড়ে
থাকে পেন্সিলের শীষ,
হাওয়ায় ত্রিকোণ
উড়তে থাকে জ্যামিতির খাতা।
আতসকাচের রশ্মি
বেয়ে সূর্য নেমে আসে অবুঝ ড্রয়িং রুমে,
চোখের জলে সামাজিক
ভিজে যায় শূন্যছাপ খাতা!
নিজস্বতায় আঁকা
লন্ডভন্ড জ্যামিতিক ছবিগুলো
নিরালম্ব উড়তে
থাকে দিগন্ত জোড়া দুনিয়ার আকাশে!
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন