সমকালীন ছোটগল্প |
ক্ষুদকুঁড়ো
প্রাকবর্ষার একটা কালো মেঘ, প্রস্তুতির
পর্বে এমন থম্ মেরে থাকা মানেই আরো আরো গভীরতার
অতলান্তে বজ্রগর্ভের প্রতিপালন ঘটিয়ে চলেছে। সে যে কোন সময় হামলে পড়ার জন্য তৈরী
কালবৈশাখী, বৈশাখের শেষাশেষি কিনা! তাই কীভাবে
বলি প্রাকবর্ষা! একটা সাইক্লোনও খুব শিগগিরই ধেয়ে আসছে বঙ্গোপসাগরকুলে। ঐ সব সারতে
সারতেই মৌসুমী বায়ুর ছড়িয়ে পড়া। তারপর 'শ্রাবণের ধারার মত পড়ুক ঝরে পড়ুক ঝরে'।
বপন কবেই সারা হয়ে গেছে। এবার চারা
তুলে আবার সবুজের রোপণ। সমুদ্রের ঢেউয়ের পর ঢেউ ঝিরিঝিরি বাতাসের জোয়ার ভাটা। আমি
এসবের দর্শনাভিলাষী মাত্র, চাষাবাদ তো নেই আমার। আসলে আমি চাকুরিজীবী, কারিগরি বৈদ্যুতিক মেসিনের ছোটমোট মিস্ত্রি। থৈ থৈ
স্বপ্নের এইরকম সবুজাভ আলোকময় মনপ্রাণ ভরা চকমকি পাশে ফেলে। চাষির শ্রম, ঘাম। ম্যারাথনের
দীক্ষা। নিরিবিলি সুন্দর শান্তি। হুঁচুট রক্তাত্বের ডোনেসন। কমন কিছু ভাবনায় সম্প্রতিক
সাম্প্রদায়িক তনা্হার সুপ্ত অনুপ্রবেশ কিছু ঘটছে সমাজে কিছু ব্যক্তির প্ররোচনায়।
তাই এমত বেঞ্জামিন ভারভারা তেমত্ কিছু নতুন ব্লগার সক্কাল সক্কাল ক্ষুরধার অস্ত্র দিয়ে
নৃশংসভাবে হত্যা।
দক্ষিণ পূর্ব রেলের সিঙ্গল ট্র্যাক।
বাঁহাতে নতুন হল্ট তৈরী হয়েছে জামাডোবা। ঐ দিকে আদ্রা খড়্গপুর এদিকে ভাগ হয়ে, নেতাজী
সুভাষ (গোমো) জংশন টুয়ার্স হিল্লি দিল্লি। লাইনের ধারে দুপাশে পাথর যেমন থাকে। মজার
ব্যাপার হল ছোটবেলায় অন্ধকারে ঐ পাথরে পাথরে ঠুকে ঠুকে আগুন দেখতে পাওয়া আমাদের আনন্দ,
সেই আদিম অগ্নি আবিষ্কারের মতো। ভেতরে সেই বেবুঝ সবুজেরা উৎসব পাগল। মাঠময় কাদা মেখে
চ্যাঙ গোড়োই গুগলি কাঁকড়া।
কিছু কাজের কাজ হয়ে যাক শপফ্লোরে প্রবেশপূর্বে এ্যাসেমব্লি পয়েন্ট এখানেই রাখতে হয়। গতকালের সাঁঝ্ আজিকার বিহান। ফুল সার্কেলে উইথ পি পি, শ্রমিক অধিকারী সকলের উপস্থিতি, উপস্থিত্ থাকলে থাকতেই হবে এ্যাসেমব্লিতে। তাপ্পর? তাপ্পর সমাচার ভালো মন্দ নির্বিচারে। প্রাত্যহিক শুভেচ্ছা বিনিময়, ওয়ার্ক ইস ওয়ারসিপ নট মিসিং দিস চ্যাপ্টার। অত্যন্ত নিয়ম নিয়তির নিরীখে, হে বাবু শিল্পও এমনি এমনিই হয়! খালি খালি কর্পোরেটরে গালমন্দ করা। কানাকানি কি দিবে দানাপানি? গ্লোবো লাইজেশন একটি মেসিনোবত্ রাগ করতে নেই। রাগ করে না! এই দেখো বর্তমানে ওয়ার্ক ফ্রম হোম। ঘরে বসে কাজ। বসার সময় আছে, ওঠার সময় নেই। খাবার? ঐখানেও হোম সার্ভিস। কোয়ালিটি ইকুইটি কোয়ান্টিটি ক্লিক করলেই… ব্যাস একদম্ ফরমাইস্ মতোই কাল করল কোরোনা ভাইরাস কোভিড-১৯ প্যান্ডামিক হয়ে একদিকে ভালোই। আফিস বিল্ডিংয়ের বিজলীর বচত্, জলের বচত্ অমন অনেক বচত। ক্যাব, উবের, নেট, সেনিটাইজিং। এক্সট্রা এক্সট্রা।
হ্যাঁ বৈজ্ঞানিকরা বলেছিলেন বটে, একটা
সময় পানীয় জলের দারুণ ক্র্যায়শিস হবে, তা বুঝি আর বেশিদিন নেই। প্রজন্মের কথা ক'জন
ভাবে! আপনি বাঁচলে বাপের নাম। জীবন আমাদেরও বেশিদিন নেই। চিনের বিশ্ববাণিজ্য? নাকি
বিনা অস্ত্রে বিশ্বযূদ্ধে একতরফা সমস্ত মহাদেশের দখলদারি করতে চায়? কেন এত প্রতিহিংসা
পরায়ণ? ইজরায়েলের আর কোন পথই কি খোলা ছিল না? এত প্রাণ ওহ্; জল দূরে থাক, আজ শ্বাসপ্রশ্বাসের
বিস্তর সমস্যা অক্সিজেন-অক্সিজেন, ভ্যাকসিন অস্থিরতা অসহিষ্ণ্তা, এ্ছাড়া আর সব স্তব্ধ।
লকডাউন মহামারীর এক আর অনিবার্য কারণ। দিনের পর দিন শবের মিছিল, শব বাহকের নয়। অচ্ছুৎ
অস্পৃশ্য দেহের মিছিল মৃতের পাহাড় পর্বত। ঘাটতি্ অর্থনীতি জ্বালামুখির শিখরে অবস্থান
করছে। কখন বিস্ফোরণ ঘটে যাবে, কেউ জানে না।
একটি গাছ একটি প্রাণ! ওদিকটায় যে কয়েক
গন্ডা বৃক্ষ রোপন করছিল পাগলা, তারপর অরণ্য, পাগলা মানুষের কাছে হাত পেতে পেতে জমি,
মাইলের পর মাইল। দলমার মাটি ছোঁয়া দেয়াল। সহস্র অস্ত্রফলার মত ঝাউয়ের গাঢ় সবুজের
অন্ধকার। পূর্ণ চাঁদের আলোয় সোনাঝুরির দাহাড় ঠেলাঠেলি ফক্কড়ি হর্সউল্লাস হরিতকি
শাল তাল তমাল আঁসফল বাঁশ। কটি ছুঁই ছুঁই বৃক্ষরাশি। পাগলা আজও পঁচাত্তর বছর বয়সের
যুবক। এখনো কোদাল গাঁইতিতে। তাঁর বৃক্ষের আশ্রম গড়ে তুলতে ব্যস্ত।
রোজমরা জীবনের একটা পরত,শব্দ আর ভাষার গদ্যে ছন্দে সাজানো।
উত্তরমুছুনসময়ের সুন্দর প্রতিবেদন। ভিন্ন ধারার গদ্য শৈলী!
উত্তরমুছুন