কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

শুক্রবার, ১৪ জুন, ২০১৩

০৫ অরূপরতন ঘোষ

অচেনা শহরে, কবিতায়
অরূপরতন ঘোষ



যে কোনো অচেনা শহরে কবিতা লুকিয়ে থাকে, এমনই বিশ্বাসে বহুবার ঢুকেছি নানান শহরে। কখনও ভোরে, কখনও বা দুপুর-রাত্রে। সেখানে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করা –- দু’চারদিন এদিক ওদিক দ্রষ্টব্যস্থল ঘুরে সময় ভালোই কেটে গেছে।

আত্রেয়ী নদীর পাড়ে। সামান্য দূরে শহরের আলো দেখা যায়। রিক্সায় হাসপাতালের পাশের রাস্তায়... জমিদার বাড়িতে। মৃদু গুঞ্জন ওঠে। কেয়ারটেকার ব্যস্ত রাতের রান্নায়। তার পাশে বসি। দু’চার দিন ভালোই কেটে যায়।

*********

আবার আলস্য আসে। সীমাহীন কর্মহীনতা, কখনও। উত্তেজনা হয়। উত্তেজনা বাড়ে, কমে। শহরতলির ট্রেনে, স্থৈতিক রশ্মির টান। লক্ষ্য করি, আরোহীর জামার চমৎকার রঙ... খুশি খুশি মনে হয়। দেখি ট্রেনের কামরায় লেখা ক্রোধবাণী। বাংলায় ও অস্পষ্ট অক্ষরে –- “রঞ্জিত মাতাল চুল্লু খায়। বউকে মারধোর করে। অজয় মাতাল রঞ্জিতের বউকে নিয়ে নিয়েছে”। আসন্ন সূর্যাস্তের মধ্যেই সেই দিন বাড়ি ফিরে আসি আমি।

*********

আকস্মিক ও দ্রুত
এক সমুদ্র রাতে এসে দাঁড়ায়, কিছু
ক্ষয়ক্ষতি করে
নগরীর প্রান্ত বরাবর
উড়ে যায় নীল শার্ট, রবারের মতো
ষাট ওয়াটের আলোয়
তাকেই দোনলা বন্দুক বলে ভাবি –-

অ্যাশট্রেটিও চলাফেরা করে ঘরের ভিতর
যেন ক্ষীণ আশ্বাসবিন্দু
জেগে ওঠে...

গতির ধারণাসমূহ, শূন্য বেগের হিসাব
সরল দোলগতি ইত্যাদি
আজ প্রয়োজনীয় আলোকাভাবে
এই ঘরে, স্বাদু নিরীক্ষার মতো মনে হয়!

*********

কবিতায় কয়েকটি বিন্দু মাত্র উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। এদেরই শক্তিকে হ্রাস করতে থাকি ক্রমাগত। বাস গুমটিতে, রক্ত, কফ্‌, পানের পিক, লজেন্স বিক্রেতার বয়ামে চোখ রাখি। গোপনে। সামান্য দ্বিধাগ্রস্ততায়। অচেনা শহরে, দু’চার দিন সময় ভালোই কেটে যায়।

আহরিত তথ্যের এই স্বীকৃত রূপ একটি অন্তর্মুখি উত্তেজনা তৈরি করে। চক্ষু বিস্ফারিত হয়। শ্রুতির বিকল্পভাব সজাগ ও প্রখর হয়ে ওঠে। ছায়াগুলি ঢুকে আসে মনের ভিতর। ভিতর থেকে ঠেলে বেরিয়ে আসতে চায়। এই সংক্ষিপ্ত ও ঘনসংবদ্ধ রূপ... তারই সামনে ঝুঁকে পড়ি দিনান্তে, অচেনা শহরে।

0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন