কালিমাটি অনলাইন

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

দশম বর্ষ / একাদশ সংখ্যা / ১১০

দ্বাদশ বর্ষ / পঞ্চম সংখ্যা / ১২৫

রবিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১৯

নভেরা হোসেন




নিস্তব্ধতা 


“আমারে কবর দিও হাটু ভাঙার বাঁকে”
শান্ত নদী বহে যায়
ধূসর পাহাড়ের দেশে
ছিপে টোনামাছ গেঁথে অপেক্ষায় নিস্তরঙ্গ জীবন
একটা গুলির শব্দে সবকিছু বদলে গেলো
শত শত সৈনিক প্যারেড করে যাচ্ছে
গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিলো
উত্তরের এই মহাদেশে
ভয়ানক যুদ্ধ হলো
সবাইকে ছুঁড়ে ছুঁড়ে ফেলা হলো
হাঁটু ভাঙার বাঁকে
সভ্যতার মাটির নিচে চাপা পড়ে আছে লক্ষ লক্ষ প্রাণ
তাদের নিঃশ্বাসের শব্দে ভারী হয়ে উঠছে বাতাস
আজ আর কেউ মনে রাখেনি তাদের কথা
নদীর উপর দিয়ে উঁচু ওভারব্রিজ
নিচে তাকালে শান্তনদী
যেন এক পৃথিবী মানুষ ঘুমিয়ে আছে


পিটগ্রিল   

বহুদিন ধরে অপেক্ষা করছো
মধু যামিনীরে কেন কথা কহিল না
যার জন্য অপেক্ষা করো সে জানতে পারে না
সে দূর সমুদ্রে
আলবাট্রস আর মৃত সাদা মানুষদের সাথে সন্তরণরত
পিটগ্রিলের চৌকো ঘরে ভিন্ন রঙের মানুষ-
মাশরুম উইথ হটসস, লেমন সোডা
এসব অর্ডার করে তুমি অপেক্ষা করো
কোথাও একঝাঁক জঙ্গিবিমান
লোকজন দৌড়ে পালাচ্ছে
সাইরেনের বিকট শব্দে ধ্যানভঙ্গ হয়
তখনও হাতে কাঁটাচামচ
টেবিলে ব্ল্যাক ন্যাপকিন
কাপুচিনো কফি ঠান্ডা হয়ে যায়-
তুমি অধীর হয়ে অপেক্ষা করো
কেউ কোথাও নেই
কারো আসবার কথা ছিল না
তুমি শুধু অপেক্ষা করো
অপেক্ষা করবে বলে


দেখা   

বহুদিন প্রেমিকের দেখা নেই
কয়েক সপ্তাহ, মাস
একটু একটু করে অস্থির হয়ে উঠছো
চোখ–মুখ বদলে যাচ্ছে
চামড়ার রং বদলে যাচ্ছে
সবুজাভ একটা ছোপ ছোপ
দেখা হওয়ার আগ পর্যন্ত এরকম চলতে থাকবে
অস্থির একপ্রাণ ছটফট করছো
তাপমাত্রা হান্ড্রেড ছুঁই ছুঁই
বরফ মেশানো পানি খেয়ে তেষ্টা আরো বেড়ে গেলো
ঘর দিয়ে হাঁটাহাঁটি
রাস্তা দিয়ে হাঁটাহাঁটি
এ গলি ছেড়ে সে গলি
এ রাস্তা ছেড়ে সে রাস্তা
চক্রাকারে
দেখা হওয়ার পর গলতে শুরু করলে
গ্লেসিয়ার ভেঙে চুরমার
কাণা উপচে পড়ছে গ্লাস



0 কমেন্টস্:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন