কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

সোমবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২০

ইন্দ্রাণী দত্ত পান্না

 

কবিতার কালিমাটি ১০৬


হাতঘড়িরা কতটা বিশ্বাসী

 

তিনটের মধ্যে দুটোই ছুটিতে আর একটা সোনালি বাক্সে বন্ধ থাকে দামী বলে

কাল যখন শেষ রাত (যা কখনো ঘড়ি নয়, শরীরই বলে) একটা স্বপ্নের মধ্যে দেখলাম মা’র জার্মান মেক একরত্তি ঘড়িটা।

দশটা দশ নয় তাতে আটটা কুড়ি দেখাচ্ছিল।

আমার দুটো বন্ধ ঘরির লম্বা ও  মেকানিক

খানিক গপ্প গাছা, আর বড় ব্যবসা করতে চায়

বিয়ের জন্য বাগান বাড়িই হোক আর শ্যুটিংএর জন্য ড্রোন, বুম্বা বা মুম্বাইয়ের বিখ্যাত আত্মহত্যা, ঘড়ির চিকিৎসার ব্যাকগ্রাউন্ডে বেজে চলে।

“আপনার কলার টিউনটা খুব ভাল, রফির মতো কেউ হবে না”

আমি ভাবতে ভাবতে ফিরে আসি সোনালি বাক্সের কাছে, জানতে চাই সময় আর  আর জানতে চাই আমার মতো কেউ হবে কি না? দেখি ভেতরে

“বর্তমান বলে কিছু নেই

যদি না অতীত সরে জায়গা দেয়” লেখা কাগজে মোড়া আমার প্রথম প্রেমিকের ফেরৎ চেয়ে নেওয়া ঘড়ি

আমি সময়কে যা বলার তা বলে ফেলার জন্য প্রস্তুত হচ্ছি              

 

মাতালের গান

 

পা টেনে টেনে সে হাঁটে পাড়ায় পাড়ায়

“ও আগে মানু মানুকে ভালবাসতো...”

অথচ মানুর ডান চোখ নাচে আর বাঁ চোখ

টেরিয়ে সঙ্গী মেয়েটা সব দেখে রাখে

মানুকে ভালবাসতে চেয়ে হাওয়া বিবাগী আর নীল আকাশ জুড়ে ওড়ে সোনাল মান সিং এর দশ আঙুলের মুদ্রা

মানুকে কে না চায় ?

মানুকে কে চায় না?

কে চায় না মানুকে?

আলপথ ঘুরে শহরে ঢোকে মানুর পিয়ন

জানতে চায় পা টেনে টেনে কে যায়?

‘সময়, সময়’ বলে চেঁচাতে থাকে

মেয়েদের সব কটা ইস্কুল ফটক।

 

মাংসাসী

 

চারটে  কলসপত্রী দেয়াল ঘিরে ধরেছে তারা 

গিলে নিচ্ছে ধীরে আর পড়ে থাকছে খোলসখানা।

কাছে নেয় না, দেখা দেয় না, স্পর্শদোষের ভয়ে সব

কিছু দূরে সরে গেলে চট চটে আঠা আর নিষ্পেষণ থেকে যাচ্ছে মুর্শীদহীন।

সাকরেদী নেই, আলো নেই, নূরের খবর হয় না তাই

ভোরবেলার ধূমকেতু কয়েক হাজার বছর পার করে এসে নতুন পৃথিবী চিনতে পারল না

আমরাই কি চিনতে পেরেছিলাম হাসি খুশি পড়শিকে?

মেঘের ছায়া ধরে রাখা জল আর ততটা সরল নয়,

কখন বসার ঘর সাজিয়ে নিয়েছি বিষাক্ত টবের গাছে!

যখন শুশ্রূষার হাত হয়ে যায় নির্লিপ্ত বিবৃতি শুধু তখন কলসপত্রী নিজের সীমানা বাড়াতে বাড়াতে

অতিকায় কদাকার প্রশ্ন চিন্হ হয়ে দুলতে থাকে জঙ্গল সভ্যতায়।

 


2 কমেন্টস্: