কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

রবিবার, ১ জুলাই, ২০১৮

তাপস রায়




যন্ত্র

ছেপে যাচ্ছে যন্ত্র--ঘট ঘটাং শব্দে বুঝে নাও সবকিছু চলছে
এই পৃথিবীর একটা ছাদ আছে,
প্রতিদিন সেখানে আরাম কেদারা নিয়ে আমি বসে থাকি
বাতাসে দুলে উঠি আমি--
ঘুমপাড়ানি গানে আর ঘুম আসে না,
অথচ ক্লান্তিতে ঝুঁকে পড়ি।  

একটা পরীর ঠিকানা পায়নি আজও, অথচ পরী আছে জানি
আমার বেড় থেকে হঠাৎ অজস্র প্রজাপতি উড়ে গেল,
ওরা ফুল খুঁজে ফেরে। 
অথচ রঙ-কাগজ বিছিয়ে তুমি ফুল বাগান তৈরি করেছ
চমৎকার শব্দে ভেঙ্গে যাচ্ছে উন্মাদনা।
মদিরা রসায়ন মনকে শরীর বানিয়ে নিচ্ছে,  
আর মন কেমন পাখি হয়ে উড়ে যাচ্ছে দেখো !
মানুষ দেবতা হচ্ছে, আকাশ উড়ে যাচ্ছে,  
শূন্যতায় এক ঝাঁক পাখি দেখি,
একটা বাঘ ও নিরীহ হরিণের মিলন ঘটছে,
রাত্রি হঠাৎ ফেটে পড়ছে অজস্র রং মশালে।
তোমায় চিনতে পারেনি, রং-মোড়া ছিল তোমার বাথান। 


চুমু

একটা চুমুতে নাকি ভালোবাসা ফিরে এসেছিল!
স্পর্শপাতে মৃত জেগে উঠতে পারে,
ছোঁয়াতে জন্ম নিচ্ছে অস্তিত্ব,
কুসুমের মাঝে এখন বিলীয়মান হয়ে আছে। 
পরিপাটি করে এক একটি পাপড়ি তুলে রাখা আছে
আবার তেমনি সাজিয়ে রাখতে হবে পদ্মে।


প্রবাহ

জলপ্রবাহে জীবন মিশে গেছে
মৃতের মত তুমি পচে যাও, সমস্ত কিছু ধুয়ে-
মুছে গিয়ে সারবত্তা  রাখা থাকে।
আবার আবাহন হবে, কোন চমৎকারী ঠিকানায়
ফুল চন্দন মেখে একটা আগামীকাল।


কুণ্ডলিনী

শতাব্দী ফিরে গেছে বহুকাল, তুমি তেমনি বসে আছো। 
পাঁজির পুরনো পাতা থেকে তোমার জন্ম নক্ষত্র এখনো ভেসে ওঠে।
একটা ঘণ্টাধ্বনি শব্দ রণিত হয়--কোথাও জপমালা চলছে
জন্মাচ্ছে, যোগ-বিয়োগের ভাগবাটোয়ারা চলছে।
শুয়োরের মাংসের পাততাড়ি বিছিয়ে আছে।  
নৌকায় জীবনের  ঘর-সংসার চলছে। অথচ নদীর পার নেই
তুমি দেখো অনন্ত নারীর বুক থেকে অজন্মা এসেছে,
তুমি দেখো নারীর ঠোঁট থেকে বিষক্ষয় শুরু হয়েছে,
অতলে সবকিছু গুটিয়ে যাচ্ছে, গুটিয়ে যাচ্ছে,
সুতোর সূত্র ধরে কোথাও তার শেষ নেই!

বিরহ মাঝ থেকে ধোঁয়া উড়ছে,
খরা দুপুরের তাতা থেকে ভাতঘুম উঠে আসে,
আয়ুষের আঘ্রাণ থেকে ক্ষুধা জন্ম নিচ্ছে।
ক্ষুধার অঘ্রাণ থেকে একটা নগ্ন শরীরের জন্ম হচ্ছে,  
আর সেখান থেকে ধর্ষিত হচ্ছে ফুল-লতা-পাতার কুণ্ডলিনী।



0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন