সজ্ঞযাত্রা
আর
কিছুক্ষণ পরেই পৃথিবীর সমাপ্তি।
রাস্তায়
মিছিল চলছে। দাবীটা ঠিক শোনা যাচ্ছে না। চাই... চাই... এইটুকুই বোঝা যাচ্ছে।
বড়
কম বয়স, পৃথিবীকে কত্তোকিছু দেবার ছিল, মাইরি!
হুঃ,
কম বয়েস! চল্লিশ বছর আগে লাইফ এক্সপেক্টেন্সি কত ছিল জানিস?
শালা
একটা ঢ্যামনা লোক তাকে নিয়ে শোক উঠলে পড়ছে।
আস্তে
বাল। মেয়ে শুনতে পাবে।
গায়ের
ওপর ঘি ছড়িয়ে দ্যান দিদি।
একটু
চুপচাপ। বেমালুম সব শব্দটব্দ গায়েব। এটাকেই বোধহয় বলে চিরশান্তি। এই পরিবেশটা আমার
ভালোই লাগছে। একটা উটকো কাক নিমডালে ডেকে উঠতে আবার সব চলতে শুরু করল।
বউফউ
কেউ আসেনি দেখছি।
দূর,
একা একা মরেছে। না হলে পাড়া থেকে বাসি মড়া তুলতে আমাদের ডাকে!
মধু
দিয়ে মেষলোম, যবপিষ্ট বলে কীসব ছাইপাঁশ খাইয়ে দিয়ে বামুন বলল, ‘মদনাং মংহিষ্টে’।
অখাদ্য।
ওকেই এগুলো খাওয়ানো দরকার। ওর জানা দরকার কী করছে।
মালটার
ভালো নাম মদনা?
মদনের
বাপ। শুনেছি প্রেমটেম করত। মাইরি ঘাঘু লোক।
সেই
মাসিমা কই, বে?
এমন
আঁতেলমার্কা ছাগল, এর আবার প্রেম! এর জন্যে কে আসবে? একটা মেয়ে না থাকলেই নয়। তাই
আছে। যেমন সবার থাকে। আর থাকলে আসতে হয়, তাই সে এসেছে। শালা, প্রেম মারাচ্ছে। তোর
কাজ নেই। ভালোয় ভালোয় মালটাকে পুরিয়ে ফেলতে পারলে হল। এখনও তো কোনো বোতলের কথা বলল
না।
বামুন
বলে চলেছে, বলেন দিদি, প্রেতস্ব স্বর্গাধিকরণ
লোহার
খাঁচাটা ঘরঘর শব্দে অন্ধকারের ভেতর ঢুকে যাচ্ছে। আলোচনাগুলো শোনা গেল না।
একটা
সার্কিট ব্রেকার অল্প শব্দ করে অন হল। কারখানায় থাকতে এমন শব্দ মুখস্ত হয়ে গেছে।
বড়জোর কুড়ি অ্যাম্পস টানবে। আগুন জ্বলে ওঠে। সেই আলোতে চুল্লির দেওয়ালে সারিসারি
মুখ। হলদে, সাদা, নীল, কালো,
ধলা। সব রঙই নীরব। কিসের অপেক্ষা কে জানে! স্বচ্ছ ধোঁয়া বয়ে যাচ্ছে চিমনি দিয়ে।
বোধহয় সগগে্ যাচ্ছে। আমি
দেওয়ালে আর সব মুখের ভেতর দাঁড়িয়ে দেখলাম পুড়ে যাচ্ছে আমার রোম, চুল, হাত, পা,
পেট, লিঙ্গ, ফুসফুস, মাথা।
তারপর...
শেষ
বারের মতো সমস্ত পৃথিবী কেঁপে ওঠে। চুল্লির নীচে খসে পড়ে অবশিষ্ট কিছু ছাই...
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন