দরজা
রিমা দাস
রিসেপশান থেকে সুন্দরী মেয়েটি ডাক দিল --
‘মল্লিকা মিত্র, পেশেন্ট নাম্বার সিক্সটিন’
চেম্বারের দুজন হেল্পার ও একটি মেয়ের সাহায্যে পেশেন্ট ডাক্তারের চেম্বারে ঢুকলো।
- আপনার কতদিন এইরকম অবস্থা?
- আজ দু-তিন মাস হলো ব্যথাটা সাঙ্ঘাতিক বেড়ে গেছে। নড়াচড়া চলাফেরা করতেই কষ্ট হচ্ছে। ধীরে ধীরে প্রায় অথর্ব হয়ে পড়ছি।
- এর আগে কোনো ট্রিটমেন্ট করিয়েছিলেন?
- হ্যাঁ, বছর দুয়েক আগে এক অর্থপেডিক ডাক্তার দেখিয়েছিলাম। উনি কিছু ওষুধ আর পেইন কিলার দিয়েছিলেন।
- হুঁ, বলে যান
- কিছুদিন মোটামুটি ঠিকই ছিলাম, তারপরে আবার যেই কে সেই
- গার্জেন কেউ সাথে আসেনি?
- আমিই আমার গার্জেন
- দেখুন আপনার পজিট্রন এমিসন টমগ্রাফির রিপোর্টে যা দেখছি, অবস্থা অনেক জটিল হয়ে গেছে। হাঁটু থেকে পায়ের নিচের দিকের হাড় ক্ষয়ে গিয়ে বেঁকে গেছে। ফলে শরীরের ব্যালেন্স ধরে রাখতে পারছে না। টিস্যুও এফেক্টেড। আপনি এডুকেটেড, বুঝতেই পারছেন কোন্ অসুখের কথা বলছি।
- সারবে না?
- এইসব কেসে ফুল রিকভারির চান্স একটু কম থাকে। তবুও বলা তো যায় না! এখন কিছু ওষুধ আর ইনজেক্শান লিখে দিচ্ছি, মাস দু’য়েক কন্টিনিউ করুন, তারপর আবার চেক-আপ করিয়ে যাবেন।
‘মধুর তোমার শেষ যে না পাই...’ মোবাইলটা গেয়ে উঠলো
কালিম্পং থেকে এক সময়ের সহকর্মী থিরাং
- কেমন আছো মল্লিকাদি? ডাক্তার কি বলল?
- কিছু না বলে আমার মতোন সুন্দরীকে ছেড়ে দেবে! প্রেমের কথা বলল
- ঠাট্টা নয়, সিরিয়াসলি বল, কী বলল
- শরীরের হাড়ে ঘুণপোকা ধরেছে। ডাক্তারের প্রেমালাপ শুনে মনে হলো, ওষুধ ডি ডি টি স্প্রেতেও তেমন খুব একটা কাজ হবে না।
- কী বলছ, কিচ্ছু মাথায় ঢুকছে না
- কেন বুঝতে পারছিস না, আমি এখন বোন ক্যান্সারের পেশেন্ট, অনেক দেরি হয়ে গেছে। কী করব এখন! কোথায় যাব? মরলাম কি বাঁচলাম কে খোঁজ রাখবে!
- প্লিজ মল্লিকাদি, ভেঙে পড়ো না, তুমি কোনো হোমে চলে যাও । ওরা দেখবে তোমায়।
- বলছিস, সত্যি দেখবে! ব্যথার সময় হাত বুলিয়ে দেবে? খেতে না পারলে যত্ন করে খাইয়ে দেবে?
- তুমি এভাবে কেঁদো না
- ভালো লাগে না রে থিরাং, এই অর্থহীন ভাবে একা একা বেঁচে থাকতে।
- ডাক্তারের কথা মেনে চল, গান শোন, বই পড়ো। মন ভালো রাখো
- থিরাং, আমি একটা কথা ভাবছি
- কি?
- আত্মহত্যা তো করতে পারব না । বাঁচার অন্য একটা রাস্তা মাথায় এসেছে
- এই তো লক্ষ্মী মেয়ে, রাস্তাটা কি শুনি
- আজকাল নিউজপেপারে পড়িস না -- ঐ যে কী সব সুপারি কিলার টিলার হয়! তাদের একজনকে ভাড়া করলে কেমন হয় বল তো?
- হি হি হি... গ্রেট, বাঃ, আগের ফর্মে এবার ফিরে এসেছ
টিক... টিক... টিক... রাত এগারোটা
মনিটার... ক্লিক... হোমপেজ... গুগোল সার্চ... কিলার... কিলার জিনস... না না... কিলার... সুপারি... ডু উই মিন সুপারি কিলার... ক্লিক...
রিমা দাস
রিসেপশান থেকে সুন্দরী মেয়েটি ডাক দিল --
‘মল্লিকা মিত্র, পেশেন্ট নাম্বার সিক্সটিন’
চেম্বারের দুজন হেল্পার ও একটি মেয়ের সাহায্যে পেশেন্ট ডাক্তারের চেম্বারে ঢুকলো।
- আপনার কতদিন এইরকম অবস্থা?
- আজ দু-তিন মাস হলো ব্যথাটা সাঙ্ঘাতিক বেড়ে গেছে। নড়াচড়া চলাফেরা করতেই কষ্ট হচ্ছে। ধীরে ধীরে প্রায় অথর্ব হয়ে পড়ছি।
- এর আগে কোনো ট্রিটমেন্ট করিয়েছিলেন?
- হ্যাঁ, বছর দুয়েক আগে এক অর্থপেডিক ডাক্তার দেখিয়েছিলাম। উনি কিছু ওষুধ আর পেইন কিলার দিয়েছিলেন।
- হুঁ, বলে যান
- কিছুদিন মোটামুটি ঠিকই ছিলাম, তারপরে আবার যেই কে সেই
- গার্জেন কেউ সাথে আসেনি?
- আমিই আমার গার্জেন
- দেখুন আপনার পজিট্রন এমিসন টমগ্রাফির রিপোর্টে যা দেখছি, অবস্থা অনেক জটিল হয়ে গেছে। হাঁটু থেকে পায়ের নিচের দিকের হাড় ক্ষয়ে গিয়ে বেঁকে গেছে। ফলে শরীরের ব্যালেন্স ধরে রাখতে পারছে না। টিস্যুও এফেক্টেড। আপনি এডুকেটেড, বুঝতেই পারছেন কোন্ অসুখের কথা বলছি।
- সারবে না?
- এইসব কেসে ফুল রিকভারির চান্স একটু কম থাকে। তবুও বলা তো যায় না! এখন কিছু ওষুধ আর ইনজেক্শান লিখে দিচ্ছি, মাস দু’য়েক কন্টিনিউ করুন, তারপর আবার চেক-আপ করিয়ে যাবেন।
‘মধুর তোমার শেষ যে না পাই...’ মোবাইলটা গেয়ে উঠলো
কালিম্পং থেকে এক সময়ের সহকর্মী থিরাং
- কেমন আছো মল্লিকাদি? ডাক্তার কি বলল?
- কিছু না বলে আমার মতোন সুন্দরীকে ছেড়ে দেবে! প্রেমের কথা বলল
- ঠাট্টা নয়, সিরিয়াসলি বল, কী বলল
- শরীরের হাড়ে ঘুণপোকা ধরেছে। ডাক্তারের প্রেমালাপ শুনে মনে হলো, ওষুধ ডি ডি টি স্প্রেতেও তেমন খুব একটা কাজ হবে না।
- কী বলছ, কিচ্ছু মাথায় ঢুকছে না
- কেন বুঝতে পারছিস না, আমি এখন বোন ক্যান্সারের পেশেন্ট, অনেক দেরি হয়ে গেছে। কী করব এখন! কোথায় যাব? মরলাম কি বাঁচলাম কে খোঁজ রাখবে!
- প্লিজ মল্লিকাদি, ভেঙে পড়ো না, তুমি কোনো হোমে চলে যাও । ওরা দেখবে তোমায়।
- বলছিস, সত্যি দেখবে! ব্যথার সময় হাত বুলিয়ে দেবে? খেতে না পারলে যত্ন করে খাইয়ে দেবে?
- তুমি এভাবে কেঁদো না
- ভালো লাগে না রে থিরাং, এই অর্থহীন ভাবে একা একা বেঁচে থাকতে।
- ডাক্তারের কথা মেনে চল, গান শোন, বই পড়ো। মন ভালো রাখো
- থিরাং, আমি একটা কথা ভাবছি
- কি?
- আত্মহত্যা তো করতে পারব না । বাঁচার অন্য একটা রাস্তা মাথায় এসেছে
- এই তো লক্ষ্মী মেয়ে, রাস্তাটা কি শুনি
- আজকাল নিউজপেপারে পড়িস না -- ঐ যে কী সব সুপারি কিলার টিলার হয়! তাদের একজনকে ভাড়া করলে কেমন হয় বল তো?
- হি হি হি... গ্রেট, বাঃ, আগের ফর্মে এবার ফিরে এসেছ
টিক... টিক... টিক... রাত এগারোটা
মনিটার... ক্লিক... হোমপেজ... গুগোল সার্চ... কিলার... কিলার জিনস... না না... কিলার... সুপারি... ডু উই মিন সুপারি কিলার... ক্লিক...
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন