কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

বুধবার, ১৪ জুলাই, ২০২১

নাটালি সেন্টার্স-জাপিকো

 

প্রতিবেশী সাহিত্য

 

মেহিকো-মার্কিন উত্তরঔপনিবেশিক কবি নাটালি সেন্টার্স-জাপিকো-র কবিতা

 

(অনুবাদ : মলয় রায়চৌধুরী)




 

যুবকটার হাঁ-মুখের বাতিক আছে

 

ও নিজেকে সামলাতে পারে না, মরা

ফুলগুলোকে, ছেঁটেফেলা নখ, বাসি

আটার বস্তা নিজের মুখে ঢোকায়। ও থামতে পারে না

নিজের মুখের বিষয়ে লেখালিখি করে। যেমনভাবে

ও ঘুম থেকে উঠলো মুখভরা মৌমাছি নিয়ে,

তাদের মরা হুলগুলো তখনও ফোটাচ্ছে

ওর মাড়িকে। ও লিখেছে : কিছু তো আছে

মুখ ভেঙে ফেলার সুন্দর উপায় হিসেবে

লালা আর শীতল বাতাসে। যুবতী যুবকের

মুখ চাড় দিয়ে খুলে ফেললো আর তাতে

ভরে দিলো সিসারঙা মাটি। মেয়েটি ওকে

মুখ দিয়ে ব্রেনডেড করে ফেলতে পারল;

যুবতী  মধু চেটে বের করে আনল

যুবকের শ্বদাঁত থেকে, গাছের প্রাণরসের মতন।

যুবকের হাঁ-মুখ, তাতে টানা দাগ

গাল পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে -- যুবতী কখনও দ্যাখেনি

বেঁকা দাঁত আর তার রঙচঙে নীল আর সবুজ।

লেখা থামাও কেমন করে যুবতী কামড়ে ধরল

তোমার মুখ আর টর্চ জ্বেলে ঝালাই করল

মুখের খোলা-বন্ধ। লেখালিখি থামাও

মুখ সম্পর্কে : জিভ, পবিত্র কশের দাঁত, নিজেকে

চিবিয়ে হাড় করার ক্ষয়। মুখ নিয়ে লেখা থামাও

যুবকের মুখ, তোমার মুখ, যুবতীর মুখ।

 

একটি দেহ

 

ইদ

দুটো ইদ হাঁটতে হাঁটতে একটা দেহে ঢুকে পড়ে আর লড়তে থাকে রান্নাঘরের টেবিলে তরমুজ কাটা হবে আর মুঠোয় করে খাওয়া হবে নাকি তরমুজটাকে বন্ধ জানালা দিয়ে ফেলে দেয়া হবে আর দেখা হবে ফুটপাতে পড়ে কেমন করে ফাটল, কাঁচের টুকরোয় খুন হয়ে।

 

ইগো

দুঃখিত, ম্যাকডোনাল্ডের গাড়ি যাবার গলিতে স্পিকারে চেঁচাবার জন্য। দুঃখিত, দরোজা দিয়ে তোমাকে প্রথমে ঢুকতে না দেবার জন্য। দুঃখিত, কলতলায় পনেরো মিনিটে এক ডজন ডোনাট খেয়ে ফেলার জন্য। দুঃখিত, আমার গলার আওয়াজ কর্কশ, মনে হয় বোকা, মনে হয় মাথা ঝিমঝিমে, মনে হয়ে হাঁক পাড়ছি। দুঃখিত, মম। আমি বলতে চাই, মামা। আমি বলতে চাই, মিস। আমি বলতে চাই, কিছু মনে করবেন না।

 

সুপারইগো

প্রিয় শরীর : ধারালো ছুরি যেটা খুঁজে পাবে তাই দিয়ে তরমুজটা ফালি করে কেটে ফ্যালো আর তরমুজটাকে যে যন্ত্রণা দিচ্ছ তার আনন্দ উপভোগ করো। বলা বন্ধ করো যে তুমি দুঃখিত, বরং অপরাধবোধে ভোগো কর্কশ হবার জন্য,  বোকা হবার জন্য, মাথা ঝিমঝিমের জন্য, হাঁক পাড়ার জন্য। অপরাধবোধে ভোগো কেননা তোমার মম তোমার মাম্মা তোমার মিসই সেই মানুষ যে আসলে অপরাধী তোমাকে এই শরীর দেবার জন্য যাতে রয়েছে দুটো ইদ, আর একটা ইগো আর একটা সুপারইগো যে তোমার সম্পূর্ণতায় ফিসফিস করে।

 

ভালো কঙ্কাল

 

জীবন অনেক ছোটো, আর আমি তা দেশের মেয়েদের বলি।

জীবন অনেক ছোটো, আর আমি ওদের দেখাই কেমন করে কথা বলতে হয়       

দরোজা না খুলে পুলিশের সঙ্গে, কেমন করে 

সোশাল সিকিউরিটি নম্বর ফাঁকা রাখতে হবে

পরীক্ষার খাতায়, আমি এসব দেশের মেয়েদের শেখাই।    

এই জগত রোজ ওদের বলে আমি তোমাদের ঘৃণা করি    

আর আমি তা দেশের মেয়েদের কাছে লুকোই না

কেননা বাসের চালক ওদের লাথিয়ে বের করে দ্যায়

রাস্তায় টিকিট ফাঁকি দেবার জন্য। কেননা আমি ভালোবাসি 

দেশের মেয়েদের, আমি ওদের পুরুষদের থেকে আগলে রাখি

যারা ওদের পরস্পরের মাথা ঠুকে ঘণ্টাধ্বনি শুনতে চায়।   

জীবন  অনেক ছোটো আর জগতটা ভয়ঙ্কর। আমি জানি    

কোনো দয়ালু আগন্তুক এই দেশে নেই যারা এক মরুভূমি

দূরত্বের বোন, আর আমি এগুলো দেশের মেয়েদের কাছে

লুকোই না। জগতকে ওদের কাছে বিক্রি করা আমার

কাজ নয়, কিন্তু ওদের আগলে রাখা যাতে নিজের দেশে

ফেরত পাঠিয়ে দেয়া না হয়। আমাদের প্রথম

বাড়িমালিক একবালতি কাচবার কাপড় এনে বলল

তোর গায়ের রঙ পরিষ্কার হয়ে যাবে তাড়াতাড়ি।

ও দেশের মেয়েকে ঝাঁকুনি দিয়ে বলল, তোদের হাড়

খাটুনির জন্য বেশ শক্তপোক্ত। দেশের মেয়ে, আমরা কি

এই জায়গাটা সুন্দর করে তুলতে পারি?

আমি এই জায়গাটা সুন্দর করে তোলার চেষ্টা করেছি।

 

কাগজের টুকরো

 

কাগজের টুকরোয় নদী পার হবার সময়ে,

আমি আমার নাম ভুলে গেলুম। আমার শরীর,

একবার ফিরিয়ে দাও। আমি একজন মুরুব্বি

সন্ত চাই যে খেঁকুরে কুকুরটাকে তাড়িয়ে দেবে

রাতের বেলায় গাছের বেড়ার ধারে মনে হল।

আমি চাই জগতটা ভাষাহীন হোক,

কিন্তু বলা যায় না তাই চিন্তাধারা লিখে রাখবো।

সাহায্য পাঠাও, কুকুরটার গোঙানি

আমাকে ঘুমোতে দেবে না। কতোদিন ঘুমোইনি।

আমি এক মুরুব্বি সন্তের খোঁজ করছি, কিন্তু কেউই

আমাকে প্রার্থনা করার পথনির্দেশ দেবে না। আমার ডান কানে

গুঞ্জন আটকে আছে যা যেতে চায় না, যতোই আমি

মাথার ডানদিক থাবড়াই না কেন

খুচরো পয়সার জন্যে। বেশিরভাগ সকালে অবাক হই

আমি কার কাছে প্রার্থনা করব যে নিশ্চিত করবে যে

আমাকে জাগ্রত অবস্হায় বেঁচে থাকতে হবে না।

বেশির ভাগ রাতে আমি জপের মালা নিয়ে প্রার্থনা করতে

ভুলে যাই, যদিও ওটা বিছানার পাশে রেখে ঘুমোতে যাই।

আমি কখনও টিভি কিনিনি কেননা আমি আমার মগজে

এই কথাবার্তা বারবার চালিয়ে যাবো। রান্নাঘরে

আমার মরা প্রেমিকরা ক্ষুধার্ত রয়েছে, তাই আমি এমন

খাবার ওদের দিই যা ওরা খেতে পারবে না। আমি

বাছুরের চামড়ার কাগজে রুটি বানাই, ব্যাণ্ডেজের

কাপড়ের ডিম ভাজি। আমি শুধু একজন মুরুব্বি

সন্ত চাই আমাকে যে রক্ষা করবে। আমি চাই

অন্য কারোর রক্তক্ষরণ হোক।

 

 

 

 

 

 


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন