কবিতার কালিমাটি ১৩৪ |
পঞ্চাশ বছর
আমারও একটি স্বপ্ন থাকা উচিত ছিল
সু-স্বপ্নের জন্যে একটি নিপাট ঘুমিয়ে পড়া
অথবা সজাগ থেকে, মানুষের হৃদয় বা
স্বপ্ন-ফেরিওয়ালাদের হেঁকে যাওয়া বোঝা।
দরকার যে ছিল, বোঝে দুপুরবেলা, সন্ধে না
রাত্রি একা পেয়ে চরম উশৃঙ্খল হয়ে, বকে দেয়
বলে, কিছুই দরকার ছিল না শ্লা।
এই উদভ্রান্তি নাকি -- একটি নিঃশব্দ নেশা
হতাশার টিপ্পনী-শরীরের উপর জুতো পায়ে
দাঁড়িয়ে, আমাকে ছাড়তে হয় সিগারেটের ধোঁয়া।
শেষে, ছোট্ট পথ-নাটকের সংলাপের মতো
বলতে হয় মাত্র জনা ছয়েক দর্শকের সামনে--
আমার কোনো স্বপ্ন থাকা উচিত ছিল না।
তার
প্রতিটি ইলেকট্রিক শকে মৃত্যুর পর
আত্মশক্তির কাছে কাঁদে, আত্ম-পরাভব
নিয়ন্ত্রিত, জড়ত্ব, অভিধার অন্তঃচেতনে
ধ্বংসের সুপরিবাহী শরীর, শাঁসের ভিতর
রসের ভিতর, রক্তের ভিতর, মনের ভিতর
প্রতিটি ইলেকট্রিক শকে মৃত্যুর পর
তড়িদাহত, বড় স্তব্ধ, শান্ত, অবিকৃত, জড়
নিস্তরঙ্গ, শুকনো, সংকুচিত, ফ্যাকাশে
ফের একবার জ্বলতে না-পারা ফিলামেন্ট
আলোক সন্ধানীর আশ্চর্য এক নির্বাপন
প্রতিটি ইলেকট্রিক শকে মৃত্যুর পর।
শব্দের মধ্যে নিঃশব্দ
একটি শব্দ অনেকক্ষণ ভাবাতে পারে আপনাকে
একটি প্রেক্ষিত একটি বোধকে খুঁজে এনে
তার গায়ে পরিয়ে দেয় কোনো একটি ধ্বনির সভ্য জামা,
তবে উত্তেজনা বা আবেগ বা বিরক্তির দরজাটি
তেমন কপাট-ভাঙা হলে, অথবা উচ্চারণের
চৌকাঠ যদি একান্ত খোলাই থাকে--
শব্দটি চঞ্চল বালকের মতো ঘর ছুটে
বেরিয়ে পড়ে রাস্তায়
অথচ মানুষের শ্রবণের এতো যানজট
মস্তিষ্কের চৌরাস্তায় হঠাৎ একটি সংঘর্ষ - অসম্ভব
নয়,
আমরা তো দুর্ঘটনা পর্যন্ত অপেক্ষা করি---
যেখান থেকে আমাদের শুরু হয়-- মনন, সংবেদন, সমবেদনা
প্রভৃতি পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত প্রাণ যেতে পারে উড়ে
শব্দের প্রক্ষেপ এতো কেন দুর্ঘটনাপ্রবণ...
0 কমেন্টস্:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন