কবিতার কালিমাটি ১১২ |
বাউল
একলা বেশ তো
আছি, একলা থাকাই ভালো
দুপুরে ডিস্কো
নাচি, রাতে পাই চাঁদের আলো।
কোনো এক নিঝুম
দুপুর, কিংবা গভীর রাতে
মনে আর পড়েই
না তো, টান দিই গঞ্জিকাতে।
পরোয়া করব
কেন? সমাজটা দিচ্ছে বা কী?
ছোট্ট জীবন
আমার, তাইতো নাচতে থাকি।
পলকা এই জীবনে,
কী হবে দুঃখ এনে?
চল্ না উড়াই
ঘুড়ি, সুতোতে মাঞ্জা টেনে।
লাফিয়ে পাহাড়
চড়ে, সাঁতরে নদীর বুকে
কবিতা দু'এক
কলি আসলে রাখছি টুকে।
এভাবে কাটছে
তো দিন, তোমাকে আর কী খুঁজি?
জানিনা কোথায়
তুমি, আমাকে ভাবছো বুঝি?
ভাবলে কী হবে
আর, নদীতে জল গড়ালে
চাঁদটা বন্ধু
আমার, গভীর এই রাত্রিকালে
গাছেরা আগলে
রাখে, পাখিরা গাইতে থাকে
ঘরে আর যায়
কী ফেরা? ওই যে বাউল ডাকে!
জল
সেতু? হ্যাঁ
গো, সেতুই পাতো তোমার আমার বুকে
চিরটাকাল ভালবাসা
থাক না বাঁধা সুখে।
সুখের বাঁধন
আলগা হলেই নামব আবার জলে
জলে জন্ম, জলে
মৃত্যু, জলেই বাঁচতে বলে।
জল হয়ে তাই
তোমার পাশে যেই না আমি নামি
ভালবাসার অতলতলে
যাই তলিয়ে আমি!
জল তো মুছে
ফেলে সবই সাঁতরে যাবার পরে
তাই বিরহ দেয়
না উঁকি জলের কোনও স্তরে।
ভুলে যাওয়া
বরং ভালো, ভুলতে কি আর জানি?
তাইতো শুধু
হৃদয় সেঁচে দুঃখ তুলে আনি।
বিপ্রলব্ধ
ত্রাহ্যস্পর্শে
তিথিক্ষয়ে চাঁদের দেখা নেই
মঞ্জুষাতে লক্ষ্ণীকে
নয়, চাইছি তোমাকেই।
তামরসের মতোই
তুমি, মুগ্ধ হয়ে থাকি
ধৈবতহীন আরোহণে
তিলক কামোদ রাখি।
অনিকেত শব্দচাষী
বন-পাহাড়ে ঘুরি
স্মিত হাসির
ময়ূখছটায় মন করেছ চুরি।
ভৈরবের ওই বিরহী
সুর পাখির ডাকে ঝরে
বিপ্রলব্ধ,
বিহানবেলায় বড্ড মনে পড়ে।
(শব্দার্থঃ
তিথিক্ষয় - একদিনে দুই তিথির ক্ষয় হয়ে তৃতীয় তিথির সংযোগ; ত্রাহ্যস্পর্শ; অমাবস্যা। মঞ্জুষা ~ লক্ষ্ণীর ঝাঁপি।
তামরস ~ পদ্ম। তিলক কামোদ হল একটা রাগ। এই রাগে অবরোহণে সাতটি সুর থাকলেও আরোহণে ধা
বা ধৈবত সুরটি থাকে না। অনিকেত ~ গৃহহীন পথিক। শব্দচাষী ~ কবি। ময়ূখ ~ রশ্মি। ভৈরব
হল প্রভাতকালীন একটা রাগ।ভোর বেলা গাওয়া হয় এই রাগ। বিপ্রলব্ধ অর্থ বঞ্চিত বা প্রতারিত।
বিহানবেলা মানে সকালবেলা।)
প্রত্যেকটি কবিতাই অসম্ভব সুন্দর এবং অসাধারণ 👌💐🙏
উত্তরমুছুন