করিডোর নিয়ে গল্প
অপরাহ্ন সুসমিতো
(ক)
আমি তখন ১ম বর্ষের ছাত্র। মাহবুব আলী তখন 'করিডোর' নামে একটা ম্যাগাজিন বের করতো। আমাকে কেউ চেনে না। ক্লাসে মন খারাপ করে চুপচাপ বসে থাকতাম। তৌহিদুল করিম চৌধুরী (আমরা বলতাম টি কে সি, তখন ক্লাস রুটিনে স্যারদের নাম সংক্ষেপে লেখা হতো) স্যার মাইক্রো ইকনোমিক থিওরি পড়াতেন। মাহবুব আলী ওর বিশাল শরীর নিয়ে করিডোরে ঘুরে বেড়াতো। ইশরাত জাহানকে দৌড়ে দৌড়ে নোট দিত। আমি হাঁ করে তাকিয়ে থাকতাম নোটগুলোর দিকে। ইশরাতের সাথে একদিন কথা বলতে গেলে ও আঙুল তুলে মুকুটের দিকে দেখিয়ে দিয়েছিল। ততদিনে জেনে গেছি মুকুট আমাদের সবচেয়ে মেধাবী ছাত্র। ইশরাত ভেবেছিল আমি বুঝি মাহবুবের নোট কব্জা করতে চাইছি। তখন বুঝেছিলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নোটের কী মাহাত্ম! মাহবুব আলী'র মতো নোট জোগাড় করত হবে ভেবে উঠে পড়ে লেগে গেলাম লাইব্রেরীতে। ওখানে গিয়ে আবিস্কার করি, আমাদের ক্লাসের ঝকঝকে মেয়েটাকে, নীলুফার জামান সীমা। কী চমৎকার করে ইংরেজি বলে! আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকি। কেউ কেউ বলে সীমা ডাক্তারী পড়া ছেড়ে ইকনোমিক্স পড়তে এসেছে। আমার ইকনোমিক্সে মুগ্ধতা আরো বেড়ে যায়। সীমার সামনে কুঁকড়ে থাকি। অবাক কান্ড সীমা আমার সাথে কথা বলতে শুরু করে। আমার লাইব্রেরী ওয়ার্ক তুমুল বেড়ে যায়।
একদিন আমরা দলে বলে পাহাড় ডিঙিয়ে সীমাদের বাসায় যাই। কী সুন্দর ওদের বাসা! ওর বাবা ফরেস্ট্রি ডিপার্টমেন্টের শিক্ষক। আমি একদিন সীমাকে বলি, আমার ফরেস্ট্রি পড়ার খুব ইচ্ছা ছিল। মানে আমার বাবা খুব চাইছিলেন। সীমা বলল : সত্যি চাও? বাবাকে বলে দেখতে পারি। আমি বললাম : না থাক। ইকনোমিক্সই পড়তে থাকি, ভবিষ্যতে অর্থমন্ত্রী হব। সীমা হাসতে হাসতে শেষ। সীমাদের বাড়ি থেকে নামতেই ঢালু পিচ-ঢালা রাস্তা। শামসুন নাহার হলের সামনে কত ছেলেদের ভিড়। আমার তখন কবি আবুল হাসানকে মনে পড়ে। মানুষ কতো একা, চিবুকের কাছে একা।
সন্ধ্যা নামছিল কালো ওড়নার মতো। তখন আচানক মনে হলো, এখানে আমাকে কেউ চেনে না। চাটগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি একা। সেই সন্ধ্যাটায় মন খারাপের একটা জগদ্দল পাথর বুকে টুপ করে বসে পড়েছিল। রাতের বেলা আজিম বলল : চল গৌতমকে নিয়ে রেলস্টেশন থেকে ঘুরে আসি। গৌতম তখন সমাজতন্ত্রের কথা বলতো। রাতে শুয়ে শুয়ে ভাবছিলাম, কী করে ডিপার্টমেন্টে সবাই আমাকে চিনবে? আমি তখন শাহজালাল হলে সিট পাইনি। শাহজালাল হলের সামনে সদ্য নির্মিত কুঁড়েঘর ‘শান্তিনিকেতন’ এ থাকি। মনু মিয়ার কটেজ। কটেজে থাকি, শাহজালাল হলে শাওয়ার করতে যাই, দেয়াল টপকে। পাশের চৌকিতে আজিম ঘুমাচ্ছে , আমার ঘুম নেই। এ পাশ ও পাশ করছি, তখন ওই চন্দ্রালোকে ভেসে যাওয়া গভীর রাত্রিতে একটা গল্পের প্লট মাথায় খেলা করে যায়। লিখতে বসে যাই কোনো বল পেন নিয়ে। ঝিঁ ঝিঁ পোকার শব্দে রাত বাড়তে থাকে একাকী, আমিও। নিশি পাওয়া বাউলের মতো। সকাল হলে দেখি, এ এক অসাধারণ সকাল! রেণুময় শিহরিত সকাল। রব ভাইয়ের দোকানে নাস্তা সেরেই ছুটি ক্লাসে। পকেটে টাটকা গত রাতের নিশিথিনী গল্প। নিতাই নাগ স্যারের ক্লাস হতেই মাহবুব আলীকে বাড়িয়ে দিলাম কাল রাতের সেই সুবাসিত টাটকা গল্প। মাহবুব আলী তার ভারি চশমা সরিয়ে বলল : ইশরাত বলেছে কারে নোট না নিতে। আমি খুব বিনয়ী ভঙ্গিতে বললাম : নোট নয়, গল্প। করিডোর’এর গল্প।
(খ)
আমাদের ম্যাক্রো ইকনোমিক থিওরি পড়াতেন ড: শাকের। স্যারকে হাসতে দেখিনি। হাঁ করে বোঝার চেষ্টা করি। সুজিতকে জিজ্ঞেস করি : মাথায় ঢোকে কিছু? সুজিত হচ্ছে হাত বাড়ানো বন্ধুর মতো। একদিন বাসে আমার কানের সামনে মুখ নিয়ে বলে
: তুমি অপরাহ্ণ সুসমিতো? তোমার গল্প পড়লাম। আমি সুজিত রায়।
: তুমি সত্যজিতের কিছু হও?
সুজিত প্রেমে পড়ার মতো একটা হাসি দেয়। সুজিত আমাদের পাড়ায় চলে আসে শহরে ওর দাদু'র আস্তানা ছেড়ে। আমাদের রাতের দিনের বেসুমার আড্ডা বেড়ে যেতে থাকে। শাহজালাল হলের পেছন দিয়ে কাটা পাহাড়। বাস যাবার জন্য পাহাড় কাটা হয়েছিল, কিন্তু যে কারণেই হোক আমাদের দেশে'র অন্যান্য প্রজেক্ট-এর মতো দশা। থেমে আছে রাস্তা। কিন্তু আমরা তো থেমে থাকতে পারিনা । শামসুন নাহার (নতুন শাখা) হলে যাবার কোণাকুণি রাস্তা অবিলম্বে আবিষ্কার হলো। সুজিতকে বললাম
: কই দেখাও।
সুজিত বললো : ইশরাতের কাছে আছে।
তার মানে আবার ইশরাত। বিকেলে অত:পর আমরা সেই পাহাড় কাটা কোণাকুণি পথ ধরে। শামসুন নাহারে যাবার দ্রুতগামী পুলসেরাত। বিকেলের দলে জমা হয় : আজিম, গৌতম, সুজিত ও মুকুট। মুকুটকে নেওয়ার বুদ্ধি : মুকুট ও ইশরাত দুজনেই একে অন্যকে আগে থেকেই চেনে। ওরা একই শহর থেকে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে উচ্চ-মাধ্যমিক। শহীদ মিনারের কাছে এসে আমার মন এত ভালো হয়ে যায়। সন্ধ্যাটুকু বাগানের ঢল মনে হলো। এত বড় স্তম্ভ! কতো ছেলেমেয়ে। কাকলী'র ধ্বনি। শহীদ মিনারের পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া সড়কটাকে 'করিডোর' 'করিডোর' মনে লাগে। শহীদ মিনার নিয়ে আলাদা একটা ভয় মেশানো ছিল, ভয়টা মুহূর্তে উড়ে যায়। সুজিত মুকুটকে বলে
: মুকুট গান করো।
মুকুট সুজিতকে এক ধমক দেয়
: ফাইজলামি পাইছো! মেয়েদের হলের সামনে করি গান আর ইশরাত ভাববো আমরা সবাই তারে দেখতে আইছি। পারতাম না।
গৌতম, আজিম মুকুটের ধমকের স্টাইল দেখে হো হো করে হেসে ওঠে। এত প্রাণের হাসি। মেয়েদের হলে যাবার তরুণ শিহরিত হাসি। আমার মাথায় একটা অসভ্য পংক্তি ঘূর্ণন দিয়ে ওঠে।
: বৃষ্টির ডানা নেই জল হয়ে আকাশ থেকে পড়ে। পাখিদের ডানা আছে, মুক্ত হয়ে ভূমি থেকে ওড়ে।
মাথার উপর দিয়ে চলে যায় কতোগুলো বিকাল পাখি। নাম জানি না। শহীদ মিনারের এক কোণায় মুকুল, অন্য কোণায় মোজাম্মেল, মাঝখানে কতোগুলো মেয়ে। মুকুল আর মোজাম্মেলের একটা দারুন ভ্যারিয়েশন আছে, মুকুল যেমন লম্বা, মোজাম্মেল তেমনি ছোটখাট। মুকুল আমাদের দেখিয়ে ৫৫৫ সিগারেট ধরায়। মোজাম্মেল সিগারেট খায় না, লাজুক কিংবা চোরা হাসি দিয়ে বসে থাকে, ভাবখানা, আমি নিজে আসিনি, মুকুল ধইরা নিয়া আসছে।
দেখাদেখি আমাদের আজিমও সিগারেট ধরালো ফস করে।
চাটগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিকাল নামে দলবলে। আমি মুগ্ধতা নিয়ে সন্ধ্যা দেখি, অপেক্ষা করি রাত নামার।
(ক)
আমি তখন ১ম বর্ষের ছাত্র। মাহবুব আলী তখন 'করিডোর' নামে একটা ম্যাগাজিন বের করতো। আমাকে কেউ চেনে না। ক্লাসে মন খারাপ করে চুপচাপ বসে থাকতাম। তৌহিদুল করিম চৌধুরী (আমরা বলতাম টি কে সি, তখন ক্লাস রুটিনে স্যারদের নাম সংক্ষেপে লেখা হতো) স্যার মাইক্রো ইকনোমিক থিওরি পড়াতেন। মাহবুব আলী ওর বিশাল শরীর নিয়ে করিডোরে ঘুরে বেড়াতো। ইশরাত জাহানকে দৌড়ে দৌড়ে নোট দিত। আমি হাঁ করে তাকিয়ে থাকতাম নোটগুলোর দিকে। ইশরাতের সাথে একদিন কথা বলতে গেলে ও আঙুল তুলে মুকুটের দিকে দেখিয়ে দিয়েছিল। ততদিনে জেনে গেছি মুকুট আমাদের সবচেয়ে মেধাবী ছাত্র। ইশরাত ভেবেছিল আমি বুঝি মাহবুবের নোট কব্জা করতে চাইছি। তখন বুঝেছিলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নোটের কী মাহাত্ম! মাহবুব আলী'র মতো নোট জোগাড় করত হবে ভেবে উঠে পড়ে লেগে গেলাম লাইব্রেরীতে। ওখানে গিয়ে আবিস্কার করি, আমাদের ক্লাসের ঝকঝকে মেয়েটাকে, নীলুফার জামান সীমা। কী চমৎকার করে ইংরেজি বলে! আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকি। কেউ কেউ বলে সীমা ডাক্তারী পড়া ছেড়ে ইকনোমিক্স পড়তে এসেছে। আমার ইকনোমিক্সে মুগ্ধতা আরো বেড়ে যায়। সীমার সামনে কুঁকড়ে থাকি। অবাক কান্ড সীমা আমার সাথে কথা বলতে শুরু করে। আমার লাইব্রেরী ওয়ার্ক তুমুল বেড়ে যায়।
একদিন আমরা দলে বলে পাহাড় ডিঙিয়ে সীমাদের বাসায় যাই। কী সুন্দর ওদের বাসা! ওর বাবা ফরেস্ট্রি ডিপার্টমেন্টের শিক্ষক। আমি একদিন সীমাকে বলি, আমার ফরেস্ট্রি পড়ার খুব ইচ্ছা ছিল। মানে আমার বাবা খুব চাইছিলেন। সীমা বলল : সত্যি চাও? বাবাকে বলে দেখতে পারি। আমি বললাম : না থাক। ইকনোমিক্সই পড়তে থাকি, ভবিষ্যতে অর্থমন্ত্রী হব। সীমা হাসতে হাসতে শেষ। সীমাদের বাড়ি থেকে নামতেই ঢালু পিচ-ঢালা রাস্তা। শামসুন নাহার হলের সামনে কত ছেলেদের ভিড়। আমার তখন কবি আবুল হাসানকে মনে পড়ে। মানুষ কতো একা, চিবুকের কাছে একা।
সন্ধ্যা নামছিল কালো ওড়নার মতো। তখন আচানক মনে হলো, এখানে আমাকে কেউ চেনে না। চাটগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি একা। সেই সন্ধ্যাটায় মন খারাপের একটা জগদ্দল পাথর বুকে টুপ করে বসে পড়েছিল। রাতের বেলা আজিম বলল : চল গৌতমকে নিয়ে রেলস্টেশন থেকে ঘুরে আসি। গৌতম তখন সমাজতন্ত্রের কথা বলতো। রাতে শুয়ে শুয়ে ভাবছিলাম, কী করে ডিপার্টমেন্টে সবাই আমাকে চিনবে? আমি তখন শাহজালাল হলে সিট পাইনি। শাহজালাল হলের সামনে সদ্য নির্মিত কুঁড়েঘর ‘শান্তিনিকেতন’ এ থাকি। মনু মিয়ার কটেজ। কটেজে থাকি, শাহজালাল হলে শাওয়ার করতে যাই, দেয়াল টপকে। পাশের চৌকিতে আজিম ঘুমাচ্ছে , আমার ঘুম নেই। এ পাশ ও পাশ করছি, তখন ওই চন্দ্রালোকে ভেসে যাওয়া গভীর রাত্রিতে একটা গল্পের প্লট মাথায় খেলা করে যায়। লিখতে বসে যাই কোনো বল পেন নিয়ে। ঝিঁ ঝিঁ পোকার শব্দে রাত বাড়তে থাকে একাকী, আমিও। নিশি পাওয়া বাউলের মতো। সকাল হলে দেখি, এ এক অসাধারণ সকাল! রেণুময় শিহরিত সকাল। রব ভাইয়ের দোকানে নাস্তা সেরেই ছুটি ক্লাসে। পকেটে টাটকা গত রাতের নিশিথিনী গল্প। নিতাই নাগ স্যারের ক্লাস হতেই মাহবুব আলীকে বাড়িয়ে দিলাম কাল রাতের সেই সুবাসিত টাটকা গল্প। মাহবুব আলী তার ভারি চশমা সরিয়ে বলল : ইশরাত বলেছে কারে নোট না নিতে। আমি খুব বিনয়ী ভঙ্গিতে বললাম : নোট নয়, গল্প। করিডোর’এর গল্প।
(খ)
আমাদের ম্যাক্রো ইকনোমিক থিওরি পড়াতেন ড: শাকের। স্যারকে হাসতে দেখিনি। হাঁ করে বোঝার চেষ্টা করি। সুজিতকে জিজ্ঞেস করি : মাথায় ঢোকে কিছু? সুজিত হচ্ছে হাত বাড়ানো বন্ধুর মতো। একদিন বাসে আমার কানের সামনে মুখ নিয়ে বলে
: তুমি অপরাহ্ণ সুসমিতো? তোমার গল্প পড়লাম। আমি সুজিত রায়।
: তুমি সত্যজিতের কিছু হও?
সুজিত প্রেমে পড়ার মতো একটা হাসি দেয়। সুজিত আমাদের পাড়ায় চলে আসে শহরে ওর দাদু'র আস্তানা ছেড়ে। আমাদের রাতের দিনের বেসুমার আড্ডা বেড়ে যেতে থাকে। শাহজালাল হলের পেছন দিয়ে কাটা পাহাড়। বাস যাবার জন্য পাহাড় কাটা হয়েছিল, কিন্তু যে কারণেই হোক আমাদের দেশে'র অন্যান্য প্রজেক্ট-এর মতো দশা। থেমে আছে রাস্তা। কিন্তু আমরা তো থেমে থাকতে পারিনা । শামসুন নাহার (নতুন শাখা) হলে যাবার কোণাকুণি রাস্তা অবিলম্বে আবিষ্কার হলো। সুজিতকে বললাম
: কই দেখাও।
সুজিত বললো : ইশরাতের কাছে আছে।
তার মানে আবার ইশরাত। বিকেলে অত:পর আমরা সেই পাহাড় কাটা কোণাকুণি পথ ধরে। শামসুন নাহারে যাবার দ্রুতগামী পুলসেরাত। বিকেলের দলে জমা হয় : আজিম, গৌতম, সুজিত ও মুকুট। মুকুটকে নেওয়ার বুদ্ধি : মুকুট ও ইশরাত দুজনেই একে অন্যকে আগে থেকেই চেনে। ওরা একই শহর থেকে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে উচ্চ-মাধ্যমিক। শহীদ মিনারের কাছে এসে আমার মন এত ভালো হয়ে যায়। সন্ধ্যাটুকু বাগানের ঢল মনে হলো। এত বড় স্তম্ভ! কতো ছেলেমেয়ে। কাকলী'র ধ্বনি। শহীদ মিনারের পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া সড়কটাকে 'করিডোর' 'করিডোর' মনে লাগে। শহীদ মিনার নিয়ে আলাদা একটা ভয় মেশানো ছিল, ভয়টা মুহূর্তে উড়ে যায়। সুজিত মুকুটকে বলে
: মুকুট গান করো।
মুকুট সুজিতকে এক ধমক দেয়
: ফাইজলামি পাইছো! মেয়েদের হলের সামনে করি গান আর ইশরাত ভাববো আমরা সবাই তারে দেখতে আইছি। পারতাম না।
গৌতম, আজিম মুকুটের ধমকের স্টাইল দেখে হো হো করে হেসে ওঠে। এত প্রাণের হাসি। মেয়েদের হলে যাবার তরুণ শিহরিত হাসি। আমার মাথায় একটা অসভ্য পংক্তি ঘূর্ণন দিয়ে ওঠে।
: বৃষ্টির ডানা নেই জল হয়ে আকাশ থেকে পড়ে। পাখিদের ডানা আছে, মুক্ত হয়ে ভূমি থেকে ওড়ে।
মাথার উপর দিয়ে চলে যায় কতোগুলো বিকাল পাখি। নাম জানি না। শহীদ মিনারের এক কোণায় মুকুল, অন্য কোণায় মোজাম্মেল, মাঝখানে কতোগুলো মেয়ে। মুকুল আর মোজাম্মেলের একটা দারুন ভ্যারিয়েশন আছে, মুকুল যেমন লম্বা, মোজাম্মেল তেমনি ছোটখাট। মুকুল আমাদের দেখিয়ে ৫৫৫ সিগারেট ধরায়। মোজাম্মেল সিগারেট খায় না, লাজুক কিংবা চোরা হাসি দিয়ে বসে থাকে, ভাবখানা, আমি নিজে আসিনি, মুকুল ধইরা নিয়া আসছে।
দেখাদেখি আমাদের আজিমও সিগারেট ধরালো ফস করে।
চাটগাঁ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিকাল নামে দলবলে। আমি মুগ্ধতা নিয়ে সন্ধ্যা দেখি, অপেক্ষা করি রাত নামার।
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন