কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

রবিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১৯

ড. ভরতপ্রসাদ ত্রিপাঠী




প্রতিবেশী সাহিত্য



ভরতপ্রসাদ-এর কবিতা      

(অনুবাদ : মিতা দাশ) 


 


















কবি পরিচিতি : একাধারে কবি, গল্পকার, ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক ড. ভরতপ্রসাদ ত্রিপাঠী হিন্দী
সাহিত্যে অধ্যাপনায় নিযুক্ত আছেন মেঘালয় রাজ্যের শিলং-এ নর্থ ইস্টার্ন হিল
ইউনিভার্সিটিতে। এর আগে তিনি হিন্দী ভাষা ও সাহিত্যে এম এ, এম ফিল ও পি এইচ ডি
ডিগ্রী অর্জন করেছিলেন দিল্লীর জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ইতিমধ্যে তাঁর
১২টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে।



সাধ

         
আমার সাধ
যৌবনেও
ডুকরে কাঁদতে শিখি

আমার সাধ
নতুন রাগ তৈরী করে
সৃষ্টিকে সেই রাগে নতুন করে গাইতে শিখি

আমার সাধ
ভয়, বদনাম, অপমান ভেবেও
যা কখনই বলতে পারিনি
বলতে শিখি

আমার সাধ হয়
আবার ইচ্ছে করেই
যাদের পিছনে ফেলে এসেছি,
ওদের পা দুটি জড়িয়ে
মনে হয় প্রাণ ভরে কাঁদি
      

তোমার পা
                         
না, না, তুমি আমার পৃথিবীতে এই ভাবে পা রেখো না
যে ভাবে আজ অব্দি রেখে এসেছো শেষ–মেষ,
তোমার সঙ্গে আর কোনই সম্পর্ক কি রয়ে গেছে?
তুমি অনেক তিরস্কৃত করে এসেছো
অনেক দুঃখ দিয়ে এসেছো
অনেক টুকরো করেছ কেটে–ছিঁড়ে
অপমানিত ও করেছ এতো যে
মনে হয় বলেই ফেলি
এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাও তুমি
দূর ... বহুদূর
আবার নতুন করে, নতুন ভাবে
বুঝে এগিয়ে দ্বিতীয় সৃষ্টির রচনা করো
যার মানুষেরা এই মানুষের মত যেন না হোক
একটু হলেও
এর চেয়ে ঢের–ঢের ভালো মানুষ নিশ্চয় হোক!

এরপর
যদি এক পাও ফেলো
তো এইভাবে রাখবে যেন
হৃদয় গচ্ছিত করতে যাচ্ছে
এরপর
এইভাবে পা ফেলবে বা হাঁটবে
পৃথিবীর এক–একটা ব্যথা
তোমার বুকে যেন গাঁথা থাকে।
       

বামিয়ানের বুদ্ধ
                         
এত বড় পৃথিবীতে
অতি উগ্রবাদের মায়ায়
সেই হিংস ছোট্ট দেশে আজ
তোপ দিয়ে করছে জঘন্য প্রহার
ভাঙচুর করছে বুদ্ধের সব মূর্তি,
ভেঙ্গে ফেলল শান্তির চিন্হ
নিশ্চয় সে বুদ্ধিহীন!

সে কিন্তু বুদ্ধ নয়, সে ধর্মও নয়
নয় সে পথ, নয় সে কোনো মূর্তি
যে মূর্তি ভাংচুর করো, মেরে বা জিতে  
শেষ করেও মুছে দাও পৃথিবী থেকে!

সে নায়ক মানবতার
সে দেশকালের সীমানার
বাইরে এসে ঘর বেঁধেছে
সবার মনে,
অনেক অনেক শতাব্দী ধরে!

সে মূর্তি নয়, সে ধর্ম ও নয়!
সে অমর হয়ে থাকবে, রাজত্ব করবে হৃদয়ে
যদিন মানুষের ভেতর
থাকবে এই হৃদয়!

নিজে ভাবো, কোথায় দাঁড়িয়ে আছো?
নতুন শতাব্দী বা মধ্যকালে,
বিশ্ব ছড়াচ্ছে আগে আরো আগে, এগিয়ে চলেছে,
তোমরা পিছিয়ে যাচ্ছ,
ধর্মের বন্ধ্যা পৃথিবীতে,
কট্টরপন্থীর অন্ধকারে,
জেনে বুঝে ঠোক্কর খেয়েও!

         
এটাই সত্য

(১)

বড় হবার আগে
বড় বড় কল্পনা কররার সময় ভাবতাম
জীবনটা বড়ই ছোট

বড় হবার পর
ছোট ছোট ইচ্ছাগুলিকে হারতে দেখে ভাবি
জীবনটা কত লম্বা
   
(২)

মানুষ একটা এমন বিষয়
যার উপর কত লেখা হোক না কেন
পুরোটা লেখা যায় না!

একটা দরকার
যার উপর পুরোটা
না তো বিশ্বাস করা যায় –
না সন্দেহ!
এটি একটা এমন মাপ
যার উপর সভ্যতার প্রগতি
মাপতে পারা যায়

সৃষ্টির গহন ছন্দ
যার অন্তিম ব্যাখ্যা
কখনো সম্ভব নয়!


0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন