কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

সোমবার, ১৪ জুন, ২০২১

গোনসালো রোখাস

 

প্রতিবেশী সাহিত্য

 

গোনসালো রোখাস-এর কবিতা         

     

(অনুবাদ : জয়া চৌধুরী)    




 

কবি পরিচিতি : Gonzalo Rojas (Chile) গোনসালো রোখাস-এর জন্ম হয়েছিল ১৯১৬ সালে জন্ম চিলের লেবু প্রদেশে। তিনি ছিলেন ’৩৮এর প্রজন্মের মহান কবি ও ডিপ্লোম্যাট। স্বয়ং সালভাদোর আইয়েন্দে তাঁকে চীন দেশে কালচারাল কনসাল পদে নিয়োগ করেছিলেন (১৯৭০-৭২) এবং পরে কিউবায় বাণিজ্য দফতরের ভার নিয়েছিলেন। স্প্যানিশ  দুনিয়ায় নোবেল পদকের সমতুল সেরভান্তেস পুরস্কার, কুড়িটি সাম্মানিক ডক্টরেট সহ  সারাজীবন অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন। তাঁর লেখা কয়েকটি বইয়ের নাম La miseria del hombre (১৯৪৬) পুরুষের দুঃখ, Del relámpago (১৯৮১) বিদ্যুৎ সম্বন্ধীয়, Diálogo con Ovidio(২০০০) ওভিদিওর সাথে বার্তালাপ ইত্যাদি। 

 

¿Qué se ama cuando se ama? (কেউ যখন ভালবাসে কখন সে ভালবাসে)

 

কেউ যখন ভালবাসে কখন সে ভালবাসে, প্রভু - জীবনের ভয়ংকর আলো

না কি মৃত্যুর আলো? কে মরিয়া হয়ে খুঁজে বেড়ায়, কে বলে মিথ্যে, সেটা  

কি - প্রেম? কে সে? অতল গভীরতার নারী, তার গোলাপগুচ্ছ, তার

আগ্নেয়গিরিরা,

না কি এই রঙিন সূর্য যা কিনা আমার ফুঁসে ওঠা রক্ত

অন্তিম শিকড় পর্যন্ত যখন ওর ভেতরে প্রবেশ করি?

 

না কি সবকিছুই এক বৃহৎ খেলা, প্রভু আমার, এবং ওখানে নারী নেই  

পুরুষও নয় বরং এক নির্জন শরীর - তোমার,

সৌন্দর্যের নক্ষত্রের মধ্যে বিলি করা, দৃশ্যমান অনন্তের

দ্রুত ধাবমান বিশেষ কণারা?

 

এতে আমি মরে যাচ্ছি, ওহ্ ঈশ্বর, ওর ভেতরে পথে পথে

যাওয়া ও আসার এই যুদ্ধে, এক এক বারে তিনশবার ভালবাসতে

না পেরে মরে যাচ্ছি, কারণ চিরকাল একজনের কাছে আমি অভিযুক্ত,

সেই নারী, সেই অনন্যা যে আমায় প্রাচীন স্বর্গ দিয়েছিল। 

 

Retrato de mujer (নারীর প্রতিকৃতি)  

 

মেয়ে, তোমার মুখোমুখি চেয়ে থাকতে, রাত সবসময় থাকবে,

তোমায় আয়নায় নির্জন তুমি, স্বামীর কাছ থেকে স্বাধীন, নগ্ন

বিশাল ভার্টিগোর নিখুঁত ও বীভৎস সত্য নিয়ে যা

তোমায় ধ্বংস করে দেয়। এবং একটি ক্ষত থেকে উৎসারিত আমার অবুঝ বিদায় সম্ভাষণ,

ফোনে শুনতে চেয়ে তোমার ছুরিকা তোমার রাত সবসময় তোমারই থাকবে।

 

নিজেকে যেন না লেখো একথা অনুনয় করেছি আমি; সেজন্য আকাশে ডাকছি তোমায়

কিচ্ছু বলব না বলে, যেভাবে বলে শূন্যতা - কিছু না, কিচ্ছু না,

বরং ওই একই এবং বরাবর ওই একই বস্তুর একই রকম ব্যাপার যে

কখনও আমার কথা শোনো না, ওটাই যে তুমি আমাকে কখনই বোঝো না এতটুকু,

যদিও তোমায় যা বলছি তা শিরা ধমনী জুড়ে তোমাকেই পোড়ায়।

 

লাল পোশাকটা পরো যা তোমার মুখ ও রক্তে এসেছে,

এবং মহান ভালবাসার জন্য ভয়ের শেষ সিগারেটটুকু দিয়ে

আমায় জ্বালিয়ে দাও আর মুক্ত বাতাসে নগ্ন পায়ে চলে যাও তুমি যেভাবে

তোমার সৌন্দর্যের দৃশ্যমান ক্ষত নিয়ে এসেছিলে। হায়

তোমাকে কাঁদতে হয় এবং ঝড়ের মধ্যেও কাঁদো তুমি।

 

আমার জন্য মরে যেও না তুমি। বিদ্যুৎ ঝিলিকের মত তোমার মুখমন্ডল আঁকব

ঠিক যেমনটি তুমি - দর্শনীয় রাখার মত দুটি চোখ এবং অদৃশ্যও বটে,

দেবদূতের মত নাক এবং পশুর মত মুখগহবর এবং এক হাসি

যা আমায় ক্ষমা করে দেয়, এবং কিছুটা পবিত্র ও বয়সহীন তোমার কপালে উড়ে বেড়ায়,

নারী এবং আমাকে দেখে কেঁপে ওঠো, কারণ তোমার মুখ আত্মার মুখের মত।

 

এসো এবং ফিরে যাও, এবং সমুদ্র আলিঙ্গন করো যা ঢেউয়ে ছিনিয়ে নেয়  তোমায়,

আর তোমায় নিশ্চল রেখে দেয়, রাতের নরক থেকে তোমায় যে ডাকছি তা

শুনতে শুনতে এবং একটা ঢেউয়ের মত চুম্বন করো আমায়।

তুমি ধাঁধা ছিলে। ধাঁধাই থাকবে। আমার সাথে

উড়বে না। এখানে নারী আছে। তোমার অবয়ব ফেলে যাচ্ছি তোমার কাছেই।

 

Baudeliriana (বোদলেরিয়ানা)

 

ওর প্রতি আপনারা যতখানি সূক্ষ্মদৃষ্টি এবং যতখানি সূক্ষ্মদৃষ্টি নন

ওভিদিও হয়ত বলেছিলেন - যে লাথি

ওকে মেরেছিলেন, হয়ত হীল উঁচু ছিল, যতখানি দৃশ্যমান

জান্তব, বোঁটারা, আকারে যত সামান্যই হোক

কিছু এসে যায় না, সুদৃশ্য ভাবে আঁকা

চুম্বন, প্যারিসীয়

সুগন্ধী, বাড়াবাড়ি রকমের পলক না ফেলেই

নীলাভ, তার উচ্চতার দীর্ঘত্ব এবং নিঃসাড়ে

দারুণ মথিত, উজ্জ্বল

স্বপ্নদর্শী, বিশেষ করে ওটিই, উজ্জ্বল স্বপ্নদর্শী।

 

এবং হ্যাঁ, সোনালি সেন্টিমিটার

মুগ্ধতার একশ সত্তর প্রকার

গোড়ালি থেকে সুতো যেন

চুলের মুষলধার। ভেবে থাকতে পারেন

সেই উচ্চতায় বোর্খেস শ্বাসকষ্টে ফেটে পড়েছেন, আলেফ

ছাড়া কে-ই বা সম্পূর্ণ বিভাজিত করতে পারে আর

পশুরা এভাবেই শোঁকাশুঁকি করে, মেয়েটির শুঁড়ে চুমু খায়,

ওর সাথে রয়ে যায়, ওর সব প্রহেলিকা সয়ে যায়, ওকে বাতাস দেয়,

যতখানি গভীরে পারা যায় ওকে নোংরা করে, ক্লান্তিকর মিথ্যার

ছুট লাগায়? কে?

 

বিশেষ করে কিচ্ছু না, বালকেরা, অন্য

আয়ুষ্কালের অন্য কোন দাবীদার! বোর্খেস।

পুবলিও ওভিদিও! কিস্যু না - এটি নিশ্চিত

করে বলা যায় যে ওখানে কিস্যু নেই, স্রেফ প্রতি আঠাশ দিন

পরপর, জন্ম দেয়ার জন্য রক্তপাত এবং ওইসব কিছু হল খেলা। ওখান থেকেই আহত আমরা আসি

চিৎকার করতে থাকা কবিদের দেখতে দেখতে আসি

নারী, রূপ

কাৎরাতে কাৎরাতে ঘোষণা করে, অনন্ত

যা দেখা যায় না - বিশেষ করে ওটা, বালকেরা,

যা দেখা যায় না। 

(রোমে প্রাচীন যুগের কবি ছিলেন পুবলিও ওভিদিও)

 

 

 

 

 

 

 

 

0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন