কখনও হয়নি দেখা চন্দনের বন...
মেঘ অদিতি
নীল খামে ভেসে আসে সকালের গান
রবি তার মাথায় স্নেহমাখা আলোহাত রাখে। চারপাশ ভেসে যায় –- গান আর কবিতায়। কিশোরী ধীরে এসে দাঁড়ায়, তারুণ্যের দরজায়। মেলে ধরে তার পদ্মদল। ঝুলবারান্দায় তখন উঠে আসে জেসমিন। চিক্কণ পাপড়ি রাতজেসমিনের খুব গন্ধমাখা এক হলুদ বিকেল সেদিন। সে সুবাসে, সে আভায় তার হৃদয়ে বাজে সুর, কাজলচোখে এসে পড়ে মায়াদৃষ্টি।
মুহূর্তে তরুণীর লঘু পা, তরুণীচঞ্চল হরিণী। অতঃপর নীলখাম। লেখা থাকে--
ভালোবাসি, বড় ভালোবাসি
ভালোবাসি, জন্মের মতো
ভালোবাসি, মৃত্যুর মতো…
অল্প কিছু শব্দ, তাতেই তার শ্বাস আটকে যায়, পরক্ষণে স্পন্দন দ্রুতগামী হয়। উদাস চোখ আনমনা। দূরের সবুজে চেয়ে থেকে, হয়ে ওঠে তা -- সমুদ্রঢেউ।
আবার মিলায় যে চোখ, ওই বিকেল হাওয়ায়
স্পর্শ নয়, গন্ধ নয়। চোখ থাকে শুধু চোখে। অরণ্য মুখরিত শব্দ বকুলে। অনুচ্চে তরুণী কি বলেছিল, বড় ভালোবাসি?
তরুণ শোনেনি। তরুণীও জানে না তরুণ হৃদয়ে জেগেছিল কোনো শব্দ প্রহর। দ্রুত নিঃশেষিত আরেকটি হলুদ বিকেল ফুরিয়ে যায় তারপর কেবল অদর্শনে। আসে তীব্র প্রতীক্ষার এক শীতল রাত। রাত পেরিয়ে পরদিন ম্লান ভোর।
তাকে আর কখনো দেখেনি সে তরুণী সজল চোখ
কাজল ধুয়ে গেলে বুঝি পড়ে থাকে শুধু জলের সিম্ফনি!
অচেনা বাতাস, ভেসে যায় কার শব্দরেণু…
এখন মধ্যদিন। আবারও সে রবি’তে লীন, সে ধারণ করে রবিকে তার জীবন ভারে। নৈবেদ্য রাখে সে গানের রেকাবে। তাতেও মন অস্থির হলে গীতবিতান সরিয়ে তুলে নেয় অমিয়গরল অনন্ত সোপান এক শূন্য ভুবন। সেখান থেকেই তার জানালায় একদিন বর্ষা আসে; নীলগিরির খোঁজে। পূর্বজন্মের চিঠির বদলে বৈদ্যুতিনচিঠি আসে কবিতায়, গানে। কথা বলে গানের দোহার । কামিনী গন্ধ মেখে বলে যায় --
অলক্ষ্যে ছুঁড়েছ তীর হৃদয়ে আবার?
উঠেছে ঘূর্ণি তুমুল
জাগরী কে তুমি
তন্ত্রিতে বাজাও কেন অলৌকিক সুর!
নিউরণে বৃষ্টিস্নান, হৃদয়ে পাতার মর্মর। ধারাস্নানে ভিজে ওঠে নগরী রাতপ্রহর। তার শরীর ফুঁড়ে বেরোয় উড়ান ডানা। উর্ধ্বাকাশে চিত্রার্পিত তার দৃষ্টি যখন, তখনই ছোবল তোলে এক বিষধর।
কখনো হয়নি দেখা, চন্দনের বন অথবা তোমারে...
আপরাহ্ণিক রাগিনী বেলা। প্রহরের শেষ গান। থেকে থেকে ডেকে যায় বিষাদপাখি। ক্লান্তির ভাঁজে জমে ওঠে কালশিটে শিরা। তারই গায়ে এসে পড়ে কনেদেখা আলো। সে হলুদ আভায় তাকে দেখায় বালিকার মতো। লক্ষণগণ্ডির বাইরে পা রাখতে ভরসা হয় না, তবু বার বার সে অমোঘ ডাক, ফেরানো কি যায়!
সে ভেসে যায়, তাকে ভাসিয়ে নেয় এক জ্যোৎস্নাপ্রবল রাত। চন্দনের বনে বনে বেজে ওঠে অলৌকিক সুর।
যেতে যেতে খানিক পোড়ে তার ডানা
যেতে যেতে দলে যায় সে নিশিকুসুম...
রাত তাই তার চাদর গুটিয়ে নেয় ক্রমে
ওই সম্মোহনে যত সে ছুটে যায়... যায় ছুটে...
তখনই মিলিয়ে যায় শেষতম দূর শুকতারা...
সে তখন বালিকা থেকে কিশোরী হয়। কিশোরী ছুটে চলে চন্দনগন্ধমাখা পোড়া ডানা নিয়ে। তার ডানার আঁচে পুড়তে থাকে তার হৃদয়। সে ধীরে ধীরে তরুণী হয়, যৌবনপ্রাপ্ত হয়
হৃদয় ফুঁড়ে ওঠে লাভা... সে মধ্যবয়সে পৌঁছায়।
হৃদয় ছাই হলে সেখানে পড়ে থাকে নিস্তব্ধ কবিতা...
নীল খামে ভেসে আসে সকালের গান
রবি তার মাথায় স্নেহমাখা আলোহাত রাখে। চারপাশ ভেসে যায় –- গান আর কবিতায়। কিশোরী ধীরে এসে দাঁড়ায়, তারুণ্যের দরজায়। মেলে ধরে তার পদ্মদল। ঝুলবারান্দায় তখন উঠে আসে জেসমিন। চিক্কণ পাপড়ি রাতজেসমিনের খুব গন্ধমাখা এক হলুদ বিকেল সেদিন। সে সুবাসে, সে আভায় তার হৃদয়ে বাজে সুর, কাজলচোখে এসে পড়ে মায়াদৃষ্টি।
মুহূর্তে তরুণীর লঘু পা, তরুণীচঞ্চল হরিণী। অতঃপর নীলখাম। লেখা থাকে--
ভালোবাসি, বড় ভালোবাসি
ভালোবাসি, জন্মের মতো
ভালোবাসি, মৃত্যুর মতো…
অল্প কিছু শব্দ, তাতেই তার শ্বাস আটকে যায়, পরক্ষণে স্পন্দন দ্রুতগামী হয়। উদাস চোখ আনমনা। দূরের সবুজে চেয়ে থেকে, হয়ে ওঠে তা -- সমুদ্রঢেউ।
আবার মিলায় যে চোখ, ওই বিকেল হাওয়ায়
স্পর্শ নয়, গন্ধ নয়। চোখ থাকে শুধু চোখে। অরণ্য মুখরিত শব্দ বকুলে। অনুচ্চে তরুণী কি বলেছিল, বড় ভালোবাসি?
তরুণ শোনেনি। তরুণীও জানে না তরুণ হৃদয়ে জেগেছিল কোনো শব্দ প্রহর। দ্রুত নিঃশেষিত আরেকটি হলুদ বিকেল ফুরিয়ে যায় তারপর কেবল অদর্শনে। আসে তীব্র প্রতীক্ষার এক শীতল রাত। রাত পেরিয়ে পরদিন ম্লান ভোর।
তাকে আর কখনো দেখেনি সে তরুণী সজল চোখ
কাজল ধুয়ে গেলে বুঝি পড়ে থাকে শুধু জলের সিম্ফনি!
অচেনা বাতাস, ভেসে যায় কার শব্দরেণু…
এখন মধ্যদিন। আবারও সে রবি’তে লীন, সে ধারণ করে রবিকে তার জীবন ভারে। নৈবেদ্য রাখে সে গানের রেকাবে। তাতেও মন অস্থির হলে গীতবিতান সরিয়ে তুলে নেয় অমিয়গরল অনন্ত সোপান এক শূন্য ভুবন। সেখান থেকেই তার জানালায় একদিন বর্ষা আসে; নীলগিরির খোঁজে। পূর্বজন্মের চিঠির বদলে বৈদ্যুতিনচিঠি আসে কবিতায়, গানে। কথা বলে গানের দোহার । কামিনী গন্ধ মেখে বলে যায় --
অলক্ষ্যে ছুঁড়েছ তীর হৃদয়ে আবার?
উঠেছে ঘূর্ণি তুমুল
জাগরী কে তুমি
তন্ত্রিতে বাজাও কেন অলৌকিক সুর!
নিউরণে বৃষ্টিস্নান, হৃদয়ে পাতার মর্মর। ধারাস্নানে ভিজে ওঠে নগরী রাতপ্রহর। তার শরীর ফুঁড়ে বেরোয় উড়ান ডানা। উর্ধ্বাকাশে চিত্রার্পিত তার দৃষ্টি যখন, তখনই ছোবল তোলে এক বিষধর।
কখনো হয়নি দেখা, চন্দনের বন অথবা তোমারে...
আপরাহ্ণিক রাগিনী বেলা। প্রহরের শেষ গান। থেকে থেকে ডেকে যায় বিষাদপাখি। ক্লান্তির ভাঁজে জমে ওঠে কালশিটে শিরা। তারই গায়ে এসে পড়ে কনেদেখা আলো। সে হলুদ আভায় তাকে দেখায় বালিকার মতো। লক্ষণগণ্ডির বাইরে পা রাখতে ভরসা হয় না, তবু বার বার সে অমোঘ ডাক, ফেরানো কি যায়!
সে ভেসে যায়, তাকে ভাসিয়ে নেয় এক জ্যোৎস্নাপ্রবল রাত। চন্দনের বনে বনে বেজে ওঠে অলৌকিক সুর।
যেতে যেতে খানিক পোড়ে তার ডানা
যেতে যেতে দলে যায় সে নিশিকুসুম...
রাত তাই তার চাদর গুটিয়ে নেয় ক্রমে
ওই সম্মোহনে যত সে ছুটে যায়... যায় ছুটে...
তখনই মিলিয়ে যায় শেষতম দূর শুকতারা...
সে তখন বালিকা থেকে কিশোরী হয়। কিশোরী ছুটে চলে চন্দনগন্ধমাখা পোড়া ডানা নিয়ে। তার ডানার আঁচে পুড়তে থাকে তার হৃদয়। সে ধীরে ধীরে তরুণী হয়, যৌবনপ্রাপ্ত হয়
হৃদয় ফুঁড়ে ওঠে লাভা... সে মধ্যবয়সে পৌঁছায়।
হৃদয় ছাই হলে সেখানে পড়ে থাকে নিস্তব্ধ কবিতা...
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন