কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

মঙ্গলবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৩

শম্পা ঘোষ

 

কবিতার কালিমাটি ১৩৩


দূরত্ব

 

মানুষ বদলায় বদলায় না মন,

যন্ত্রণার কবরে স্মৃতির অস্থিরা মত বদলায়,

চিরহরিৎ নিশ্চর বার্তা তীক্ষ্ণধারে

ক্ষতচিহ্ন তৈরি করে

আত্মহনন মানে কি তবে শুধুই দেহহনন?

অনুভূতির ক্ষরণে কীভাবে জন্মে যায় নতুন মানুষেরা

উল্টো স্রোতে গা ভাসাতে ভাসাতে জোছনাতেও রাত্রি নেমে আসে ঘোলাটে চাঁদের

মিথ্যা জৌলুসে জেলিফিশ রঙের বিষাদ ভর করে,

সাংকেতিক ভাবনায় নমর্থক হয়ে থেকে যায়,

বধির বিষ্ময়ে দূরত্ব এড়ানো দায়

মেরুদণ্ড সোজা রেখে শব্দরা কবিতা হতে চায়।

 

আগুন্তক

 

প্রশস্ত দুপুর অযথা দীর্ঘকায় হয়

সূর্যাস্ত বয়ে যায় আগুন্তক যাত্রাপথে,

ফসিলের সন্ধানে নিঃশ্বাসের সমন ঘনায়,

বালিয়াড়ি ছাপ অনন্তকাল শীত ঘুমের মতো

মন খারাপের নীলে আসক্ত ড্রাগের নেশা,

শব্দ রঙে মাঙ্গলিক চিহ্নরা তবু জেগে থাকে.

ছাদের ওপর ছড়িয়ে বর্ণাক্ষর

ধ্বনি মথিত হওয়ার আগেই অন্ধকার নেমে আসে,

এলিয়নের জন্য অন্য গ্রহের প্রয়োজন নেই আর-

বিদ্যুৎ চিহ্নের অপেক্ষায় সব একাকার,

শরীর থেকে ঝরে পড়ে মেদহীন নিরপেক্ষ স্বনির্ভরতা,

আনাচে-কানাচে স্বার্থপর হিসেবের দলাদলি,

পাতা ভাঙ্গা কান্নায় অবসেসড হয়ে পড়ি

ঝুলন্ত সেতুর বেয়ারা অস্তিত্ব অবোধ বিষম ঘটায়,

কলম ছাড়া শব্দের নির্বাক প্রতিদ্বন্দ্বী.

জীবনের অংশটুকু ভেসে যায় কাশফুলের সুবাসে।

 

জৈবতন্ত্র

 

নদীর বুঝি মন হয়!

স্তরের উপর স্তর পারিপার্শ্বিক জনিত কারণে টেথিস থেকে হিমালয়ের মত পরিবর্তনের গল্প দিকদর্শন করায়,

আয়নার সামনে আলস্যের ধুলো ওড়ে,

উৎসব গায়ে মেখে উৎশৃংখল যাযাবর পাশে লেখা থাকে বাজ পাখির নৈপুণ্যতা,

ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ছে পরিধিরা-

ফাস্টফুড আর কোল্ড্রিংসের মতো মাতোয়ারা জীবন

অসম ভাবনায় আড়ালপ্রিয় সবাই,

বিড়ালের শৌচকার্যের পর মাটিচাপা দেয়ার মত পৌষ্টিকতন্ত্রের রসায়ন -

ঝিনুক দন্ডে অসহায় তার অনিবার্য তাকে নিয়ম করে তোলে,

জখম থেকে নেওয়া ঘুমের ওষুধ

আমি হাতড়ে বেড়াই কালপুরুষের দল,

দলা পাকানোর মাংস রক্তের পিন্ডের মাঝে আশা ভরে রাগের সুর নিয়ে ভাবতে বসব

এটা বড় দুর্ঘটনা নয় কি?

হৃদয় খোঁড়ার জ্বরে জৈবতন্ত্র অর্থহীন

অগত্যা শীতলপাটির উপশমে  

বেপরোয়া স্বপ্নের ঘুড়ি উড়তে থাকে।

 

 

কানাকানি

 

কখনোই আর ফিরবে না এ কথাটা মনে হতেই বুকের ভেতর কিরকম খাঁ খাঁ,

অবিকৃত প্রেমে অধিকৃত বখাটে আবেগ

আমি নিশ্চয় ক্ষণে অনেক কানাকানি শুনি,

বিশুদ্ধ অস্থিমজ্জার উপর একটা হালকা উড়নি উড়িয়ে দিতে দিতে আয়নায় মুখ ঢাকি,

অনধিকার আলিঙ্গনে স্পন্দনের আভাস

সন্ধ্যাকালে জ্বলন্ত পরাগ,

অস্পষ্ট হলে চাঁদ, ব্যথাকে আরও বেশি করে ভালবাসতে ইচ্ছা করে,

বিমূঢ় প্রেমিকের নীরবতার ভাষা থাকে শুধু

বিশেষণ খুঁজতে খুঁজতে গভীর খাত থেকে উঠে আসি পরস্পরের দুনিয়াদারিতে,

চিৎকার করে কেউ বলতে থাকে-

নগ্ন ঢেউয়ের সাথে খেলা করো কিন্তু সমুদ্রে নেমো না।

 

 


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন