ছিঃ! ছি...
পম্পা বিশ্বাস
তাহলে বিশ্বনাথ! তুমি তাহলে পারলে না! আজকেও হলো না! ছি... ছি...! অথচ তুমি কিনা ভেবেছিলে, আজ পারবেই! শুধু ভাবনাই নয়, এ এক রকমের সংকল্পও বটে।
মাসের পর মাস, দিনের পর দিন চলে যাচ্ছে। রোজ সিদ্ধান্ত নিচ্ছ, ...আজই, আজই সেই দিন। যে দিন থেকে তুমি শুরু করবে তোমার আত্মজৈবনিক লিখন... রোজনামচা স্টাইলে।
আসলে যখন থেকে বুঝেছিলে, হৃদয়বৃত্তিকে সময় না দিলে জীবন অসার্থক, তখন থেকেই এই যন্ত্রণার শুরু। ইচ্ছে আর বাধার লড়াই। দ্বন্দ্বের তীব্র দড়ি টানাটানি।
দীর্ঘ মাস-দিন-সপ্তাহের টানাপড়েনের পর যখন প্রমাণ হচ্ছে যে, কালকের দিনটাও যথারীতি নষ্ট হয়ে গেছে... চব্বিশটা ঘন্টা মালগাড়ি হয়ে শম্বুকগতিতে পেরিয়ে গেছে সময়ের চৌহদ্দি, তখন তুমি ভেঙে পড়লে। বুকের ভাঙা টুকরোগুলো গুছিয়ে তুলতে তুলতে পণ করলে, পরের দিনটা অর্থাৎ আজকের দিনটাতেই কলম উঠবে তোমার হাতে। তোমার সঙ্গে ঘটবে তোমার ইচ্ছের মধুচন্দ্রিমা। এ-প্রতিজ্ঞা অন্যান্য বারের থেকে আলাদা... ভীষণ বোল্ড, চূড়ান্ত শেষ কথা।
আজ অফিসে সারাটা দিন ভেসেছো সম্ভাব্য সুখের কল্পনায়। প্রথম প্রেম-স্পর্শের কম্পনের আগ্রহ মন জুড়ে। মনটা ছিল খুবই নরম। বাড়ির পথে ভিড় বাসে প্রচন্ড গরমে সেদ্ধ হতে হতেও পেছনের বয়স্ক মানুষটিকে ছেড়ে দিয়েছো নিজের সিট। অ্যাসবেসটাস-চাকতি-বাজানো গান-বাচ্চাকে পয়সা দিয়েছো। ভাড়ার বাচ্চা কোলে ভিখারি-মা’কেও নিরাশ করোনি। সবার ভালো হোক। আর তোমার জীবন তো পরিপূর্ণ হতেই চলেছে। বাড়ি ফিরেই খাতা-পেন... ব্যাস, আর কিছু নয়।
সন্ধ্যে। ঘরে ফিরলে। চলটা-ওঠা বারান্দায় নড়বড়ে ভাঙা চেয়ার। সেখানে বসে চা... রুটি। ভেতরে ছেলে পড়ছে, ‘অ্যাঁ অ্যাঁ... দুর্গম গিরি... কান্তার মরু... অ্যাঁ অ্যাঁ...’। ঠোঁটে কাপড়-চাপা ছেলের মা কাশতে কাশতে নামিয়ে দিয়ে গেল একটা খালি কেরোসিন-জেরিকেন আর বাজার-থলি। পকেট হাতড়ে বিড়ি তোমার মুখে। এমন সময় পথের ভুলোটা কোত্থেকে এসে সটান বারান্দায়। কিঁউ কিঁউ করে থুতনি চেটে দিল। আর তোমার আঙুলগুলোও ঢুকে পড়ল ওর লোমের মধ্যে।
অভ্যস্ত, দক্ষ, ক্ষিপ্র আঙুলেরা সহজেই সেখানে পেয়ে গেল একটা পোকা। ওহো! দারুণ উৎসাহ! আগ্রহের ঘোর মাথার মধ্যে। পোকার আড়ত ভুলোটা বরাবরই সোনার খনির চেয়েও দামি তোমার কাছে। বোকাটা আবার পালিয়ে না-যায়! দুই আঙুলের সুনিপুণ ম্যাজিকে পটাপট ধরাশায়ী হচ্ছে রক্তে ফুলে ওঠা পোকার দল।
কিন্তু ক্রমে তোমার ভেতরটা হিম হয়ে যাচ্ছিলো, কারণ তুমি বুঝতে পারছিলে যে, আজকেও হলো না... হলো না... এবং হলো না।
তাহলে বিশ্বনাথ! তুমি তাহলে পারলে না! আজকেও হলো না! ছি... ছি...! অথচ তুমি কিনা ভেবেছিলে, আজ পারবেই! শুধু ভাবনাই নয়, এ এক রকমের সংকল্পও বটে।
মাসের পর মাস, দিনের পর দিন চলে যাচ্ছে। রোজ সিদ্ধান্ত নিচ্ছ, ...আজই, আজই সেই দিন। যে দিন থেকে তুমি শুরু করবে তোমার আত্মজৈবনিক লিখন... রোজনামচা স্টাইলে।
আসলে যখন থেকে বুঝেছিলে, হৃদয়বৃত্তিকে সময় না দিলে জীবন অসার্থক, তখন থেকেই এই যন্ত্রণার শুরু। ইচ্ছে আর বাধার লড়াই। দ্বন্দ্বের তীব্র দড়ি টানাটানি।
দীর্ঘ মাস-দিন-সপ্তাহের টানাপড়েনের পর যখন প্রমাণ হচ্ছে যে, কালকের দিনটাও যথারীতি নষ্ট হয়ে গেছে... চব্বিশটা ঘন্টা মালগাড়ি হয়ে শম্বুকগতিতে পেরিয়ে গেছে সময়ের চৌহদ্দি, তখন তুমি ভেঙে পড়লে। বুকের ভাঙা টুকরোগুলো গুছিয়ে তুলতে তুলতে পণ করলে, পরের দিনটা অর্থাৎ আজকের দিনটাতেই কলম উঠবে তোমার হাতে। তোমার সঙ্গে ঘটবে তোমার ইচ্ছের মধুচন্দ্রিমা। এ-প্রতিজ্ঞা অন্যান্য বারের থেকে আলাদা... ভীষণ বোল্ড, চূড়ান্ত শেষ কথা।
আজ অফিসে সারাটা দিন ভেসেছো সম্ভাব্য সুখের কল্পনায়। প্রথম প্রেম-স্পর্শের কম্পনের আগ্রহ মন জুড়ে। মনটা ছিল খুবই নরম। বাড়ির পথে ভিড় বাসে প্রচন্ড গরমে সেদ্ধ হতে হতেও পেছনের বয়স্ক মানুষটিকে ছেড়ে দিয়েছো নিজের সিট। অ্যাসবেসটাস-চাকতি-বাজানো গান-বাচ্চাকে পয়সা দিয়েছো। ভাড়ার বাচ্চা কোলে ভিখারি-মা’কেও নিরাশ করোনি। সবার ভালো হোক। আর তোমার জীবন তো পরিপূর্ণ হতেই চলেছে। বাড়ি ফিরেই খাতা-পেন... ব্যাস, আর কিছু নয়।
সন্ধ্যে। ঘরে ফিরলে। চলটা-ওঠা বারান্দায় নড়বড়ে ভাঙা চেয়ার। সেখানে বসে চা... রুটি। ভেতরে ছেলে পড়ছে, ‘অ্যাঁ অ্যাঁ... দুর্গম গিরি... কান্তার মরু... অ্যাঁ অ্যাঁ...’। ঠোঁটে কাপড়-চাপা ছেলের মা কাশতে কাশতে নামিয়ে দিয়ে গেল একটা খালি কেরোসিন-জেরিকেন আর বাজার-থলি। পকেট হাতড়ে বিড়ি তোমার মুখে। এমন সময় পথের ভুলোটা কোত্থেকে এসে সটান বারান্দায়। কিঁউ কিঁউ করে থুতনি চেটে দিল। আর তোমার আঙুলগুলোও ঢুকে পড়ল ওর লোমের মধ্যে।
অভ্যস্ত, দক্ষ, ক্ষিপ্র আঙুলেরা সহজেই সেখানে পেয়ে গেল একটা পোকা। ওহো! দারুণ উৎসাহ! আগ্রহের ঘোর মাথার মধ্যে। পোকার আড়ত ভুলোটা বরাবরই সোনার খনির চেয়েও দামি তোমার কাছে। বোকাটা আবার পালিয়ে না-যায়! দুই আঙুলের সুনিপুণ ম্যাজিকে পটাপট ধরাশায়ী হচ্ছে রক্তে ফুলে ওঠা পোকার দল।
কিন্তু ক্রমে তোমার ভেতরটা হিম হয়ে যাচ্ছিলো, কারণ তুমি বুঝতে পারছিলে যে, আজকেও হলো না... হলো না... এবং হলো না।
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন